রান্না করে খাওয়াতে খাওয়াতে রন্ধন শিল্পী সুমাইয়া আশরাফ শিল্পী’

news paper

বাবুল হৃদয়

প্রকাশিত: ২৪-৩-২০২৩ দুপুর ৪:৫৩

33Views

সুমাইয়া আশরাফ শিল্পী। নন্দিত রন্ধন শিল্পী। ১০/১৫ বছর  রান্নার সঙ্গে জড়িত। টিভিতেও অনেকবার রান্না দেখিয়েছেন। ‘রাসনাস  কিচেন’ নামে তার একটি কুকিং পেইজ আছে। বর্তমান ব্যস্ততা রন্ধন শিল্পী হয়ে ওঠার গল্প শোনালেন দৈনিক সকালের সময়কে কথা বলেছেন বাবুল হৃদয়

নন্দিত রন্ধন শিল্পী হয়ে ওঠার গল্প শোনাতে বসে প্রথমেই বললেন, আমি পুরান ঢাকাইয়া। জমিদার পরিবারে আমার বেড়ে ওঠা। ছোটবেলা থেকে রান্নার শখ ‍ছিল। আমার মা অনেক ভাল রান্না করতো, দাদী রান্না করতো, নানুও ভাল রান্না করতো। তাদের দেখে রান্নায় আগ্রহ। আমরা রান্না করে মানুষকে খাতয়াতে ভালবাসতাম। যদি কেউ বাহবা দিত, রান্নার প্রশংসা করতো খুবই ইন্সপায়ার হতাম। বলতে পারেন মানুষকে রান্না করে খাওয়াতে খাওয়াতে রান্নায় আসা।

রান্না নিয়ে কাজ করছেন আপনার পেইজের নাম কি-
আমার একটি পেইজ আছে নাম  ‘রাসনাস কিচেন’। কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে সবাই আমাকে ‘রাসনা’ বলে ডাকতো্। শিল্পী নামটা আমার বাসায় ডাকতো, বাবা ডাকতো। আমি দুইটা নামকে একসঙ্গে করে রাসনাস করেছি। 

আমরা জানি আপনি পুরান ঢাকার মানুষ-
হ্যা, আমি পুরানা ঢাকার মানুষ। আমার দাদা জমিদার ছিলেন। আমাদের পরিবারে খাবার দাবারের বিষয়টাই ছিল অন্যবকম। আমার বাবা এবং চাচারা খাবারের প্রতি একটু অন্যরকম টান ছিল।  ভালো খাবার ছাড়া খেকে পারতো না। বাড়িতে রান্নায় নবাবী নবাবী একটা ভাব ছিল। আমার নানা বাড়িতে একই রকম অবস্খা। ভালো খাবার ছাড়া তাদেরও চলতো না। নানু ভালো রান্না করতেন, আমার দাদু ও ভাল রান্না করতেন। আমার দাদী কলকাতার নবাব পরিবাবের মেয়ে ছিলেন। খান বাহাদুরের নাতনী ছিলেন তিনি। ওনি ইন্ডিয়ান মজার মজার রান্না করতে পারতো। আমরা ছোট বেলা থেকে মজার মজার খাবার খেয়ে আসছি। এখন ভাল খেতে ভালো খাওয়াতেই  রান্নার জগতে আসা।

আপনার পড়াশুনা নিয়ে শুনি- 
 আমি পুরান ঢাকায় পড়েছি। আরমানিটোলা স্কুল দিয়ে প্রথম স্কুলে পড়া শুরু, মোহাম্মদ গালস,  এরপর বাবার একটা স্কুল আছে, সে স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এবং তার নামেই স্কুল, , আশরাফ আলী হাই স্কুল। পরে বাবার স্কুল থেকেই মেট্রিক পাশ করেছি। এটা আমার গর্ব। সর্বশেষ ঢাকা বিশ্বাবদ্যালয়ের আন্ডারে মাস্টার্স  করেছি ।

রান্নার জগতে এলেন কিভাবে-
রান্নার জগতে আসার অনুপ্রেরনা ছিল সিদ্দিকা আপা। তিনি আমার টিচার ছিলেন। ওনাকে দেখে, তার বই দেখে, কাজ দেখে, তার সঙ্গে নানা ওয়ার্কশপ করেছি, এরপর নাজমা হুদা আপার সঙ্গেও শেখা হয়েছে। এরকম একটু একটু করে শেখা, তারপর পরিবার থেকে তো শিখে্ছিই। সবার অনুপ্রেরনায় আমি রন্ধন শিল্পী।

আপনার রান্নার কখন থেকে শুরু  হয় -
 ১যুগ আগে থেকে রান্না করলেও আমি কখনো পেইজ খুলিনি। যখন করোনা এলো সমাজ সেবামুলক একটা কাজ করার আগ্রহ ছোট বেলা থেকে ছিল। কারো অসুখ হলে তাকে দেখতে যেতাম, পরিবারের কেউ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে থাকলে আমি তার ডিউটি করতাম। সবসময় মানবিক কাজে  ভালো লাগতো। সেখান থেকে এই করোনা মাঝে আমার কাছে মনে হল কিছু করা উচিত। তখন রাসনাস কিচেন এই পেইজটি খোলা। এটা খুলে আমি অনেক অনেক সাপোর্ট পেয়েছি আত্নীয়-স্বজন, বন্ধু- বান্ধব, প্রতিবেশী সবাই সাপোর্ট  করেছে। সবাই আমার খাবার খেয়েছে ভালো বলেছে। এখন আমার পেইজে অনেক ভিউয়ার্স,  আমি খুশি যে সবাই আমার খাবার খাচ্ছে,  প্রসংশা করছে।

আপনার কোন কোন খাবার  প্রসংশা কুড়াচ্ছে-
নবাবী থালী,  কাবাব থালি, চিকেন থালি খুব জনপ্রিয়। এছাড়া সাউথ ইন্ডিয়ান একটি ডিশ আছে এটাও আমার জনপ্রিয়। আর মিস্টির একটা থালি করি খুব পপুলার।  মিস্টিটার নাম ‘দুলহানিয়া লাড্ডু’ সাজিয়েছি দুলহানের মতো, খেলে দিল্লির লাড্ডুর সাধ পাবে। আরেকটি আছে আচারি গোশত যা ব্যপক জনপ্রিয়। নানা ইভেন্টে প্রথম হয়েছে। এই এগুলো করতে করতে ১যুগ হল রান্নায়। ইনশাআল্লাহ এখন ব্যপক সারা পাচ্ছি। আগামীতে আরো ব্যপক আকারে এগুলো দিয়ে মানুষের সেবা করতে চাই।

 


আরও পড়ুন