সিংগাইরে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে আরেক ব্যবসায়ীর যাবজ্জীবন

news paper

হৃদয় মাহমুদ রানা, মানিকগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৯-৩-২০২৩ বিকাল ৬:৫২

9Views

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে জমি ব্যবসা সংক্রান্ত বিরোধে খন্দকার সাইফুল ইসলাম কমল নামে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে শিমুল নামে আরেক ব্যবসায়ীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে তাকে অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেওয়া হয়েছে।
 
রবিবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সাবিনা ইয়াসমিন আসামীদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।দন্ডপ্রাপ্ত শিমুল ঢাকার জেলার ধামরাই উপজেলার ইশাননগর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে। 
 
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মথুরনাথ সরকার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার নথির বরাতে তিনি জানান, খন্দকার সাইফুল ইসলাম কমল পার্শ্ববর্তী তালেবপুর গ্রামের ফয়েজ আহম্মেদের সঙ্গে জমির ব্যবসা করতেন। সেই সুবাধে ফয়েজের ভাগিনা শিমুল তার মামার সঙ্গে জমির ব্যবসা করায় কমলের সঙ্গেও ঘনিষ্ট হয়ে যায়। ২০১৪ সালের ১৬ এপ্রিল দুপুর ২ টার দিকে কমলের বাড়ি আসেন শিমুল। পরে তারা দুজন মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। বিকাল ৫টা পর ফয়েজ ফোন করে জানায় কমল ধামরাই এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কমলের লাশ বাড়িতে আনা হয়। সেদিন রাত ১২টার দিকে কমলের লাশ দাফন করা হয়।
 
পরের দিন কমলের পরিবার খোঁজ নিয়ে জানতে পারে শিমুল ও তার মোটরসাইকেলটিও সম্পূর্ণ অক্ষত আছে। কোথায় কিভাবে কমল দুর্ঘটনা কবলিত হয় তার সঠিক তথ্য দিতে পারে না শিমুল। এমনকি ধামরাই থানায়ও দুর্ঘটনা সম্পর্কে কোনো অভিযোগ বা সংবাদ পায়নি পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ দেখা দিলে কমলের পরিবার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য আবেদন করেন। পাশাপাশি কমলের বাবা খন্দকার মো. রেজাউল ইসলাম সিঙ্গাইর থানায় ছয়জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ২৪ এপ্রিল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিলাল হোসেনের উপস্থিতিতে লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ১০ জুলাই আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন সিংগাইর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক মো. মিরান হোসেন মৃধা। উক্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিবাদী পক্ষ নারাজি দিলে পরবর্তীতে সিআইডি এই মামলার পুন:তদন্ত করে। ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিআইডির তৎকালীন উপ-পরিদর্শক কাজী আবদুল আওয়াল ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় এ রায় দেন বিচারক। বাকি ৫ জনের বিরুদ্ধে এই মামলায় সংশ্লিষ্টতা না থাকায় তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে। এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন ফরহাদ খান ও দেলোয়ার হোসেন।

আরও পড়ুন