পবিপ্রবিতে ছাত্রলীগ সভাপতি ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ

news paper

মারসিফুল আলম রিমন, পবিপ্রবি

প্রকাশিত: ২৭-৯-২০২৩ বিকাল ৬:১২

2Views

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর ও তার অনুসারী কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে চলমান নির্মাণ কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, নির্মাণকাজে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মারধর এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে স্থানীয় থানায় এবং উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার মধ্যরাতে (রাত ১.০০ টা) দুমকি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। জানা যায়, মঙ্গলবার রাত আনুমানিক নয়টায় পবিপ্রবি ক্যাম্পাসে নির্মাণাধীন শেখ রাসেল হলের সামনে নির্মানকাজে নিযুক্ত ব্যক্তিবর্গকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মী কতৃক হেনস্তার ঘটনা ঘটে। ঘটনায় ভুক্তভোগী হিসেবে আছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস আমির ইন্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন এর প্রজেক্ট ম্যানেজার এনামুল হকসহ তার অন্যান্য সহযোগীরা। অপরদিকে অভিযুক্তরা হলেন পবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর ও তার অনুসারী সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী  সুহৃদ, ১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ ইমরান এবং বহিরাগত বসির খান সহ অজ্ঞাতনামা আরো পাঁচ-ছয়জন। 

বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন দুমকি থানা এবং উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার আনুমানিক রাত ৯:০০ টায় আরাফাত ইসলাম খান সাগরের নেতৃত্বে গোলাম রব্বানী সুহৃদ সহ অজ্ঞাতনামা ৯/১০ জন ব্যক্তি নির্মাণ কাজের জন্য আনা রড একটি ভ্যান গাড়ীতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় এনামুল হক বাঁধা দেন। এতে ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রব্বানী সুহৃদ জানায়, এটি তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস, এখানে কন্সট্রাকশনের কাজ করতে হলে টাকা দিতে হবে, সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর রড নিয়ে যেতে বলেছে এবং টাকা না দিলে রড নিয়ে যাবে এমনটাই দাবি করেন তিনি। 

লিখিত অভিযোগে এনামুল হক আরও উল্লেখ করেন, 

ঘটনার এক পর্যায়ে গোলাম রব্বানী সুহৃদ তাকে রড দিয়ে মেরে আহত করেন এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়ে যান একইসাথে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময় আরাফাত ইসলাম খান সাগর শেখ হাসিনা হল ও শেখ রাসেল হলে নির্মাণকাজ চলা অবস্থায় চাঁদা দাবি করেন এবং হুমকি-ধামকি দিয়েছেন যার প্রমাণস্বরূপ বিভিন্ন অডিও এবং ভিডিও রেকর্ড তার কাছে সংরক্ষিত আছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাগরের অনুসারী অভিযুক্ত গোলাম রাব্বানী সুহৃদ বলেন, "এই অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাড়ির অবৈধ নেইম প্লেট, বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানো, মেয়েদেরকে উত্যক্ত সহ নানা অনিয়মের বিষয়ে কথা বলতে গেলে ম্যানেজার এনামুল আমাদের মারতে উদ্ধত হন। আত্নরক্ষার জন্য আমি অন্যান্যদের ফোন দিলে তারা পালিয়ে যান।"

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর বলেন, "আমি যেখানে ক্যাম্পাসে নেই এমন অবস্থাতে একটি ঘটনাতে কিভাবে আমাকে দোষারোপ করতে পারে? নির্বাচনের আগে এ ধরনের অভিযোগ  ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করে জামায়াত-বিএনপির নীল-নকশা বাস্তবায়নের শামীল। "

দুমকী থানার অফিসার ইনচার্জ তারেক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বলেন, "আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। "

পবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড.স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত লিখিত অভিযোগ পাবার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটিতে এবিষয় উত্থাপন করা হবে । ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হবে বলে জানান তিনি।


আরও পড়ুন