আজওয়া খেজুর চাষ হচ্ছে এখন ফুলবাড়ীতে

খেজুর সৌদি আরব তথা মরু অঞ্চলের ফল হওয়ায় মরুভূমিতে এর চাষ ভালো হয়। বাংলাদেশে সৌদি খেজুরের গাছ লাগালেও তেমন ফলন হয় না বললেই চলে। তবে এবার ধান ও লিচুর জেলা খ্যাত দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে চাষ হচ্ছে আজওয়া, মরিয়ম,  মেডজল ও আম্বার জাতের সৌ‌দি খেজুর।

মরুর এই ফলের চাষ অনেকটা কঠিন হলেও সেটাকেই বাস্তাবে রূপ দিয়েছেন উপজেলার পৌর এলাকার স্বজন পুকুর গ্রামের  প্রবাসী  জাকির হোসেন। তিনি নিজের ২০ শতাংশ  জমিতে খেজুর চাষ করে সফল হয়েছেন। বর্তমানে তার ১৯টি গাছে ফল ধরেছে।

জানা যায়, জাকির হোসেন(৪৫) দীর্ঘদিন কুয়েতে থাকা আবস্থায় দেশের মাটিতে কিভাবে খেজুর চাষ করা যায় তা ভা‌বতে থা‌কেন। এক পর্যায়ে দেশে আসার সময় পাকা খেজুর কিনে এনে সেই খেজুর থেকে চারা তৈরি করেন। এরপর তিনি তার ২০ শতাংশ জমিতে প্রথমে ১৯টি খেজুর গাছের চারা রোপন করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ২০২০ সালে দেশে চলে আসেন এবং তার সৃজিত খেজুর বাগানে সময় দিতে শুরু করেন। তার রোপনকৃত খেজুর বাগানে রয়েছে মরিয়ম, আজওয়া, , মেডজল ও আম্বার  জাতের খেজুর গাছ। তার খেজুর বাগানের প্রতিটি গাছের বয়স ৪ থেকে ৬ বছর। গতবছর তার বাগানের ৩টি গাছে প্রথম খেজুর আসে। এবছর তার বাগানের সব গাছে ফল এসেছে। আর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই সেই ফল পাকবে।

বাগান ঘুরে দেখা যায়, ২০ শতাংশ জমিতে সারি সারি খেজুর গাছে সবুজ পাতার ফাকে ফাকে থোকায় থোকায় হলুদ ও লাল রঙের খেজুর ঝুলছে। খেজুরগুলো গোলাকার আবার লম্বা। এক একটি গোছায় (কাদিতে) ৪০০ থেকে ৫০০টি খেজুর ধরেছে। তবে খেজুরগুলো এখনও অপরিপক্ব। নতুন কিছু চারা রোপনও করা হচ্ছে।জাকির হোসেন দৈনিক  সকালের সময়কে বলেন বিদেশে থাকা অবস্থায় আমার মাথায় আসে দেশের মাটিতে যদি এসব খেজুর চাষ করা যায়। এই চিন্তা থেকেই দেশে আসার এক পর্যায়ে খেজুর এনে চারা তৈরি করে, সেই চারা লাগাই এবং ইউটিউব দেখে পরিচর্যা করতে থাকি। তিনি বলেন, ২০ শতাংশ জমিতে ১৯টি খেজুর গাছ আছে। খেজুর সাধারণত একটু উচুঁ জমি হলে ভাল হয় এবং গাছের গোড়ায় সব সময় জৈব সার ব্যবহার করতে হয়। গত বছর তার বাগানে ৩টি গা‌ছে ফল এসেছিল। ওই ফল দিয়ে পুনরায় চারা করে‌ছি। বর্তমানে তার এক হাজার খেজুর চারা তৈরি হয়েছে। এবছর বাগানের ৯টি গাছে ফল এসেছে। আগামীতে আশা করছি সব গাছেই ফল আসবে। এবছর গাছ থেকে প্রায় ৩০০ কেজি ফল পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যে অনেকেই ফল কেনার জন্য যোগাযোগ করছে। প্রতি কেজি খেজুরের দাম ৪০০ টাকা করে বলছে। একই সাথে অনেকেই চারার জন্য যোগাযোগ করছেন।

তিনি আরও বলেন, এবছর আমি ২ একর জমি প্রস্তুত করেছি সেই জমিতে আরও ৩০০ খেজুর চারা রোপন করে বাগানের পরিধি বৃদ্ধি করব।ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ  রুম্মান আক্তার জানান, উপজেলায় এই প্রথম একজন কৃষক সৌদির খেজুর চাষ করছেন বলে শুনেছি। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে বাগানের খোঁজ রাখা হচ্ছে। শীঘ্রই বাগান পরিদর্শনে যাবেন  কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে প্রয়োজনীয় সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে।