পাহাড়ে সাবারাং পাতা বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছেন অনেকে

news paper

নুরুল আলম

প্রকাশিত: ১৭-১০-২০২৩ বিকাল ৫:৫৬

220Views

চাকমাদের কাছে ‘সাবারাং’, ত্রিপুরারা বলেন ‘ভানা’, মারমাদের কাছে ‘হ্নুংসি, বাংলায় ধনে/ধনিয়া পাতা আর ইংরেজি নাম ‘লেমন বেসিল’। যে নামেই ডাকা হোক না কেন, ভেষজ গুণে ভরা এই পাতার কদর পাহাড়জুড়ে সকল সম্প্রদায়ের লোকের কাছে অতি জনপ্রিয়। অনেকটা তেজপাতা কিংবা ধনেপাতার মতো মসলাজাতীয় এই পাতা সবজি থেকে মাছ-মাংস, সব ধরনের রান্নাতেই ব্যবহার করা হয়। একসময় শুধু নিজেদের খাওয়ার জন্য বাড়ির আঙিনায় সাবারাং রোপণ করতেন পাহাড়িরা। তবে বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবেও এর চাষ হচ্ছে। পাতা বিক্রি করে লাভের মুখও দেখছেন অনেকে।

খাগড়াছড়ির নৃত্য শিল্পী ও প্রশিক্ষক রিয়া চাকমা বলেন, সাবারাং পাতা আমরা মাছ, মাংস, শাক-সবজীসহ যাবতীয় সকল তরকারিতে দিয়ে রান্না করি। সাবারাং এ ফ্লেভার, তেজে, ঘ্রাণে আর গুণে অসাধারণ। এই পাতা দিয়ে রান্না করলে সুস্বাদের ভরপুর হয়ে যায়। সে জন্য সবকিছুর রান্নায় আমরা সাবারাং পাতা দিয়ে থাকি।

আরেক নৃত্য শিল্পী সাচিং মং মারমা বলেন, সাবারাং পাতা মূলত চাকমারা বলে থাকে। আমরা মারমারা এটাকে হ্রুংসি বলে থাকি। হ্রুংসি হচ্ছে পাহাড়ের সুগন্ধি সবজি। হ্রুংসি মূলত ধনিয়াপাতার বিকল্প হিসেবে পাহাড়িরা বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহার করে থাকি। এই পাতা মাছ, মাংসসহ সকল তরকারিকে ফ্লেভারেড করার জন্য ভূমিকা রাখে।

খাগড়াছড়ি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক আঁটি সাবারাং পাতার দাম ১০ থেকে ২০ টাকা। বাজারে সাবারাং বিক্রি করছিলেন গাছবান এলাকার গৌরাঙ্গ মোহন ত্রিপুরা। তাঁর ঘরের আশপাশে পাহাড়ের ওপর লাগানো গাছ থেকে এই সাবারাং এনেছেন তিনি। এ বছর তিনি প্রায় এক হাজার টাকার সাবারাং পাতা বিক্রি করেছেন। সামনে আরও বিক্রি করবেন বলে জানান।

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুক্তা চাকমা বলেন, পাহাড়িরা মসলা হিসেবে সাবারাং ব্যবহার করে থাকেন। একসময় বাজারে সাবারাং পাতার চাহিদা না থাকলেও বর্তমানে এর চাহিদা বেড়েছে। সাবারাং চাষ করতে তেমন খরচ কিংবা কষ্ট করতে হয় না। মাটি একটু নরম করে বীজ ছিটিয়ে দিলেই চারা উঠে যায়। তবে শীতকালে চারা গাছে পানি দিতে হয়। যে-কেউ চাইলে বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ করতে পারেন।


আরও পড়ুন