প্রাণী সম্পদ অফিস ঘেরাও,সুফল ভোগীদের হাঁস বিতরণ স্থগিত

news paper

সাইদুল ইসলাম আবির, রায়গঞ্জ

প্রকাশিত: ৮-৬-২০২৩ দুপুর ২:৩০

74Views

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় হতদরিদ্র পরিবারে হাঁস বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ওঠার পর বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৫০০টি হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে হাঁস বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।এর আওতায় একটি সুবিধাভোগী পরিবার পাবে ২০টি হাঁস। বিতরণ করা একেকটি হাঁস হবে খাকি জাতের, যার বয়স ৫০ দিন এবং ওজন হবে ২০টি ১৬ কেজি। বিতরণ কাজের দায়িত্ব পায় জেন্টেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বৃহস্পতিবার  বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু অভিযোগ ওঠে ২০ টি হাঁসের ওজন ১৬ কেজির জায়গায় বিতরণ করা হয় ৫-৭ কেজি  ওজনের হাঁসের বাচ্চা।একপর্যায়ে সুফল ভোগীরা প্রাণী সম্পদ অফিস ঘেরাও করে এবং উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাকে অনিয়ম বিষয়ে প্রশ্ন করে। এর মাঝেই সটকে পালিয়ে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনেরা।সুফলভোগী উপজেলার সোনাখাড়া, ধামাইনগর, শিবপুর,বড়াইল, ধলজান এলাকার সুবাস, বিজয়, জয়দেব, রমেশ, ধিরেন,চঞ্চলসহ সকল একাধিক সুবিধাভোগীরা জানান,প্রকল্পের আওতায় প্রথমে তাদের হাঁস পালনে ট্রেনিং দেওয়া হয়।এর পর আজকে তাদের ২০ টি করে হাঁস দেওয়া হয়। আমরা দিনমজুর মানুষ,দিন আনি দিন খাই,আমাদের কামলা কামাই দিয়ে আজকে ৩-৪ শ টাকা গাড়ি ভাড়া করে হাঁস নিতে এসেছি। কিন্তু আমাদের এই হাঁস বিতরণে অনিয়ম করেছে তাই আমরা প্রাণী সম্পদ অফিস ঘেরাও করেছি।অনেকের অভিযোগ ২০টি হাঁসের বাঁচার কাছে তাদের ১৬ টি করে  বিতরণ করা হয়েছে।স্থানীয় সোনাখাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল রিপন বলেন,আমার ইউনিয়নে মোট ২৬৯ জন সুফল ভোগী তাদের দেওয়া হাঁসের বাঁচ্চার অনিয়মের কথা শুনে আমি প্রাণী সম্পদ অফিসে এসে দেখি ২০টি হাঁস ১৬ কেজি ওজন হওয়ার কথা থাকলেও ওজনে ২০টি হাঁস মাত্র ৫-৭ কেজি পরিমানের বাঁচ্চা বিতরণ করা হয়। এ ঘটনায় সুফলভোগীদের অফিস ঘেরাও এ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ওয়ালি-উল ইসলাম অফিস থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. গৌরাঙ্গ কুমার তালুকদার বলেন, রায়গঞ্জ উপজেলায় ৫০০ টি খামারীদের মাঝে ২০ টি করে হাঁসের বাঁচা বিতরণ করা হবে। ২০ টি হাঁসের ওজন হবে ১৬ কেজি।খামারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাকে বলে দিয়েছি ওজনে কম হলে হাঁসের বাচ্চাগুলো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ফেরত দিতে।এ বিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৃপ্তি কণা মন্ডল জানান,আমাকে শুধু উদ্বোধনের দাওয়াত দেওয়া হয়েছিলো।আমি সেখানে গিয়ে উদ্বোধন করে চলে এসেছি।তবে আমি উদ্বোধনের সময় বড় হাঁস দিয়েই উদ্বোধন করে এসেছি।উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেনারি সার্জন ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, ২০ টি হাঁসের ওজন ৫-৭ কেজি হওয়ায় বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।এ বিষয়ে জেন্টেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা কোন কথা বলেন নাই। সুফল ভোগীদের অভিযোগ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের  পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম।


আরও পড়ুন