আখ খেতে ছাগল বন্দি জলে বন্দী মাছ ঢাবিতে ছাত্রলীগ বন্দী হবে সর্বনাশ

news paper

হেদায়েত উল্লাহ তুর্কী

প্রকাশিত: ১৭-৭-২০২৩ দুপুর ১:৩৩

152Views

সম্প্রতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষিত হয়েছে। ঘোষিত কমিটিকে প্রথমে অনেকেই ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি মনে করেছিলেন। অনেকেই ভেবেছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটিতে ভুল করে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েকজনের নাম এসেছে। পরবর্তীতে ভালো করে লক্ষ্য করে দেখা যায় এটা ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি নয় এটা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কমিটি। ঘোষিত কমিটি নিয়ে দেশের ছাত্ররাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। নানান আলোচনা সমালোচনা চলছে চারিদিকে। বিগতদিনগুলিতে কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষিত হলে নানান অসংগতি এবং বঞ্চনার খবর শোনা যেত কিন্তু এবার সবকিছু ছাপিয়ে আলোচনায় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়। রাজনীতির আতুরঘর খ্যাত ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় সবসময় অবদান রেখে আসছে জাতীয় রাজনীতিতে। ছাত্ররাজনীতিতে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সবসময় বেশি সুযোগ সুবিধা পেয়ে আসছেন। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাধান্য থাকলেও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দক্ষ এবং যোগ্য সংগঠকরা অনায়াসে স্থান করে নিতে পারতেন। কিন্তু এবার দেখা মিললো ভিন্নতর। ৩০১ সদস্য বিশিষ্ট ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কমিটির ২২৬ জনই ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ঘোষিত কমিটির ৭১ জন সহ সভাপতির ৫৭ জন, ১১ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ১১ জন সাংগঠনিক সম্পাদকের সকলেই, ৪০ জন সম্পাদকের ৩৯ জনই ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে পদলাভ করেছেন। বঞ্চিত হয়েছেন জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়, চট্রগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ^বিদ্যালয় সহ সকল পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা এবং কর্মীরা। বঞ্চিত হয়েছেন ঢাকা মহানগর সহ দেশের সকল মহানগর এবং বড় বড় জেলার ছাত্রনেতারা। একাত্তরের মহানমুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন কিম্বা ২০০৬ সালের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি আজকের নন্দিত প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা মুক্তি আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এই সকল শাখার ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। বিগত তিন দশকে বিএনপি জামায়াতের অপরাজনীতি, জ¦ালাও পোড়াও আর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার থেকেছে বিভিন্ন মহানগর ছাত্রলীগ এবং মহানগরে অবস্থিত বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয় এবং কলেজসমূহ। ২০০৬ সালে লগি বৈঠার আন্দোলনে রাজপথে রক্তদিয়ে আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলো ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণ ছাত্রলীগ, জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, কবি নজরুল সরকারী কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজ, মীরপুর বাংলা কলেজ, ইডেন কলেজ সহ ঢাকায় অবস্থিত সকল কলেজ সমূহ। গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন বেগবান হতো এসকল শাখা থেকে নেতাকর্মীরা যোগদানের পর থেকে। বর্তমান সময়ের সকল মিছিল মিটিংয়ে জনবল যোগানের কাজটি করে থাকেন উপরে উল্লেখিত শাখা সমূহ। কিন্তু এইবার ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কমিটিতে তাদের শুধু বঞ্চিত করা হয়নি। এক কথায় বলা যায় প্রায় বাদ দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠনকে কাদের পরামর্শে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের মধ্যে বন্দি করা হলো তা ভেবে দেখার বিষয়। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে যেখানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা সেখানে হঠাৎ করে এমন একটি বিতর্কিত কমিটি ঘোষণা করে কার এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্ঠা চলছে। বিগত ২০০২ সালে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী লিয়াকত সিকদার সভাপতি এবং জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম বাবু সাধারণ সম্পাদক পদে জেলখানায় থেকে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন। তাদের ঘোষিত কমিটি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় সারাদেশের প্রায় অধিকাংশ ছাত্রলীগের শাখা কমিটি থেকে নেতাকর্মী নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন শফিক, বরিশাল বিএম কলেজের ভিপি বলরাম পোদ্দার, চট্রগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি জহির উদ্দিন লিপটন, সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ভিপি আশরাফুল আলম রুবন, জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি দেবাশিষ বিশ^াস, খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অসিত বরণ বিশ^াস’রা সহ সভাপতি এবং রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক সাধরাণ সম্পাদক সাইফুজ্জামান শিখর, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহার আনাম, ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি পনিরুজ্জামান তরুন’রা স্থান করে নিয়েছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে। সাংগঠনিক সম্পাদক সহ বিভিন্ন  সম্পাদকের পদ অলংকৃত করেছিলেন দেশের বিভিন্ন শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিগত কমিটিগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে নির্বাচিত সভাপতি সাধারণ সম্পাদকদের চেয়ে অনেক বেশী বিশ^স্ত ছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বাইরে থেকে নির্বাচিত সভাপতি সাধারণ সম্পাদকগন। সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক নিয়ে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় স্বাধীন বাংলাদেশে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসু ভিপি আ স ম আব্দুর রব বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ’৭৩-এর জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কৃত হয়ে জাসদে যোগদান করেন। সাবেক সভাপতি শেখ শহীদুল ইসলাম স্বৈরাশাসক এরশাদের মন্ত্রী হয়েছিলেন। সাবেক সভাপতি মনিরুল হক চৌধুরী জাতীয় পার্টির চিফ হুইফ ছিলেন। সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম প্রধান খুনের দায়ে দল থেকে বহিস্কৃত হলে পরবর্তীতে জাগপা গঠন করেন। সাবেক সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর গনফোরামে যোগদান করেন। সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব বিএপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে রয়েছেন। নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে ছাত্রলীগ থেকে বরখাস্ত হন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী। স্বাধীনতাপূর্বে দেখা যায় বাংলাদেশে ছাত্রলীগের প্রথম আহবায়ক নাঈমুদ্দীন নেতৃত্বগ্রহণের দু’মাস ১২ দিনের মাথায় বহিস্কৃত হন। বাংলাদেশে ছাত্রলীগের প্রথম সাধারণ সম্পাদক খালেক নেওয়াজ খান দলত্যাগ করে শেরে বাংলার পার্লামেন্টারি সচিবের পদ গ্রহণ করেন। প্রথম সভাপতি দবিরুল ইসলাম দলীয় কোন্দল সৃষ্টির কারনে দল থেকে বহিস্কৃত হন। সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ আউয়াল জাসদ গঠন করেন। দুই মেয়াদের সভাপতি শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন এবং একবারের সভাপতি কে এম ওবায়দুর রহমান বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর খন্দকার মোশতাকের গঠিত সরকারের প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন। সাবেক সভাপতি আব্দুর রউফ বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর খন্দকার মোশতাকের গঠিত সরকারের হুইপ নিযুক্ত হন সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল আলম খান বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের বুলি ছড়িয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রেক্ষাপট তৈরী করেন। সাবেক সভাপতি এবং ডাকসুর ভিপি ফেরদৌস কোরেশী জেনারেল জিয়ার আমলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হয়েছিলেন। পক্ষান্তরে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বাইরে থেকে নির্বাচিত সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকগন দলের প্রতি অবিচল আস্থা রেখেছেন। তাঁরা কখনো দল ছেড়ে যাননি। বরং দলের দুর্দিনে হাল ধরেছেন। সহযোগী সংগঠনের দায়িত্বপালন করেছেন। দল এবং সরকারের রেখে চলেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। পর্যালোচনায় দেখা যায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি এবং ভিপি আব্দুল মান্নান বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি এবং পরবর্তীতে সংসদ সদস্য সহ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। বরিশাল বিএম কলেজের ভিপি এবং বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির নানক বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান, সংসদ সদস্য, মন্ত্রীত্ব সহ দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যর দায়িত্বপালন করছেন। চট্রগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী এখনো সংসদ সদস্য বা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদ লাভ না করলেও তিনি দল ছেড়ে যাননি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের ভিপি এবং সভাপতি এ কে এম এনামুল হক শামীম বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অজয় কর খোকন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এখনো দলীয় মনোনয়ন না পেলেও কাজ করে যাচ্ছেন দলের হয়ে। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী লিয়াকত সিকদার বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন অত্যন্ত দক্ষতার সাথে। ছাত্রলীগ শেষ করার পর এখনো কোন দলীয় পদ পদবী লাভ না করলেও দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক নজরুল ইসলাম বাবু বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং পরবর্তীতে নারায়নগঞ্জ থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাইফুজ্জামান শিখর রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় থেকে এসে দক্ষতা এবং বিশ্বস্থতার সাথে দুইবার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার একান্ত ব্যক্তিগত সহকারীর দায়িত্বপালন শেষে বর্তমানে মাগুরা ১ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। শুধু কেন্দ্রীয় সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক নয়  ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বাইরের অনেক ইউনিট প্রধান কিম্বা কর্মীরা জাতীয় এবং স্থানীয় রাজনীতিতে শক্ত অবস্থানে আছেন। চট্রগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পূর্বে তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।  শেরেবাংলা কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের  সাবেক সভাপতি আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাসিম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরবর্তীতে তিনি সংসদ সদস্য হয়েছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।  জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জ্যৈষ্ঠ সহ-সভাপতির দায়িত্বপালন করেছেন। বর্তমানে তিনি তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পাশাপাশি জাতীয় সংসদের হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বপালন করে পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্বপালন করেছেন। বর্তমানে তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিন বর্তমানে তৃতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। নাটরের সিংড়া ডিগ্রী কলেজের সভাপতি জুনায়েদ আহমেদ পলক পরবর্তীতে একাধিকবার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বাইরের সাবেক শিক্ষার্থীরা ও ছাত্রনেতারা রাজনীতিতে ভালো অবস্থানে আছেন। জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক আহবায়ক নজিবুল্লাহ হিরু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আসাদ্জ্জুামান খান কামাল বর্তমানে গণপ্রাজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম কোতয়াল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহ সভাপতি এবং পরবর্তীতে শরীয়তপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইসহাক মিয়া, তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলাম বাসেক, তেজগাঁও কলেজ ছাত্রলীগের ফরিদুর রহমান খান ইরান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শুভ, সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান, বৃহত্তর লালবাগ থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসিবুর রহমান মানিক সহ অনেকে ঢাকা সিটি করপোরেশনের কমিশনার নির্বাচিত হয়েছেন। জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি দেবাশিষ বিশ^াস এবং কামরুল হাসান রিপন পর্যায়ক্রমে ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির মুন্সীগঞ্জ থেকে সংসদ সদস্য পদে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্ঠা করছেন। জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গাজী আবু সাঈদ সুত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাজহার আনাম দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। পর্যালোচনায় দেখা যায় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে গড়ে উঠা ছাত্রলীগের নেতাদের চেয়ে জাতীয় এবং স্থানীয় রাজনীতিতে অনেক বেশী প্রভাবশালী হয়ে উঠছেন অন্যান্য বিশ^বিদ্যালয়, কলেজ এবং মহানগর এর নেতারা। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় বাদে অন্যান্য সকল বিশ^বিদ্যালয়, মহানগর, কলেজ এবং সকল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। অন্যথায় অদূর ভবিষতে আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রলীগের কর্মী পাওয়া দুস্কর হয়ে যাবে। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মধুর ক্যান্টিন কেন্দ্রীক রাজনীতি করে সহজেই হল কমিটি, বিশ^বিদ্যালয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ লাভ করতে পারেন। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কমিটি করতে গেলে প্রায় তিনহাজার শিক্ষার্থীর প্রয়োজন পড়ে। অনেক সময় জোর করে পদ দেওয়ার ঘটনা দেখা যায়। পত্রিকার নিউজে অনেকে পদ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিভিন্ন সময় বক্তব্য পর্যন্ত দিয়েছেন। পক্ষান্তরে জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজ, বাংলা কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, ইডেন কলেজ, মহানগর উত্তর দক্ষিণ  সহ বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মীদের প্রতিদিন মধুর ক্যন্টিন এবং দলীয় কার্যালয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়।কয়েকটি কলেজের কিছু আবাসিক সুবিধা থাকলেও বেশীরভাগ কলেজে নেই কোন আবাসিক সুবিধা। ম্যাচে বা ফ্লাট বাসায় ভাড়া থাকতে অধিকাংশ শিক্ষার্থীদেরকে টিউশনি করতে হয়। নিজেদের ক্লাস, টিউশনি, রাজনীতি করে কয়েকবছর পর তাদেরকে ফিরতে হয় খালি হাতে। অনেক শাখায় পাঁচ থেকে দশ বছর কমিটি গঠন না হওয়ায় কোন রাজনৈতিক পরিচয় বা পদ পদবী ছাড়া ছাত্ররাজনীতির ইতি ঘটিয়ে খুজতে হয় কর্ম। আন্দোলন সংগ্রাম আর ইতিহাস ঐতিহ্যের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ গঠিত হোক দক্ষ যোগ্য আর মেধার ভিত্তিতে। কোন বিশেষ বিশ^বিদ্যালয় বা কোন বিশেষ এলাকাকে কেন্দ্র করে নয়। ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে বন্দী না থেকে ছড়িয়ে পড়ুক সারাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

মোঃ হেদায়েত উল্লাহ তুর্কী
সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী
(বর্তমানে ডেপুটি রেজিস্ট্রার, জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়)


আরও পড়ুন