বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী: ফিরে দেখা ইতিহাস
প্রকাশিত: ২১-৬-২০২৪ বিকাল ৫:৭
সংগ্রাম এবং ভবিষ্যৎ
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেনে জন্ম নেওয়া একটি রাজনৈতিক দল, যা আজ বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত—বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এই দলের হাত ধরেই আমরা পেয়েছি আমাদের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দলটি আজও বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
প্রতিষ্ঠা এবং প্রাথমিক বছর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল বাংলার সাধারণ মানুষের অধিকারের প্রশ্নে। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরপরই মুসলিম লীগ সরকারের অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং শামসুল হকসহ অনেক নেতৃবৃন্দ। তাঁদের নেতৃত্বে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৫ সালে "মুসলিম" শব্দটি বাদ দিয়ে দলটির নাম রাখা হয় 'আওয়ামী লীগ'। ভাষা আন্দোলন এবং বঙ্গবন্ধুর উত্থান
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন আওয়ামী লীগের জন্য একটি বড় মাইলফলক। এই আন্দোলনে শেখ মুজিবুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য এই আন্দোলন ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের প্রথম বৃহৎ সাফল্য। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয় আওয়ামী লীগের শক্তি ও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করে। স্বাধীনতা সংগ্রাম ১৯৬৬ সালের
৬ দফা দাবি ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত বাংলাদেশের স্বাধীনতার সোপান। এই দাবি ছিল পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার দাবি, যা বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে, কিন্তু পাকিস্তান সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায়।
মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এরপর শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ, যা নয় মাস ধরে চলে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে স্থান পায়। এই স্বাধীনতা সংগ্রামে আওয়ামী লীগের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকার এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব দিয়ে দলটি স্বাধীনতা অর্জনের পথ সুগম করে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি দেশের পুনর্গঠন এবং পুনর্বাসনে মনোনিবেশ করেন। তবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবার নিহত হন। এই হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশে সামরিক শাসনের উত্থান ঘটে এবং আওয়ামী লীগকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা
১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর নেতৃত্বে দলটি ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করে এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যোগ দেয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসে এবং শেখ হাসিনা দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর শাসনামলে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড এবং অর্থনৈতিক সংস্কার শুরু হয়। বর্তমান প্রেক্ষাপট ২০২৪ সালে
আওয়ামী লীগ তার ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে দলটি এখনও কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং শিক্ষার প্রসারে আওয়ামী লীগের অবদান অসামান্য।
বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ চট্টগ্রাম মহানগর আহ্বায়ক কমিটির উদ্যোগে ২২ শে জুন, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব বঙ্গবন্ধু হলে বিকাল সাড়ে ৪টায়,
এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সফল মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন। স্মরণীয় অর্জন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
আওয়ামী লীগের ইতিহাসের পাতায় রয়েছে অনেক স্মরণীয় অর্জন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং বর্তমান উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে দলটি বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। ভবিষ্যতে আরও উন্নয়ন, সমৃদ্ধি এবং দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে আওয়ামী লীগ কাজ করে যাবে। উপসংহার
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি ইতিহাস, একটি সংগ্রাম, একটি অর্জন। ১৯৪৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত দলের এই দীর্ঘ যাত্রায় রয়েছে বহু সাফল্য, ত্যাগ এবং সংগ্রামের গল্প।আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লগ্নে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার কথা বলার পৱয়োজন রয়েছে। আমরা ইতিহাসের পাতা থেকে যা জেনেছি তা একটুখানি উল্লেখ করছি -- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব আওয়ামী লীগের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেছে। তাঁর অবদানকে নিচে বিভিন্ন দিক থেকে বিশ্লেষণ করা হলো:
প্রতিষ্ঠা এবং নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক পর্ব: শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক উদ্যোক্তাদের একজন ছিলেন।
নেতৃত্ব: ১৯৫৩ সালে তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং পরবর্তীতে সভাপতি হন, যা তাঁকে দলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রধান নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। ছয় দফা দাবি
১৯৬৬ সালের ছয় দফা: শেখ মুজিবের ছয় দফা দাবি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের জন্য একটি স্বায়ত্তশাসনের মূল দলিল হয়ে ওঠে। এটি বাঙালির অধিকার আদায়ের আন্দোলনে একটি বড় ভূমিকা পালন করে।
স্বাধীনতা সংগ্রাম ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রাম: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বেই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। তাঁর ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালির স্বাধীনতার ঘোষণা ছিল। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ: তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন, যা মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
স্বাধীনতা-পরবর্তী নেতৃত্ব প্রথম সরকার গঠন: স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন। তাঁর নেতৃত্বে সংবিধান রচিত হয় এবং দেশ পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়। সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার
সংবিধান প্রণয়ন: বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণীত হয়, যা দেশকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
অর্থনৈতিক
পরিকল্পনা: বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে প্রথম পাঁচ বছরব্যাপী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় যা দেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রতিকূলতা এবং আত্মত্যাগ
হত্যাকাণ্ড: ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাঁকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। তাঁর মৃত্যু দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে গভীর ছাপ ফেলে।
