মোহাম্মদপুরে পরকীয়ার জেরে স্বামী হত্যার অভিযোগ স্ত্রী কে দুই দিনের রিমান্ড
প্রকাশিত: ১৬-৬-২০২৩ দুপুর ১২:১২
রাজধানীর মোহাম্মদপুর পরকীয়ায় বাধা দেওয়া নিজ স্বামীকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। নিহত ব্যক্তির নাম আমিনুল ইসলাম মিঠু (৪৫)। বাসা নং২৮/৪, তাজমহল রোড ব্লক-সি,মোহাম্মদপুরের বাসায় এক সন্তান নিয়ে নিজের বাড়িতে থাকতো মিঠু।
এ বিষয় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন নিহতের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ মামলা নং ৬৮/২৩ ঘটনাটি ঘটেছে ১১ই জুন দিবাগত রাতে ,১২ ই জুন দুপুরের দিকে জানাজানি হয়। স্থানীয়রা পুলিশ ফোন দিলে নিহতের স্ত্রী কে,ঘটনা স্থান থেকে আটক করে থানা-পুলিশ
এ ঘটনায় সরেজমিনে গেলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায় মিঠুর স্ত্রীর সাথে তাদের গৃহ শিক্ষকের সাথে সম্পর্ক ছিলো বলে স্থানীয়দের ধারণা। মিঠুর কয়েকজন বন্ধু সকালের সময় কে বলেন, মিঠুর স্ত্রী ১২ তারিখ সকাল ১১ টার সময় মিঠুর এক বন্ধু কে ফোন করে জানান, আপনার ভাই ঘুম থেকে উঠছে না,পরে সেই বন্ধু গিয়ে দেখেন, নিহত কে চাদর দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। পরবর্তী তে লাশের উপর থেকে চাদরটি উঠালে নিহতের মুখমন্ডলে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায় এবং রক্তের দাগ লেগে আছে এতে বোঝা যায় মিঠুকে হত্যা করা হয়েছে। মিঠুর স্ত্রী কে, রক্তের বিষয় বললে তিনি বলেন, আপনার ভাই,বাথরুমে পরে গিয়েছিল (মিঠু) বাথরুমে ঢুকে দেখেন বাথরুম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রয়েছে এতেই সন্দেহ হয় মিঠুর বন্ধুদের। নিহতের এক বন্ধু বলেন মৃত্যুর মোটিফ দেখে মনে হচ্ছে
আমিনুল ইসলাম মিঠু কে, হত্যা করা হয়েছে।
এবং এই হত্যার সাথে তার স্ত্রী এবং গৃহ শিক্ষকরা জড়িত আছেন বলেও সন্দেহ স্থানীয়দের। ঘটনার দিনেও দুইজন গৃহ শিক্ষক ওই বাসার ভিতর ছিলো বলে সূত্রে জানা যায়,পুলিশের টের পাওয়ায় পালিয়ে যায় গৃহ শিক্ষকরা।
এ বিষয় মিঠুর বোন নাঈমা আহমেদ সকালের সময় কে বলেন,ভাড়াটিয়ার কাজ থেকে ভাইর মৃত্যুর খবর শুনে তাজমহল রোডের বাড়িতে আসলে ভাইর মৃত্যু দেহ দেখে ভাইয়ের স্ত্রীরীর কাছে জানতে চাইলে বলেন,রাতে না-কি অসুস্থ হয়ে মারা গেছে, যা কখনো বিশ্বাস যোগ্য না,১১ই জুন ভাইয়ের সাথে দেখা করে বাসায় গেছি, আমার বাসা আদাবর এলাকায়। ১২ তারিখ রাতে যদি আমার ভাই অসুস্থ হবে তাহলে কেনো তার স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি করালোনা, আমাকে কেনো ফোন দিলোনা?আমার ভাইয়ের স্ত্রী বলে,ভাই না-কি অসুস্থ হয়ে মারা গেছে এটা কখনোই বিশ্বাসযোগ্য না। এটা একটা হত্যাকান্ড। আমার ভাই মারা যাওয়ার পরেও আমাকে তার স্ত্রী ফোন করেনি,ভাইয়ের বাসার ভাড়াটিয়ারা আমাকে ফোন করে বলেছেন, আমার ভাই মারা গেছে।বাসার সামনে এসে দেখি লাশবাহী একটা এম্বুলেন্স। আমাদের কে,না জানিয়ে কে আনলেন লাশ বাহী এম্বুলেন্স এটার সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার। আমার ভাইর হত্যার বিচার চাই। তিনি আরও বলেন এই হত্যার সঠিক তদন্ত করে অপরাধী র সঠিক বিচার করতে হবে।
মোহাম্মদপুর থানা সূত্রে জানা যায়,লাশের প্রাথমিক সুরতহালে কিছু অস্বাভাবিক চিহ্ন দেখা গেছে,নিহতের নাকে ও মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে যেটা দেখে মনে হয়নি এটা একটি স্বাভাবিক মৃত্যু।প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয় লাশটি
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন ছোট ভাইর স্ত্রীরীর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় সেই মামলায় নিহতের স্ত্রী কে তাজমহল রোডের বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং দুইদিনের রিমান্ডে আছে।
এ বিষয় মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবুল কালাম আজাদ সকালের সময় কে বলেন, তাজমহলরোড ব্লক-সি, আমিনুল ইসলাম মিঠু নামে একজন স্থানীয় বাসিন্দা মারা গেলে আমরা তার লাশ উদ্ধার করি। পরবর্তীতে নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করলে নিহতের স্ত্রী কে আটক করি এবং মনে হয়েছে এটা একটি হত্যার ঘটনা তাই আসামিকে আমরা কোর্টের মাধ্যমে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছি। ওসি আরও বলেন এর সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কি-না তা যাচাই-বাছাই করার জন্য। কোর্টের কাছে রিমান্ড চাইলে আদালত তা মনজুর করেন। রিমান্ড শেষে আরও বিস্তারিত বলতে পারবো কে,কে এই হত্যার সাথে জড়িত ছিলো।
এ বিষয় স্থানীয়রা বলেন,মিঠুর একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে মেয়েটি ভার্সিটিতে পড়াশুনা করে মুলতঃ সেই মেয়ের শিক্ষকের সাথেই নিহতের স্ত্রীর পরকীয়া ছিলো এ নিয়ে মাঝে মধ্যেই তাদের সাংসারিক জীবনে দেখা দেয় দাম্পত্য কলহ। স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায় নিহতের কয়েককোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে মোহাম্মদপুর সহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে এর অধিক অংশ সম্পত্তির নমিনি রয়েছে তার স্ত্রীর নামে। অনেকের ধারণা হয়তো সেজন্যও আমিনুল ইসলাম মিঠু কে হত্যা করতে পারে।