সাভারে নারী কাউন্সিলরের নেতৃত্বে ব্যবসায়ী বাবা ও ছে‌লে‌কে হত্যা চেষ্টা

news paper

ইমাম হোসেন ও আহমেদ জীবন

প্রকাশিত: ৬-৮-২০২২ রাত ১১:২১

11Views

ঢাকার সাভারে পূর্ব শত্রুতার জের ধ‌রে এক ব্যবসায়ী এবং তার ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে সাভার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সানজিদা শারমিন মুক্তা ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। আহত ওই ব্যবসায়ীর নাম নুরুজ্জামান এবং তার ছেলের নাম ইসমাইল হোসাইন রবিন। নুরুজ্জামান সাভার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সোবাহানবাগ এলাকার মৃত দিল মোহাম্মদ মিয়ার ছেলে এবং সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকার রবিন আর্ট ও একতা সাইন এন্ড প্রিন্টিং প্রেসের মালিক।

আহত দুজন বর্তমানে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য  কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ।এঘটনায় আহত নুরুজ্জামানের ছোটছেলে সাইদুর রহমান সাব্বির নারী কাউন্সিলর সানজিদা শারমিন মুক্তাসহ ৫ জনকে আসামী করে সাভার মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।বিষয়টি দৈনিক সকালের সময়কে নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক ও অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জিকু ।

এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন, মৃত মজনু মোল্লার ছেলে সাদ্দাম হোসেন (৩৪), রিদ্দাম হো‌সেন (২৮), হিদ্দাম হোসেন (২৩), নারী কাউন্সিললের কেয়ারটেকার সোনা মিয়া (৩৫) এবং মৃত শামসুদ্দিন মোল্লার মেয়ে ও সাভার পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সানজিদা শারমিন মুক্তা (৩৮)। তারা সবাই সাভারের জালেশ্বর সোবাহানবাগ এলাকার বাসিন্দা।এ ব্যপারে অভিযোগের বাদী সাইদুর রহমান সাব্বির জানান, আজ শনিবার  (৬ আগস্ট) সকাল আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে আমার বড়ভাই রবিন ছায়াবীথি মহল্লার মৃত মজনু কমিশনারের বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় গেলে আগে থেকে সেখানে উপস্থিত  অভিযুক্তরা কিছু বুঝে উঠার পূর্বেই আমার ভাইকে উপর্যুপরি মারধর করে কাউন্সিলর সানজিদা শারমিন মুক্তার বাসায় ধরে নিয়ে যায়। 

 এসময় কাউন্সিলর মুক্তা আমার ভাইয়ের মোবাইল থে‌কে ভাই‌কে দি‌য়ে আমার বাবাকে ফোন করে ঘটনাস্থলে ডেকে নিয়ে যায়। পরে আমার বাবা নুরুজ্জামান আমার ভাইকে উদ্ধারের উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলে গেলে তারা বাবার সামনেই আমার ভাইকে লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটাতে থাকে তখন আমার বাবা তাদের হাত থেকে ভাইকে বাঁচাতে গেলে প্রথমে কাউন্সিলর মুক্তা ঘুষি মারে আমার বাবা‌কে পরে তার ভাতিজা রিদ্দাম হোসেনসহ তার সহযোগীরা হাতে থাকা লাঠি দিয়ে আমার বাবার মাথায় আঘাত করে এতে আমার বাবা মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত জখম হয়। পরে স্থানীয়রা আমার বাবা এবং ভাইকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

অভিযুক্ত কাউন্সিলর সানজিদা শারমিন মুক্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে মুঠোফোনে বলেন, ফোনে এত কথা বলতে বলতে টায়ার্ড হয়ে গেছি' বাসায় আইসেন সবকিছু বলমুনি আর সিসিটিভির ফুটেজ দেখায় দিমুনি। ব্যবসায়ী নুরুজ্জামানের ছেলে রবিনকে চোর আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন ওর বাবাকে ফোন দিয়ে কইছি ছেলেকে ধরা হয়েছে বিচার করে নিয়ে যান" ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান ও তার ছেলে রবিন মাদক অ্যাডিক্টেড বিধায় কার বিচার কে করে" এরপর দুইজনকে ধাক্কাধাক্কি করে বের করে দিতে ধরছি উল্টা তারাই আমার রুমের ভিতরে  ঢুকতাছে। সিসিটিভির ফুটেছে এইটাই দেখাইতাছে "ঠিক আছে; ফুটেজটা দেখলেই আপনি ক্লিয়ার হইবেন । তারা দুজনেই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছে আমি তো তাদের বাইর কইরা দিবার লইছি। হত্যার উদ্দেশ্যে আপনি নিজেই ব্যবসায়ী নুরুজ্জামানকে ঘুসি দিয়েছেন কিনা? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন আরে আমার এত্তডি ভাতিজা, আমারে লাগে নাকি.? মারছে আমার এক ভাইস্তা বলে তিনি ফোন কলটি কেটে দেন ।

আহত ব্যবসায়ী নুরুজ্জামানের স্ত্রী কল্পনা আক্তার দৈনিক সকালের সময়কে জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমার বড় ছেলে রবিনকে কাউন্সিলর সানজিদা শারমিন মুক্তার ভাইস্তা মারধর করে তাদের অফিসে নিয়ে যায়। এরপর ছেলের মোবাইল থেকেই আমার স্বামীর মোবাইলে ফোন করে উল্টো বিচার দাবি করে কাউন্সিলর সানজিদা শারমিন মুক্তা । সেখানে যাওয়া মাত্রই মুক্তার নেতৃত্বে তার সহযোগীরা বাপ ছেলে দুজনকেই রুমে আটকে রেখে হত্যার উদ্দেশ্যে  বেধড়ক পিটিয়ে মাথা ফাটিয়েছে । এতে আমার ছেলের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে এবং স্বামীর মাথা ফেটে গেছে, মাথায় পাঁচটি সেলাই দিতে হয়েছে। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি ।

এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) জাহিদুল ইসলাম জিকু জানান, ব্যবসায়ী বাবা ও ছেলেকে মারধরের ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।


আরও পড়ুন