অভূতপূর্ব উন্নয়ন

news paper

সিরাজুল ইসলাম

প্রকাশিত: ৩০-৫-২০২৩ দুপুর ২:৪৬

22Views

টানা প্রায় ১৫ বছর দেশ শাসন করছে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া দল আওয়ামী লীগ। এই সময়ে দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। নিজের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। পাবনার রূপপুরে দ্রুত গতিতে চলছে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ। কর্ণফুলী নদীতে দেশের প্রথম টানেল দিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই চলবে গাড়ি। কক্সবাজারে বিদ্যুৎকেন্দ্র, ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল এবং সাগরের মধ্যে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে কক্সবাজার হবে সিঙ্গাপুর।

বিপুল সংখ্যক সেতু নির্মাণ করে ভোলার সাথে সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকার বুকে চালু হয়েছে মেট্রোরেল। যমুনা নদীর উপর দ্রুত চলছে বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর নির্মাণ কাজ। বিভিন্ন স্থানে সড়কের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। নতুন সড়ক নির্মাণের পাশাপাশি সংস্কার করা হয়েছে অনেক পুরনো সড়ক। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। এছাড়া বাগেরহাটের রামপাল এবং পটুয়াখালীর পায়রায় নির্মাণ করা হয়েছে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। এছাড়া পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর চালু হচ্ছে শিগগিরই। এছাড়া অর্থনীতিও অনেক বড় হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের ৩৫তম অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ। বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার। আমরা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে মানবিক দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছি। আর এসব সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শি নেতৃত্বের কারণেই। এক সময়ের তলাবিহীন ঝুঁড়ি এখন বিশ্বে উন্নয়নের বিষ্ময়। শুধু তা-ই নয়, আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় বাংলাদেশের উন্নয়নের খবর বেশ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। 

জানা গেছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও মেট্রোরেলসহ ১০টি মেগা প্রকল্পকে গুরুত্ব দিয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৯ কোটি ১৭ লাখ টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অনুমোদন দেওয়া হয়। শুধু রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয় ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণে ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হচ্ছে। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয় মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল তিন হাজার ৯৮২ কোটি ১০ লাখ টাকা। রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলমান মেট্রোরেল চলবে। এরই মধ্যে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, অনুমোদিত ব্যয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। তবে মতিঝিল ছাড়িয়ে মেট্রোরেলের রুট কমলাপুর পর্যন্ত নেওয়ায় প্রকল্পের কাজ বেড়ে গেছে। সেজন্য পুরো প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করতে আরও প্রায় এক বছর বেশি সময় লাগবে। সেক্ষেত্রে মেট্রোরেল প্রকল্পটি শেষ করতে সময় লাগবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। আর খরচ হবে আরও ১১ হাজার কোটি টাকা। যমুনা নদীর ওপর ‘বঙ্গবন্ধু রেল সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পে ১৬ হাজার ৮০৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা খরচ হতে পারে। 

গত বছরের ২ আগস্ট ‘টেকঅ্যাওয়েজ ফ্রম বাংলাদেশ’স লিডারশিপ’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। প্রবন্ধটি লিখেছেন লেখক ও কলামিস্ট সাহেবজাদা রিয়াজ নুর। একসময় পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। নিবন্ধের শুরুতেই সাহেবজাদা রিয়াজ নূর বলেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক পরিবর্তন হয়েছে। এই উন্নয়নের কৃতিত্ব দেশটির নেতৃত্বকেই দেয়া যেতে পারে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। এই সেতুকে দেশের ‘গর্ব ও সামর্থ্যের প্রতীক’ আখ্যা দিয়েছেন তিনি।

