পড়ালেখার পাশাপাশি অনলাইনে কাপড় বিক্রি করে স্বাবলম্বী আপন দুই বোন

news paper

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৭-৭-২০২২ দুপুর ১২:২২

152Views

চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় এক নিভৃত গ্রামে হেসে-খেলে বেড়ে ওঠা তরুণী মেহেভিন আফরিন ও আয়শা সিদ্দিকা। এ দুই তরুণীর স্বপ্ন ছিল অনলাইনে কাজ করে একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হয়ে উঠা। কিন্তু সমাজের বিচিত্র চোখে তাকানো নিয়ে বাধাগ্রস্ত হলেও থেমে থাকেনি এই দুই তরুণী। সব সময় চেষ্টা করেছেন ভিন্ন কিছু করার। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পেইজ খুলে শুরু করেছেন অনলাইনে প্রোডাক্ট ক্রয়-বিক্রয়।

এক বছর ধরে অনলাইনে কাজ করে তারা এখন অল্প টাকা আয় করে স্বপ্ন দেখেন অনলাইন সুপার মার্কেট প্রতিষ্ঠা করার। যেখান থেকে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় অনলাইনে অর্ডার নিয়ে পণ্য পৌঁছিয়ে দিবেন ক্রেতাদের হাতে। পাশাপাশি তাদের পড়ালেখা অবসর সময়কে কাজে লাগাতে নেমে পড়েন কাপড় ডিজাইনিংয়ে। ডিজাইন শেষে সেগুলো নিজের হাতে সেলাই করেন। কেননা কৈশোরে মায়ের সাথে কাপড় সেলাইয়ের অভিজ্ঞতা আছে তাদের দুই বোনের। আর সেই অভিজ্ঞতা এবার বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগান তারা।

সেই অভিজ্ঞতা থেকেই শুরু কর স্বপ্ন দেখার। যদিও অনেক বাধা টপকে সামনে এগোতে হচ্ছে তাকে। নিজেদের ফেসবুক পেজ "গার্লস চয়েস" এবং গ্রুপ 'চিটাগাং অনলাইন শপিং'র মাধ্যমে নিজেদের করা নকশার শাড়ি আর সেলাই করা থ্রি পিস, শিশুদের বিভিন্ন ধরনের জামা-কাপড় বিক্রি করছেন তারা।

স্বপ্নবাজ উদ্যোক্তা মেহেভিন আফরিন বলেন, মেয়ে বলে নিজের মনোবল দুর্বল রাখলে চলবে না। সবারই আত্মনির্ভরশীল হওয়া দরকার। তাহলে দেশও পরির্বতন হবে। অনলাইনকে কাজে লাগিয়ে যেকোনো মেয়ে এখন ঘরে বসে ব্যবসা করে আত্মনির্ভরশীল হতে পারেন। সেসব ভাবনা থেকেই বাড়ির কাজ শেষে বসে বসে কাপড় ডিজাইন করা শুরু করি।

তিনি বলেন, তারপর ডিজাইন করা কাপড় নিজেই সেলাই করে ছবি তুলে ফেসবুক পেজ আর গ্রুপে পোস্ট করি। সেই পোস্ট থেকে ব্যাপক মানুষের সাড়া পাই। বেশি সাড়া পেলে খুবই খুশি খুশি লাগে।

পুঁজি সম্পর্কে মেহেভিন আফরিন বলেন, ‘শুরুতে আমার তেমন পুঁজি ছিল না। প্রথমদিকে মাঝে মাঝে যখন ক্ষতি হতো; তখন খুব ভেঙে পড়তাম। তারপর আবার দৃঢ় মনোবল নিয়ে কাজ করেছি। আমার নিজের প্রিন্ট করা শাড়ি অনেক সাড়া ফেলে। তারপর একে একে ব্যবসা বাড়তে থাকে। শুধু নিজের তৈরি পোশাক নয়। আমার পেজে মেয়েদের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিস যেমন- কাচের চুড়ি, গহনা ও রূপচর্চা সামগ্রী বিক্রি শুরু করি। এছাড়াও নানান আইটেমের নাস্তা বানিয়েও অনলাইনে বিক্রি করি।

এ কাজে আয় সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতি মাসে আমার ভালো আয় হয়। পরিবার আমার কাজে সব সময় সহযোগিতা করেছে। নিজের অনলাইন ব্যবসা আরও বড় করার ইচ্ছে আছে। ইচ্ছে আছে একটি অনলাইন শপিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা। এ ছাড়া আমার কাজের পাশাপাশি কর্মহীন মানুষের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করতে চাই।


আরও পড়ুন