শাহজাদপুরের জমিদার রুধেষ বাবু নেই, আছে জমিদারী স্মৃতি চিহ্ন
প্রকাশিত: ২৩-৯-২০২২ দুপুর ৩:৪৯
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের এক সময়কার প্রতাপশালী জমিদার রুধেষ বাবু নেই, কিন্তু কালের সাক্ষি হয়ে আছে তার জমিদারীর নানা স্মৃতি চিহ্ন। উপমহাদেশের শাসনামলে যে কয়েকজন জমিদার শাহজাদপুরের ইতিহাস দখল করে আছে তার মধ্যে রুধেষ বাবু অন্যতম। শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের বড়াল নদীর তীরে এই জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন তৎকালীণ সময়ের অত্যাচারী জমিদার রুধেষ বাবু। প্রায় ১০ একর জায়গা নিয়ে তিনি এই জমিদার বাড়িটি নির্মাণ করেন। বাড়িটির অবস্থান বড়াল নদীর তীরে হওয়ায় অথ্যাচারী জমিদার রুধেষ বাবুকে কুমিরের অথ্যাচার সহ্য করতে হতো। এক পর্যায়ে কুমিরের অত্যাচার এত বেশি হয় যে কুমিরের ভয়ে জমিদার বাড়ীর চারপাশে ১০ ফুট উচু করে দেয়াল তৈরি করা হয়েছিল। যে দেয়ালের চিহ্ন এখনও বাড়ীর দক্ষিন পূর্বাংশে বিদ্যমান। সে সময়ে জমিদার রুধেষ বাবু বর্জ্রা নৌকায় বড়াল নদী হয়ে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতেন। বড়াল নদীর কোল ঘেষে বাড়ীর দক্ষিণ পার্শ্বে বড় বড় সিঁড়ি তৈরী করা হয়েছিল যা এখনও লক্ষ করা গেছে। জমিদার রুধেষ বাবু ছিলেন একজন অত্যাচারী জমিদার। তাঁর সামনে প্রজা সাধারণ কথা বলতে হিম্মত পেতনা। ঠুনকো অপরাধে প্রজাসাধারণদের নানা রকম শাস্তি প্রদান করতো যা এখনো এই এলাকার লোকমুখে প্রচারিত আছে। ১৯৫৭ সালের জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির মধ্য দিয়েই এই রুধেষ বাবুর জমিদারীরও সমাপ্তি ঘটে। আর তখনই জমিদার রুধেষ বাবু তার বংশধরদের নিয়ে বিলাসবহুল জমিদার বাড়ী ফেলে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চলে যান। রাউতারা বড়াল নদীর তীরে এখানে এখনো একটি পাঁচতলা বিশিষ্ট বাসভবন রয়েছে। যাতে প্রায় ২৫ টিরও বেশি কক্ষ রয়েছে। এছাড়াও রুধেষ বাবুর স্মৃতি বিজড়িত ভবনে রয়েছে জলসা ঘর, কাছারি ঘর, সুড়ঙ্গপথ ও নদীর তীরে গোসল করতে যাওয়ার জন্য একটি সুন্দর নকশার সিঁড়ি। প্রজা সাধারণের অত্যাচার নির্যাতনের সাক্ষি হয়ে আজও জমিদার বাড়ীর ধ্বংসাবশেষ দাড়িয়ে আছে। দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন ও অবহেলার কারণে রুধেষ বাবুর জমিদার বাড়িটির প্রায় প্রত্যেকটি স্থাপনাই এখন ধ্বংসের মুখে। সবগুলো স্থাপনাতেই এখন গাছগাছালি ও লতাপাতায় জরাজীর্ণ হয়ে ইতিহাসের সাক্ষি হচ্ছে। বর্তমানে স্থানীয়রা এই জমিদার বাড়িটি কে গরু ছাগলের আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহার করছে। এটিকে প্রত্ন তাত্ত্বিক অধিদপ্তরের আওতায় এনে রক্ষনা বেক্ষনের ব্যবস্থা এখন সময়ে দাবী।