এরপর তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ১৯৯০-এর দশক থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিষয় ও পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত। রাজনৈতিক প্রভাবের সঙ্গে অর্থনৈতিক নীতির ভারসাম্য তৈরির কাজে মনোযোগ দেন তিনি। তার কথায়, শেখ হাসিনা তার বাবার (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) সমাজতান্ত্রিক এজেন্ডা থেকে বাজারভিত্তিক পুঁজিবাদী প্রবৃদ্ধির দিকে মনোনিবেশ করেন। তিনি অন্যান্য এশিয়ান দেশ থেকে শিখেছেন, যাদের অর্থনৈতিক সাফল্যের ভিত্তি চারটি। এই ভিত্তিগুলো হলো- রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সামাজিক উন্নয়ন, রফতানিকেন্দ্রিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বাণিজ্যনীতি উদারীকরণ ও আর্থিক সংযম।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে প্রবন্ধে রিয়াজ নুর আরও বলেন, ‘১৯৭১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে জবাবদিহিতার অভাব এবং সামরিক শাসনের প্রভাব থাকলেও ২০০৯ সাল থেকে সেনাবাহিনী কার্যত আড়ালেই রয়েছে। বাংলাদেশে বেসামরিক সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির ঘটনা খুবই কম।
তার ভাষায়, যদিও দেশটির গণতান্ত্রিক ইতিহাস নিষ্কলঙ্ক নয়, বাংলাদেশ সরকার দুর্নীতি ও অদক্ষতার বিষয়ে জনসাধারণের সমালোচনার বিষয়টি ভালোভাবেই এড়াতে সক্ষম হয়েছে। সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতা খুব বেশি থাকলেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক দূরদর্শী চিন্তা ধারণ করেছেন এবং তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, অর্থনৈতিক অগ্রগতিই দেশের দারিদ্র্য বিমোচনের একমাত্র উপায়।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিক বলেন, বিরোধীদের দমনের কিছু অভিযোগ থাকলেও ১৫ বছর ধরে টেকসই প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। ১৯৭০ সালে দেশটি পাকিস্তানের তুলনায় ৭৫ শতাংশ গরিব ছিল। কিন্তু এখন পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ ৪৫ শতাংশ বেশি ধনী। ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১ কোটি বেশি ছিল। আর এখন পাকিস্তানের জনসংখ্যা ২৩ কোটি। যেখানে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ।

দুই দেশের অর্থনৈতিক পার্থক্য উল্লেখ করে প্রবন্ধে রিয়াজ নুর বলেন, ২০২১ সালে বাংলাদেশের রফতানি আয় ৪৭ বিলিয়ন ডলার আর পাকিস্তানের মাত্র ২৮ বিলিয়ন ডলার। পাকিস্তানের ১ হাজার ৫৪৩ ডলারের তুলনায় বাংলাদেশে এখন মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ ডলার। বাংলাদেশে ২০২২ সালে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৪১১ বিলিয়ন, পাকিস্তানে তা ৩৪৭ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশে বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশ, পাকিস্তানে আগে যা ছিল ১২-১৫ শতাংশ। পাকিস্তানে বর্তমানে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ২১ শতাংশ হয়েছে। ভবিষ্যতে এই হার আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া পাকিস্তানি রুপির তুলনায় বাংলাদেশি টাকা অনেক শক্তিশালী। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নারীর অধিক হারে অংশগ্রহণের পাশাপাশি সাক্ষরতার হার অনেক বেশি।

প্রায় প্রতিটা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চেয়ে পাকিস্তানের পিছিয়ে পড়ার জন্য পাক রাজনীতি ও রাজনীতিকদের দোষারোপ করেছেন রিয়াজ নুর। তিনি বলেন, পাকিস্তানে রাজনৈতিক দলগুলো এখনও নিজস্ব স্বার্থ হাসিলে ব্যস্ত। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বারবার কারসাজির ফলে শক্তিশালী, গণতান্ত্রিক এবং পরিবারতন্ত্রবহির্ভূত রাস্তায় রাজনৈতিক দলগুলোর পথচলা বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

তার ভাষায়, এটা অনস্বীকার্য যে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, আইনের শাসন, শক্তিশালী বেসামরিক প্রতিষ্ঠান এবং অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। পাকিস্তান উত্তরাধিকার সূত্রে একটি রাষ্ট্র পেয়েছে, যেখানে শক্ত রাষ্ট্র কাঠামোর ভেতরে একটি দুর্বল বুর্জোয়া জনগোষ্ঠী গ্রহীতা-দাতার সম্পর্কে বিন্যস্ত।

রিয়াজ নুর বলেন, পাকিস্তান অনিবার্যভাবে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত ও কর্তৃত্বমূলক গোষ্ঠীর মাধ্যমে পরিচালিত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কৃষি এবং ব্যবসায়িক আয়কে করের আওতা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।

প্রচুর শিল্পকারখানা যেকোনো ধরনের শুল্ক থেকে অব্যাহতি প্রাপ্ত। আমাদের পার্লামেন্টে আধিপত্য ভূস্বামীদের, ফলে কৃষি আয়করের বিষয়টিকে নাকচ করে দেয়ার বিষয়টি আশ্চর্যজনক নয়। তবে এর ফলে কৃষি ও শিল্পখাতে কম করের কারণে সামগ্রিক করের আওতা ছোটই থেকে গেছে।

