জান্নাতুল ফেরদৌস 

নতুন ব্যবসা শুরু করার আগে জানুন 

news paper

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৩-৫-২০২৩ দুপুর ২:৩০

35Views

ট্রেড লাইসেন্স কি?

ট্রেড অর্থ হচ্ছে ব্যবসা আর লাইসেন্স অর্থ হচ্ছে অনুমতি। এক কথায় ট্রেড লাইসেন্স অর্থ হচ্ছে অনুমতি পত্র। এই  লাইসেন্স উদ্যোক্তাদের আবেদনের ভিত্তিতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রদান করা হয়। ট্রেড লাইসেন্স হচ্ছে স্থানীয় সরকার কর্তৃক প্রদান করা ব্যবসা শুরুর অনুমতি বা অনুমোদন। মোটকথা একটি ব্যবসার বৈধতার প্রতীক হচ্ছে ট্রেড লাইসেন্স।

ট্রেড লাইসেন্স কেন প্রয়োজন?
একটি বৈধ ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স অত্যাবশ্যকীয়। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ই বৈধ নয়।
স্বাধীনভাবে ব্যবসা করার জন্য ট্রেড লাইসেন্স প্রত্যেক ব্যবসায়ীর জন্য খুবই জরুরি। সর্বোচ্চ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ফুটপাতের পান বিক্রেতা, চায়ের দোকানদার, সবারই ট্রেড লাইসেন্স দরকার। যে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ছোট-বড় সব কাজেই ট্রেড লাইসেন্স এর গুরুত্ব অনেক বেশি। যেমন- কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে যদি ব্যাংক লোন নিতে চান তাহলে একটি ব্যাংক একাউন্ট দরকার হবে। ব্যাংক একাউন্ট খুলতে ট্রেড লাইসেন্স বাধ্যতামূলক। ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে বিদেশে যেতে চাইলে ট্রেড লাইসেন্স অবশ্যই দরকার। এছাড়া ব্যবসায়ী কোন চুক্তির ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স লাগে। আপনি যদি কোনো ব্যবসায়িক এসোসিয়েশনের সদস্য হতে চান, তখনও ট্রেড লাইসেন্স লাগবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি, ট্রেড লাইসেন্স হচ্ছে সিটি করপোরেশনের জন্য একটা রাজস্ব খাত।

ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম
পৃথিবীর প্রতিটি বৈধ কাজের জন্য অনুমতি প্রয়োজন হয়। এসব অনুমতি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নেয়া হয়। ব্যবসার কাজের প্রথম ধাপ হলো ট্রেড লাইসেন্স। ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম কানুন না জানার জন্য অনেকেই অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। উদ্যোক্তাদের নির্দিষ্ট আবেদনের ভিত্তিতে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, এসবের যেকোনো এক স্থান থেকে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করা হয়ে থাকে। ব্যবসার ধরনের ভিত্তিতে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করা হয়। এ ট্রেড লাইসেন্সের আবেদনের সাথে প্রত্যেক উদ্যোক্তাকে কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হয় যেমন-

(ক) সাধারন ব্যবসার ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্সের জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থান, হোল্ডিং ট্যাক্স এর রশিদ, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভারা হলে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে ভাড়ার চুক্তিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, আবেদনকারীর তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, ব্যবসা যদি যৌথ হয় তাহলে ৩০০ টাকা নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে পার্টনারশিপের অঙ্গীকারনামা জমা দিতে হবে।

(খ) ফ্যাক্টরি ট্রেড লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে

   পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র।

   প্রস্তাবিত ফ্যাক্টরির অবস্থান এবং লোকেশন ম্যাপ।

   প্রস্তাবিত ফ্যাক্টরির স্থাপনার মালিকের অনাপত্তিনামা।

   ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র।

   সিএনজি বা ধাতব পদার্থের ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র।

   ক্লিনিক বা প্রাইভেট হাসপাতালের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পত্র।

   লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে কোম্পানির মেমোরেন্ডাম।

   প্রিন্টিং প্রেস বা আবাসিক হোটেলের ক্ষেত্রে ডেপুটি কমিশনারের অনুমতি পত্র।

   রিক্রুটিং এজেন্সির ক্ষেত্রে মানব সম্পদ রপ্তানি ব্যুরো কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্স।

    অস্ত্র বা গোলাবারুদের ক্ষেত্রে অস্ত্র লাইসেন্স।

   ঔষধ বা মাদক দ্রব্যের ক্ষেত্রে ড্রাগ লাইসেন্স।

    ট্রাভেলিং এজেন্সির ক্ষেত্রে সিভিল এভিয়েশনের প্রদানের অনুমতি পত্র।

কোথায় ট্রেড লাইসেন্স করতে হয়?
উদ্যোক্তাদের আবেদনের ভিত্তিতে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করা হয়। সিটি কর্পোরেশনের করবিধি ২০০৯ এর মাধ্যমে ট্রেড লাইসেন্সের সূচনা হয়। মূলত সিটি কর্পোরেশন এটি পরিচালনা করে থাকে। এছাড়াও স্থানীয় সরকার অর্থাৎ ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা,এবং জেলা পরিষদ থেকে নির্দিষ্ট আবেদনের প্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি এর বিনিময়ে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করা হয়ে থাকে। ঢাকা শহরের জন্য ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে পাঁচটি অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে। আপনার প্রতিষ্ঠানটি যে অঞ্চলের মধ্যে সে অঞ্চলের অফিস থেকেই আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে। উদ্যোক্তাদের আবেদনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সকল ধরনের তদন্ত শেষ করে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি নিয়ে ট্রেড লাইসেন্স দেয়া হয়ে থাকে।

 


আরও পড়ুন