নারী কিসের টানে আঁটকায়? চাইলেও কী ধরে রাখা যায়?

news paper

মোরশেদ আলম, সোনাইমুড়ী

প্রকাশিত: ৬-৮-২০২৩ দুপুর ১১:৫৫

116Views

প্রেমিক যুগল অদ্ভূত এক মায়ার মোহনজালে আঁটকায়। আলতো ছোঁয়ায় মনের বাসনায় আপন-পিয়াসী লাল কিংবা গোলাপি রঙের ঠোঁটের স্পর্শতায় নারীকে আপ্লূত করে। গভীর ভালোবাসার মায়ায় ঠোঁটের সাথে মনের উতলা প্রেম আকাশের সাদা মেঘের ভেলার মতোই ভেসে বেড়ায় তাদের প্রেম বন্দনা। তবুও কেনো নারীকে ছেড়ে যেতে হবে এমন গভীর নলকূপময় ভালোবাসা থেকে? কেনো যুগলপ্রেমের স্রোতে অনন্ত না হয়ে ক্ষনিকেই ধরতে হয় ফাটল? 

গতকাল এক বন্ধু সোনাইমুড়ী আসলো দেখা হতেই সে তার দুই বছরের প্রেমের সম্পর্কের বিচ্ছেদের কথা শুনালো। আমিও অবাক হয়ে মনোযোগী ছাত্রের মতো শুনলাম। সোনাইমুড়ী আসার আগে তারা দেখা করেছিলো। তখন তার প্রেমিকা তাকে ৩হাজার টাকা পকেটে ঢুকিয়ে দিয়েছিল। এরপর ২জনে রোমান্সও করেছিল। সোনাইমুড়ী আসার পরের দিন ছোট্ট একটা বিষয়ে তাদের কথা-কাটাকাটি হয়। এরপরই মেয়েটা তাকে ব্লক করে দেয়। বেচারা অনেকবার চেষ্টা করেও রাগ ভাঙ্গাতে পারেনি। শেষে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হয় দুজনকে। নারীরা কী অদ্ভুত তাই না! কিসে আটকায় নারী? সুন্দর চেহারা? স্মার্ট ও সুদর্শন পুরুষ? পর্যাপ্ত সময় দেওয়া? টাকা?

গড়পড়তা সমাজের চোখে যদিও প্রেম একটা পতন। কেউ প্রেমাচ্ছন্ন হলে বাংলায় তাকে বলা হয় প্রেমে পড়েছে (পতন!), ইংরেজিতে বলে ‘ফল্ ইন লাভ’। কিন্তু একটু গভীরভাবে দেখলে দেখা যায়, প্রেম এক অপরিমেয় শক্তির নাম। সমাজের, রাষ্ট্রের কখনো কখনো বিশ্বের প্রচলিত বিধিবিধানকে একটা ফুৎকারে উড়িয়ে দেওয়ার আশ্চর্য এক ক্ষমতা রাখে এই প্রেম। তবুও কেনো সে প্রেমের ইতি ঘটে?

সম্প্রতি সময়ের বহুল আলোচিত বিষয়ের একটি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং তার স্ত্রী সোফি ১৮ বছরের বৈবাহিক সম্পর্ক ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছেন। দুজনের মধ্যে মধ্যে 'অর্থবহ এবং কঠিন আলাপ-আলোচনার' পর তারা এই ঘোষণা দিলেন। আলোচিত হয়েছে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনাটি। টুইটারে তাদের দাম্পত্য জীবনের বিবাহ বিচ্ছেদের ঘোষণা পাওয়ার পর পরই সামাজিক এবং সংবাদ মাধ্যম গুলিতে ইতিবাচক ও নেতিবাচক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া আমরা দেখেছি।

এটা শুধু তাদের ক্ষেত্রেই নয়, যেকোন সেলিব্রেটি বা আশেপাশের কারো বিচ্ছেদের গুঞ্জন উঠেলেই নানা মন্তব্য আমরা দেখি। কিন্তু খুব বিস্ময়ের কিংবা হতাশার ব্যাপার হলো–সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলিতে আমাদের দেশের মানুষের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াগুলো আর সবকিছু ট্রল পর্যায়ে নিয়ে মানুষের সিরিয়াস আবেগের জায়গা গুলোতে আঘাত করার প্রবণতা যখন দেখি।

এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে আমরা বর্তমান সময়ে এতটাই মজে আছি যে, এর নেতিবাচক দিকগুলোতে সবচেয়ে বেশি আসক্ত হয়ে দিন দিন নিজেরা অসামাজিক আর পরিবার বিমুখ হয়ে উঠছি। আমরা খুব সহজেই ভার্চুয়াল ছবি পোস্ট দেখে মানুষকে বিচার করি, কখনো কারো মনের অবস্থা বা মানসিক যন্ত্রণা না বুঝেই মজা করতে গিয়ে হয়ত অনেক বেশি আঘাত করে ফেলছি। কারো সম্পর্কগুলোর গভীরতা, সমস্যা না বুঝেই একটা মন্তব্য করে ফেলি।

শুধু কী নারীরা বিচ্ছেদের জন্য দায়ী? পুরুষরা কতটুকু দায়িত্বশীল? কেনো হচ্ছে এমন বিচ্ছেদ? ২য় পর্বে জানাবো বিস্তারিত_______

মোরশেদ আলম
সংবাদকর্মী ও লেখক


আরও পড়ুন