পাকিস্তানি রাজনীতিকদের বাংলাদেশের নেতৃত্বকে অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়ে রিয়াজ নুর বলেন, বাংলাদেশের উদাহরণ অনুসরণ করে পাকিস্তানি নেতৃত্বকে অবশ্যই জাতীয় লক্ষ্য হিসেবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথ অনুসরণ করতে হবে এবং আঞ্চলিক শান্তির পাশাপাশি সাংবিধানিক শাসনকে এগিয়ে নিতে হবে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫২তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে মার্কিন কংগ্রেসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং আর্থসামাজিক অগ্রগতির স্বীকৃতির প্রশংসা করে একটি  প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে।

গত ২৯ মার্চ কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসের পক্ষ থেকে সাউথ ক্যারোলিনার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জো উইলসন কংগ্রেসে এই প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেন। প্রস্তাবটি উত্থাপনকালে কংগ্রেসম্যান উইলসন ৫১ বছর আগে ১৯৭২ সালের ৪ এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথাও স্মরণ করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাসব্যাপী বাংলাদেশের  মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী এবং এর দোসরদের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের কথা প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয় এবং বলা হয় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিল গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার সংগ্রাম। এতে বলা হয়, বিগত পাঁচ দশকে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধন করেছে। বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি, যার মাথাপিছু জিডিপি বেড়ে ২০২১ সালে দাঁড়িয়েছে ২৪৫৭ মার্কিন ডলারে, যা এখন তার আঞ্চলিক প্রতিবেশীর চেয়ে অনেক বেশি।

রেজুল্যুশনে আরও উল্লেখ করা হয়, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৯ বিলিয়ন থেকে ৪শ ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, গড় আয়ু ৪৭ বছর থেকে বেড়ে ৭৩ বছর হয়েছে এবং বয়স্ক সাক্ষরতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ শতাংশের বেশি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদন, দারিদ্র্য হ্রাস, উন্নত স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, দুর্যোগ প্রশমনসহ আর্থসামাজিক খাতে যথেষ্ট অগ্রগতি লাভ করেছে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, বাংলাদেশ সফলভাবে মডারেট মুসলিম সমাজ ব্যবস্থা বজায় রেখেছে, উগ্রবাদ দমন করেছে এবং দেশটির জনগণ বন্দুকের কর্তৃত্ববাদী শাসনের পরিবর্তে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি সমর্থন বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।

প্রস্তাবে আরও বলা হয় আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ দমন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যাপক সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য বৃহত্তম রপ্তানি বাজার এবং বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের একটি বৃহত্তম উৎস। বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক, বাণিজ্যিক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সহযোগিতার মাধ্যমে মার্কিন অর্থনীতিতেও অবদান রেখে চলছে। রেজুল্যুশনে বলা হয়, প্রতিবেশী মিয়ানমার দ্বারা সংঘটিত গণহত্যা রোধে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে যে উদারতার পরিচয় দিয়েছে, আমেরিকার জনগণ তার প্রশংসা করে। মিয়ানমার সৃষ্ট এই সংকট মোকাবিলায় মানবিক সহায়তা বাবদ সবচেয়ে বেশি অর্থ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। এতে আরও বলা হয়, বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সৈন্য প্রেরণকারী দেশ যা আমেরিকার জনগণের কাছে সর্বদা প্রশংসা অর্জন করেছে। উভয় দেশই অর্জিত সমৃদ্ধি বিনিময়ের জন্য তাদের জনগণের সাথে জনগণ এবং সরকারের সাথে সরকারের সম্পর্ক আরও উন্নত করতে চায়। প্রস্তাবে বলা হয় বাংলাদেশের জনগণকে ১০ কোটি ডোজেরও বেশি কোডিভ ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের জনগণ যখন স্বাধীনতার ৫১ বছর উদযাপন করছে তখন আমেরিকার জনগণ বাঙালি জাতির ভূয়সী প্রশংসা ও স্বীকৃতি  প্রদান করে। বর্তমান ও ভবিষ্যতে পারস্পরিক অর্থনৈতিক, সামাজিক ও জাতীয় নিরাপত্তার লক্ষ্য অর্জনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গঠনমূলক অংশীদার থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে বলেও রেজুল্যুশনে মন্তব্য করা হয়েছে।


আরও পড়ুন