তথ্য গোপন করে অর্থ আত্মসাতের ২৮ মামলা প্রত্যাহার
প্রকাশিত: ২৫-১-২০২৩ দুপুর ৩:৫৬
জালিয়াতি ও প্রতারনা করে স্ট্যান্ডর্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) ৩০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে থাকা ৩৭টি মামলার মধ্যে আদালতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ২৮টি মামলাই প্রত্যাহার করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। কোম্পানীর আইন উপদেষ্টা এডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন, দুর্নীতির দায়ে চাকুরীচ্যুত ম্যানেজার বেলায়েত হোসেন, কামরুল হোসেন, আতিকুর রহমানসহ কয়েকজনের একটি সিন্ডিকেট এই অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্তরা অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। আদালতকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা প্রত্যাহারের ঘটনা তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জনিয়ে গত ১ জনুয়ারি দুদক চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
জানা গেছে, ষ্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানী বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) নিয়ন্ত্রানাধীন একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। কোম্পানীর প্রায় ৩০ কোটি টাকা হরিলুট করেছে কোম্পানীর চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা। আর মোটা অংকের বেতনে নিয়োগকৃত আইন উপদেষ্টা হয়েও আসামিদের সাথে যোগসাজশে মামলা প্রত্যাহারের ভূমিকা রাখেন এডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন। রাষ্ট্রীয় অর্থ লুটপাটের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েও এখনো বহাল তবিয়তে নিজস্ব ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করছে। কোম্পানির কোষাগারে টাকা জমা না দিয়ে ও শুধুমাত্র মিথ্যা ভিত্তিহীন একটি চিঠির মাধ্যমে আদালতকে বিভ্রান্ত করে, তথ্য গোপন করে ৩৭টি অর্থ আত্মসাতের মামলার মধ্যে ২৮টি মামলা থেকে কৌশলে খালাস পেতে চান অপরাধীরা। আদালতের নির্দেশে সিআইডি তদন্ত প্রতিবেদনে বিপুল অর্থ আত্মসাতের ঘটনা প্রমানিত হয়। এসএওসিএল ম্যানেজমেন্ট এডভাইজারী কমিটির (ম্যাক) প্রেসিডেন্ট ও কোম্পানী পরিচালক মিশু মিনহাজ নিয়ম এবং ক্ষমতা বর্হিভুতভাবে উক্ত মামলাগুলো বাদী কোম্পানীর এক কর্মকর্তা বিজয় চন্দ্র রায়কে গত ২০২১ সালে এসটি মামলা নং ৬১১/১৯, ৬১২/১৯, ৬১৫/১৯ সমূহ প্রত্যাহার করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। এ নির্দেশ প্রদানের পূর্বে বোর্ডের অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক থাকলেও তা মানা হয়নি। বাদী বিজয় চন্দ্র রায় মামলা প্রত্যাহারের জন্য নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি, পাচলাইশ সাবেক ম্যানেজার (এডমিন) এসএওসিএল আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত আত্মসাতকৃত অর্থ কোম্পানীকে ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন।
মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে স্ট্যান্ডর্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানির আইন উপদেষ্টা এডভোকেট মেজবাহ উদ্দীন বলেন, মামলাগুলো যারা করেছে তারা নিজেরাই প্রত্যাহার করে নিয়েছে, তবে আদালতে তথ্য গোপন করে মামলা প্রত্যাহার করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তার চেম্বারে গিয়ে কথা বলতে অনুরোধ জানান। দুদকের অভিযোগের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দুদকের অভিযোগ নিয়ে নিউজ করার মত উপকরণ নেই বলে দাবি করেন।
অভিযোগের বিষয়ে কোম্পানির সাবেক উপ ব্যবস্থাপক (হিসাব) আতিকুর রহমান বলেন, মামলাগুলো যে কোনভাবেই হোক প্রত্যাহার হয়ে গেছে। এটা নিয়ে কোন কথা বলতে চাইনা আমরা। এবিষয়ে আইন উপদেষ্টা ভালো বলতে পারবে বলে তিনি জানান।
এবিষয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) এবং এসএওসিএল এর বোর্ড চেয়ারম্যান এ.বি. এম আজাদ জানান, কোম্পানির টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দায়েরকৃত কিছু মামলা বাদীকে লোভে ফেলে, চাপ প্রয়োগ করে এবং আদালতে তথ্য গোপন করে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে আমাদের কাছেও কিছু অভিযোগ এসেছে, অভিযোগ সত্য হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।