বাঁশখালীতে আবারও খুন আইন শৃঙ্খলা অবনতি চরমে

news paper

নিজস্ব সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১৭-৯-২০২৩ দুপুর ১:৬

18Views

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে জায়গা জমি বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলার ঘটনায় ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে একই ভাবে হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হওয়ার পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুলা মিয়া (৬০) নামে একলোকের মৃত্যু হয়েছে।১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার দিবাগত সাড়ে ৯ টায় তাঁর নামাজে জানাজা শেষে নিজ এলাকায় নিহত দুলা মিয়ার লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।দুলা মিয়ার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় পুরো এলাকায় থমথমে বিরাজ করছে,একের পর এক খুনের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার ফলে জনমনে  চরম আতংক বিরাজ করছে,বাঁশখালীতে আইন শৃঙ্খলা অবনতিও দিনদিন চরমে।

 ঘটনাটি উপজেলার বাহারচড়া ইউপির ৮ নং ওয়ার্ডের নজর চৌধুরী বাড়ী (প্রঃ মওদ্দার বর বাড়ী) এলাকায় ঘটেছে। দুলা মিয়ার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে পুরো এলাকাজুড়ে থমথমে বিরাজ করছে।নিহত দুলা মিয়া (৬০) ওই এলাকার মৃত্যু আবুল খাইয়ের এর ছেলে।

দুলা মিয়ার সাংসারিক জীবনে ছেলে কামরুল হাসান(জিএম),নাজমুল হাসান(জিসান),সাঈদ হাসান (মারুফ) এবং মেয়ে ফাতেমাতুজ জোহরা ও খাদিজাতুল কুবরাসহ ৫ সন্তানের জনক।বড় ২ ছেলে প্রবাসে থাকেন এবং ছোট ছেলে ৮ম শ্রেণীতে পড়া লেখা করছে বলেও জানা যায়। মেয়ে খাদিজাতুল কুবরা বলেন,গত ৮ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) দুপুর আনুমানিক আড়াইটার দিকে একই এলাকার মৃত্যু নজির আহমদের পুত্র বাবুল, নুরুল আমিন,আব্দুল করিমের পুত্র মোঃ জোবায়ের,মৃত্যু সিরাজুল ইসলামের পুত্র আব্দুল মজিদ,আজম উদ্দিন,নেজাম উদ্দীন,নুরুন্নবী এবং মৃত্যু মাহবুব আলীর পুত্র মোঃ হেলাল উদ্দিন, মোঃ কায়ছার,আব্দুল করিম ও মৃত্যু আব্দুল মান্নানের পুত্র মোঃ জিহানসহ আরো ৮/১০ জন সশস্ত্র লোক দেশীয় তৈরি (অস্ত্র) দা,কিরিচ,লোহার রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে আমার চাচার কৃষি জমিনের রোপণকৃত ধান (রোয়া) নষ্ট করে দিচ্ছিলো,এসময় আমার চাচা আসামীদের এমন অন্যায় কাজে বাঁধা দিলে আসামীরা আমার চাচা নোয়া মিয়া, সেলিমুল ইসলাম চৌধুরী,মোঃ শরীফ চৌধুরীকে এলোপাতাড়ি কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে ও লাঠিসোঁটা দিয়ে রক্তাক্ত আঘাত করে,এতে আহতরা মাটিতে পড়ে গেলেও আসামীরা উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে,আমার বাবা তাদেরকে অনেক অনুরোধ করলেও তারা তাতে কোন ধরনের কর্ণপাত করেনি,এমনকি আমার চাচাকে উদ্ধার করতে গেলে আসামী জিহান,হেলাল উদ্দিন আমার বাবাকে লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করাতে বাবা ঘটনাস্থলে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়।পরে বাবাসহ অন্যান্য আহতদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হাসপাতালে পাঠাইতে চাইলে আসামীরা পথরোধ করে ঠিক সময়ে হাসপাতালে নিতে দেইনি।যাওয়ার পথ বন্ধ করে রেখেছিল হেলাল উদ্দিন,জিহান,বাবুলসহঅন্যান্য আসামীরা।পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় হাসপাতালে নেওয়া হয়, চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলো, কিন্তু শনিবার ভোর ৬ টার দিকে হাসপাতাল থেকে ফোন আসে আমার বাবা নাকি আর নেই।এইসব কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন মেয়ে খাদিজাতুল কবরাসহ স্বজনরা।

স্থানীয়রা বলেন,দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের দু'পক্ষের  মধ্যে জমি বিরোধ চলছিল,কিন্তু দুলা মিয়া থাকতেন প্রবাসে,তিনি এই বিষয় নিয়ে কোনো ধরনের ঘটনায় ছিলেননা,কিন্তু ঘটনার দিন আসামীরা তার ভাইকে মারধর করার সময় তিনি তাদেরকে ঘটনা না করার অনুরোধ করলেও আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে বেশ কয়েকজনকে কুপিয়ে এবং লাঠি দিয়ে রক্তাক্ত আঘাত করে,ভাইকে উদ্ধার করতে গিয়ে দুলা মিয়াকে হামলা করার ফলে গুরুতর আঘাত হয়ে পড়েন তিনি,এতে  হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে দুলা মিয়া নিহত হয়েছে বলে জানান।

এব্যাপারে বাঁশখালীর বাহারচড়া পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মুজিবুর রহমান জানান,জমি বিরোধ নিয়ে দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের কয়েকজন লোক আহত হয়েছে,মূলত গত ৮ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে,এই নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মামলাও হয়েছে,কিন্তু আজকে আহতদের মধ্যে দুলা মিয়া নামে একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে।নিহতের পক্ষ থেকে যে মামলাটি হয়েছিল ওই মামলায় ৩০২ ধারার অভিযোগটা সংযোগ করা হবে বলে জানান পুলিশ মুজিব।

তবে নিহতের পরিবারের দাবি,সেইদিন ঘটনার পর তাদের অভিযোগে ঘটনার সঠিক তথ্য লিখেনি পুলিশ,অভিযোগে আসামী হেলাল যাই বলেছে তাই লিখেছে,তাদের কোন কথাই শুনতে চায়নি পুলিশ এমন অভিযোগও করেন তারা।উল্লেখ্য,বাঁশখালীতে একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটেই চলছে, ২০২৩ সালের শুরু থেকে এই পর্যন্ত ১১/১২ জন খুনের ঘটনা সংঘটিত হওয়াতে আতংকে দিনাতিপাত করছে সাধারণ মানুষ,আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি দিনদিন চরমে।


আরও পড়ুন