প্রশ্ন উঠেছে কুতুবদিয়া হাসপাতালের সী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে
প্রকাশিত: ২৫-৭-২০২২ দুপুর ১২:২২
পানিতে নয়, ডাঙায় পড়ে আছে কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া সরকারি হাসপাতালের জন্য বরাদ্দ দেয়া মূল্যবান সী এম্বুলেন্স। মুমূ্র্ষু রোগীদের যাতায়াত সুবিধার জন্য কুতুবদিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল একটি সী এম্বুলেন্স। যা বর্তমানে পেয়েও না পাওয়া অবস্থায়। প্রতিদিন বড়ঘোপ ঘাট দিয়ে যাতায়াত করা পথচারী মানুষ এটি দেখছেন লবণ মাঠে পড়ে থাকতে। প্রায় সময় একই অবস্থায় দেখে নানা প্রশ্ন করছেন। কেউ বলছেন এটা দেখানোর জন্য আনা হয়েছে। কেউ বলছেন এটা হাসপাতালের কর্মকর্তাদের পারাপারের জন্য। কেউবা বলছেন এটা নেতাদের জন্য ইত্যাদি ইত্যাদি। কথার যেন বলার শেষ নেই।
সচেতন মহল জানান, যেহেতু ঘাট পার হয়ে মগনামা থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছাতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়। যানজটে পড়ে প্রায় সময় রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব হয় না। সেদিক বিবেচনায় নদী পথে কম সময়ে চট্টগ্রাম পৌছানো সম্ভব। যে কারণে একটি সী এম্বুলেন্স এর দাবী উঠেছিল।
জানা যায়, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে চলতি বছরের মার্চ মাসে সী এম্বুলেন্সটি কুতুবদিয়া সরকারি হাসপাতালে হস্তান্তর করার জন্য আনা হয়। এতেই মহা খুশি দ্বীপের আপামরজনসাধারণ। কুতুবদিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়েছে এই সুখে।
মার্চের ২ তারিখ বিভিন্ন মিডিয়ায় ফলাও করে সংবাদ প্রচার করা হয়। স্থানীয় সাংসদসহ নেতৃবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয় কয়েক মাস ধরে। কিন্তু দীর্ঘ চার মাস ধরে সী এম্বুলেন্সটি ডাঙায় পড়ে থাকতে দেখে এবার সচেতন মহল প্রশ্ন তুলেছে এটির ব্যবহার নিয়ে।কক্সবাজারস্থ কুতুবদিয়া নাগরিক পরিষদ ও কুতুবদিয়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শাহাদত হোছাইন জানান, আন্তর্জাতিক এনজিও সংস্থা আইএমও এর কাছ থেকে কুতুবদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য বরাদ্দ পাওয়া "সী- এম্বুলেন্স" নিয়ে কুতুবদিয়ার লক্ষাধিক মানুষের আনন্দের সীমা ছিল না। তবে এ আশা যেন নিরাশায় পরিণত হয়েছে। এ যাবৎকাল কোন রোগী এটির সেবা পেয়েছে কি না এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে কয়েকজন ভিআইপি এটি ব্যবহার করেন বলে জানা গেছে। উপজেলা প্রশাসনের কাছে দাবী রাখবো, এটি যেন রোগীর সেবায় ব্যবহৃত হয়।
উপকূল বাঁচাও আন্দোলন ও কক্সবাজার যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি সাংবাদিক হুমায়ুন সিকদার বলেন,কুতুবদিয়ায় সী এম্বুলেন্সটি মুমূর্ষু রোগী পারাপার করার জন্য নাকি ঘাটে নোঙর দিয়ে রাখার জন্য? এ এম্বুলেন্সটি শুধু মাত্র রোগীদের মানবিক কাজে ব্যবহার করা হোক। কুতুবদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তারা নাকি এম্বুলেন্সটি মুমূর্ষু রোগী পারাপারের পরিবর্তে নিজেরা ব্যবহার করে থাকেন এমন অভিযোগও রয়েছে! এরকম বিলাসীতায় যাতে ব্যবহার না হয় তা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নজরদারি প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে কুতুবদিয়া উপজেলা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস,কে, লিটন কুতুবী বলেন, রোগীর সেবার কাজে আসছে না সী এম্বুলেন্স। মডেল হিসেবে রাখা হয়েছে। যথা সময়ে রোগীর সেবায় নিয়োজিত থাকলে আজ এসব কথাগুলো উঠে আসতো না।উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ শাহীন আবদুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে বরাদ্দকৃত সী এম্বুলেন্সটি দাতা সংস্থা আইওএম এখনো পর্যন্ত সিভিল সার্জন কিংবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করেনি। যে কারণে ডাঙায় পড়ে থাকা সী এম্বুলেন্সটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। সূত্রে জানা যায়, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ক্রয় শর্ত ভঙ করায় সী এম্বুলেন্সটি গ্রহণ করেনি দাতা সংস্থা আইওএম। যে কারণে সী এম্বুলেন্সটি হস্তান্তর করা হয়নি এখনো ।
এ বিষয়ে জানতে দাতা সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।