ঐতিহাসিক প্রতিচ্ছবি জাতির পিতা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের জাতির পিতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাঁর নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগ দেশের প্রতিটি স্তরে গভীর প্রভাব ফেলে।
শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব আওয়ামী লীগকে শুধু একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে নয়, বরং বাঙালি জাতির স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব অর্জনের মূল হাতিয়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাঁর অবদান বাংলাদেশ এবং আওয়ামী লীগের ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠী বিরোধিতা করে এবং তাঁর নেতৃত্বে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। নিচে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো: বিরোধী ব্যক্তি ও গোষ্ঠী
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার ও সামরিক শাসকগণ: আয়ুব খান: পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আয়ুব খান বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা দাবি এবং বাঙালির অধিকার আদায়ের আন্দোলনের ঘোর বিরোধী ছিলেন।
ইয়াহিয়া খান: পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ও পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন।
পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলো:
মুসলিম লীগ: পাকিস্তান মুসলিম লীগের নেতারা এবং সমর্থকরা বাঙালির অধিকারের পক্ষে আওয়ামী লীগের আন্দোলনকে সমর্থন করেনি এবং বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করেছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিরোধী গোষ্ঠী: রয়্যালিস্ট ও প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী: স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে কিছু প্রতিক্রিয়াশীল ও রাজনীতিক গোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল।
ষড়যন্ত্র ও কর্মকাণ্ড
আগ্নেয়াস্ত্র ও গ্রেফতার:
১৯৬৮ সালের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা: পাকিস্তানের সরকার বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ভারতের সাথে যোগসাজশে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে মামলা করে এবং তাঁকে গ্রেফতার করে। এটি 'আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা' নামে পরিচিত।
বারবার গ্রেফতার: ১৯৪৯ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বঙ্গবন্ধুকে একাধিকবার গ্রেফতার করা হয়, যা তাঁর রাজনৈতিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেছিল।
প্রচার ও কুৎসা:
মিথ্যা প্রচারণা: বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বকে দুর্বল করতে এবং তাঁর বিরুদ্ধে জনমত গঠনের জন্য পাকিস্তানি সরকার মিথ্যা প্রচারণা চালায়। তাঁকে এবং আওয়ামী লীগকে ভারতপন্থী এবং দেশদ্রোহী হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করা হয়।
সামরিক হামলা ও নির্যাতন: অপারেশন সার্চলাইট: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী 'অপারেশন সার্চলাইট' চালায়, যার লক্ষ্য ছিল বঙ্গবন্ধুসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের আটক এবং স্বাধীনতার পক্ষে জনমত দমন করা।
সন্ত্রাস ও হত্যা প্রচেষ্টা:১৯৭৫ সালের ষড়যন্ত্র**: বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরিকল্পনা এবং সপরিবারে হত্যাকাণ্ড ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘটে, যা ছিল তাঁর নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় ষড়যন্ত্র।
সংঘাতের ফলাফল জাতীয় ঐক্য: বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও তিনি বাঙালি জাতির জন্য একটি প্রতীক হয়ে ওঠেন এবং তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করে। পরবর্তী নেতৃত্ব: বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর আওয়ামী লীগ বিরোধিতা এবং চাপের মধ্যে থেকেও সংগঠনকে ধরে রাখে এবং পরবর্তীতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবার ক্ষমতায় আসে।
এই ঘটনাগুলো থেকে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে এবং বিভিন্ন দিক থেকে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে, কিন্তু তাঁর অবিচল নেতৃত্ব এবং জনগণের সমর্থন তাঁকে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস দীর্ঘ এবং ঘটনাবহুল। এখানে ১৯৪৯ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী এবং তথ্যের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো:
১৯৪৯ -১৯৭০--১৯৪৯: ২৩ জুন, আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকার রোজ গার্ডেনে। সভাপতি হন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক হন শামসুল হক। ১৯৫৫: দলটির নাম পরিবর্তন করে 'আওয়ামী লীগ' করা হয়।১৯৫৬: আওয়ামী লীগ সরকারে অংশগ্রহণ করে এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রধানমন্ত্রী হন।
১৯৬৬: শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন ১৯৬৯: গণআন্দোলনের মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমানকে 'বঙ্গবন্ধু' উপাধি দেওয়া হয়।
১৯৭০: পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে।১৯৭১ - ১৯৮০
১৯৭১: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় লাভ।১৯৭২: বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠন হয়।
১৯৭৫: ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। ১৯৭৫-১৯৮০: রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও সামরিক শাসন।
১৯৮১ - ২০০০-
১৯৮১: শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৯৬: আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হন।
২০০১: আওয়ামী লীগ নির্বাচনে পরাজিত হয় এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার গঠন করে। ২০০৭: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়। ২০০8: আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিশাল বিজয় অর্জন করে। শেখ হাসিনা আবার প্রধানমন্ত্রী হন।: আওয়ামী লীগ নির্বাচনে পুনরায় বিজয়ী হয়।
: তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে।
: আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশ পরিচালনা অব্যাহত থাকে। গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বমাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী: প্রথম সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান: প্রতিষ্ঠাতা নেতা ও বঙ্গবন্ধু
শেখ হাসিনা: বর্তমান সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রিত্ব
-হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী: ১৯৫৬-১৯৫৭
তাজউদ্দীন আহমদ: ১৯৭১মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী সরকার
শেখ মুজিবুর রহমান:
-শেখ হাসিনা: ১৯৯৬-২০০১, ২০০৯-বর্তমান এই সংক্ষিপ্ত বিবরণটি আওয়ামী লীগের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং নেতৃত্বের ওপর আলোকপাত করেছে। বিশদ বিবরণের জন্য নির্দিষ্ট বিষয়ে আরো গভীরে যেতে হবে।
বঙ্গবন্ধুর সোনারে বাংলা গড়ার স্বপ্নকে সামনে রেখে দলটি আজও কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আশাবাদী, আওয়ামী লীগ আগামী দিনগুলোতেও দেশের উন্নয়ন এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাবে।
লেখকঃ সাংবদিক গবেষক টেলিভিশন উপস্থাপক ও মহাসচিব চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম।