আজও দাঁড়িয়ে আছে নবীনগরের দু’শত বছরের সতীদাহ মন্দির

news paper

আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া মিনাজ, নবীনগর

প্রকাশিত: ১৮-৬-২০২৩ দুপুর ৪:৫৩

148Views

ইতিহাস ঋজু নয়,বড়ই বেদনা ভরা। জীর্ণ দেয়ালের গায়ে জমে থাকে সময়ের জঞ্জাল। বিস্মৃতির শ্যাওলারা গাদাগাদি ঠেসাঠেসি করে থাকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার  নবীনগর উপজেলার ইতিহাস প্রসিদ্ধ গ্রাম বিদ্যাকুট। এ গ্রামের মাঝ খানে অবস্থিত একটি মন্দির, মন্দিরের স্থানটি ভুতুড়ে বাড়ির মত নির্জন। প্রায় দু’শত বছরের পুরাতন জীর্ণ এ মন্দির। মন্দিরটির নাম সতীদাহ মন্দির। এটি নির্মাণ করে ছিলেন বিদ্যাকুটের প্রসিদ্ধ দেওয়ান বাড়ির দেওয়ান রাম মানিক। অতীতে এ দেশের হিন্দু সমাজে সতীদাহ প্রথা চালু ছিল। স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকে মৃত স্বামীর সঙ্গে জীবন্ত দাহ করা হত। কোন কোন ক্ষেত্রে সদ্য বিধবরা স্বেচ্ছায় মৃত্যু বরণ করত। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বলপূর্বক দাহ করা হত। জীবন্ত সতী নারীর চিৎকার যেন না শুনা যায় সে জন্য খুব জোরে ঢাক, ঢোল সহ নানান বাদ্য যন্ত্র বাজানো হত। সমাজের এই অমানবিক এবং বীভৎস প্রথা ১৮২৯ সালে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংয়ের নেতৃত্বে ব্রিটিশ সরকার বেআইনী ঘোষণা করে বন্ধ করে দেয়। সতীদাহ নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর ভারতের অন্যান্য স্থানের মত ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও এ প্রথা বন্ধ হয়ে যায়। দেওয়ান রাম মানিকের মাতাকে এই মন্দিরটিতে সর্বশেষ সতীদাহ বরণ করতে হয়। সতীদাহ বরণকারিণীর নামে পূর্বে একটি শ্বেত পাথরের নাম ফলক বসানো ছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এটি নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে বিদ্যাকুটে তাদের বংশধরেরা না থাকায় সেই সতী নারীর নাম জানা সম্ভব হয়নি। কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে বিদ্যাকুটের এই সতী মন্দিরটি। সম্প্রতি প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর এ মন্দিরটিকে হেরিটাইজ হিসাবে ঘোষণা করে তাদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে একটি সাইনবোর্ড স্থাপন করে, এবং জরাজীর্ণ মন্দিরটি সংস্কার করে। 


আরও পড়ুন