প্রেমের টানে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে
স্ত্রী ও শ্বাশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনের শিকার নওমুসলিম যুবক
প্রকাশিত: ১৬-১০-২০২২ বিকাল ৫:৫৭
চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর হাউজিং এস্টেইট সুন্দরী পাড়া এলাকার মোহাম্মদ শাহ জাহানের কলেজে পড়ুয়া মেয়ের সাথে দীর্ঘদিনের প্রেমের সর্ম্পক। প্রেমের টানে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করেন নাছির উদ্দীন(৩৩) নওমুসলিম। বিয়ের পর কিছুদিন সংসার জীবন সুখে শান্তিতে চলে আসলেও নওমসুলিম নাছির উদ্দীনকে তার শ্বাশুর বাড়ির লোকজন একজন মুসলিম পরিবারের মেয়ের সাথে হিন্দু পরিবারের বিয়ে করে সংসার করাটা স্বভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেনি।
অথচ নওমুসলিম নাছির উদ্দীন সংসার করার আশায় প্রেমের টানে বিয়ে করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে এবং ইসলাম শরীয়ত মোতাবেক শাহজাহানের মেয়ে তসলিমা আকতার (আঁখি) বিয়ে করেন। ১৮ মাসের সংসার জীবনে বিয়ের পর তসলিমার ৭ মাসের অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে। নওমসলিম নাছিরের দুর্বলতার সুযোগে তার শ্বশুর ঘর নির্মানের কথা বলে ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। উক্ত টাকা চাইতে গিলেও শুরু হয় নির্যাতন।
অন্যদিকে তসলিমার উপর তারা বাপের বাড়ির লোকজন চাপ সৃষ্টি এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে নওমসুলিম নাছিরের সংসার ছেড়ে দিতে বাধ্য করার পাশাপাশি নাছিরকেও বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত(মহানগর) চট্টগ্রাম মামলা সূত্রে জানায়, গত ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর চীফ মেট্ট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, চট্টগ্রাম এর মাধ্যমে হলফনামামূলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ২০২১ সালের ২৯ নভেম্বর কোর্ট ম্যারেজ-এ তসলিমা আকতারের সাথে ইসলাম শরীয়ত মোতাবেক নওমুসলিম নাছিরের বিয়ে হয়। বিয়ের পর জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করার জন্য ঢাকা গেলে ঢাকা থেকে এসে দেখতে পান নাছিরের উপর তসুলিমার পর ভাই বাপ মাসহ কয়েকজন পরিকল্পিতভাবে মারধর করতে প্রস্তুত। তারা কোন অবস্থাতে তার স্ত্রীর সাথে দেখা করতে দেবে না এবং হত্যার হুমকিও দেন।
এ ঘটনায় নওমসুলিম নাছির উদ্দীন বাদী হয়ে গত ১০ জানুয়ারী শ্বাশুর মো. শাহজাহানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। এছাড়া ৭ মাসের অন্তঃসত্ত স্ত্রীর গর্ভে থাকা শিশু জোর পূর্বক গর্ভপাত করে হত্যার অভিযোগ করে নাছির উদ্দীন বাদী হয়ে স্ত্রী তসলিমা আকতার(২২), শ্বাশুড় মো. শাহজাহান(৬৫), শ্বাশুড়ি আয়েশা বেগম(৫৫), ঘটনায় জড়িত দেলোয়ার(৪২), নিতাই নাথ(৫২), আরাফাত মজুমদার(৩২)কে আসামি প্রতারণা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গত ১০ জানুয়ারি মামলা করেন। আসামিদের সহযোগিতায় গত ৪ ডিসেম্বর নগরীর ডবলমুরিং থানাধিন পাঠানতুলীর মিডপয়েন্ট হসপিটাল এন্ড ডায়গনস্টিক সেন্টার লিঃ জোর পূর্বক অবৈধভাবে গর্ভপাত করে সন্তান হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় গত ৫ জুলাই ঘটনায় জড়িত শ্বাশুর-শ্বাশুড়ি শ্যালকসহ হাসপাতালের দায়িত্বরতের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। তসলিমা আকতার আঁকি নওমসুলিম নাছিরকে স্বেচ্ছায় প্রেমের সর্ম্পক থেকে বিয়ে করার বিষয়টি স্বীকার করেছে, পারিবারিক সিদ্ধান্তে তাকে তালাক দিলেও তার বিরুদ্ধে কোন ধরণের আইনী ব্যবস্থা নিবে না বলে দাবি করেন। অভিযোগের বিষয়ে আরাফাত মজুমদার নামের অভিযুক্ত একজনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে নাছিরকে চিনে বলে দাবি করলে পরে এ নাম্বার তার বাবা ব্যবহার করত এখন করে না বলে জানায়। অভিযোগের বিষয়ে মামলার বাদী নওমুসলিম নাছির উদ্দীন বলেন, আমি চাই আমার মত উক্ত মহিলা এবং তার পরিবারের ফাঁদে পড়ে কেউ প্রতারণার শিকার না হউক। আমি চাই আমার ৭ মাসের অন্তঃসত্তা সন্তানকে যারা অবৈধভাবে গর্ভপাত ঘটিয়ে হত্যা করেছে তাদের বিচার হউক, আমি জড়িতদের শাস্তির দাবি করছি।