তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে ৪০ চীনা সামরিক বিমান
প্রকাশিত: ১৪-৯-২০২৩ দুপুর ১২:৪৩
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা আকাশসীমায় আবারও বড় অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটিয়েছে চীন। গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪০টি চীনা সামরিক বিমান ভূখণ্ডটির আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে প্রবেশ করেছে। এই ঘটনায় তাইওয়ান প্রণালীর আশপাশে আবারও নতুন করে উত্তেজনা বৃদ্ধির শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দ্বীপের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে চীনা বিমান বাহিনীর ৪০টি বিমান প্রবেশ করেছে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ করা এসব বিমানের বেশিরভাগই তাইওয়ানের দক্ষিণে এবং বাশি চ্যানেলে উড্ডয়ন করে বলেও মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
দ্বীপ ভূখণ্ডটির এই মন্ত্রণালয়ের প্রদত্ত মানচিত্র অনুসারে, আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে প্রবেশ করা এসব চীনা বিমানের মধ্যে অন্তত চারটি বিমান দ্বীপের উত্তর-পশ্চিমে তাইওয়ান প্রণালীর মধ্যরেখা অতিক্রম করে।
এদিকে বুধবারও তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা জোনে চীনের ২৮টি বিমান ঢুকে পড়েছিল বলে দাবি করেছে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তাইওয়ান প্রণালীতে এই ধরনের ঘটনাকে বেইজিংয়ের নিয়মিত হয়রানির অংশ বলেও অভিযোগ করেছে তাইপে।
বুধবার তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, সকাল ৬টায় জে-১০ যুদ্ধবিমানসহ চীনের যুদ্ধবিমানগুলো তাইওয়ানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রান্ত দিয়ে উড়ে যায়। এর বেশিরভাগই আবার বাশি চ্যানেল অতিক্রম করে। তবে এ বিষয়ে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কোনও মন্তব্য করেনি।
মূলত চীন স্ব-শাসিত তাইওয়ানকে তার নিজের এলাকা বলে দাবি করে থাকে। এমনকি প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে একদিন তা দখল করার অঙ্গীকারও করেছে পরাশক্তি এই দেশটি।
চলতি বছরের জুনে এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা এএফপি জানায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাইওয়ানের এয়ার ডিফেন্স আইডেন্টিফিকেশন জোন (এডিআইজেড) লঙ্ঘন ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে চীন। এমনকি ২০২১ সালের তুলনায় এই ধরনের লঙ্ঘনের ঘটনা ২০২২ সালে প্রায় দ্বিগুণে পৌঁছে যায়। আর বেইজিংয়ের এই কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা চলতি বছরও অব্যাহত রয়েছে।
গত জুনে প্রায় ছয় ঘণ্টার মধ্যে ৩৭টি চীনা যুদ্ধবিমান ভূখণ্ডটির আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল।
উল্লেখ্য, তাইওয়ান পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ, যা তাইওয়ান প্রণালীর পূর্বে চীনা মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। অবশ্য তাইওয়ানকে বরাবরই নিজেদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে থাকে বেইজিং। এজন্য তাইওয়ানকে মূল ভূখণ্ডের সাথে যুক্ত করতে সামরিক পথ খোলা রাখার বিষয়টিও বলে রেখেছে চীন।
প্রসঙ্গত, ১৯৪৯ সালে চীনে কমিউনিস্টরা ক্ষমতা দখল করার পর তাইওয়ান দেশটির মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যদিও তাইওয়ানকে বরাবরই নিজেদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে থাকে বেইজিং। এরপর থেকে তাইওয়ান নিজস্ব সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে।