মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসছে নতুন মুদ্রানীতি

news paper

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩-৬-২০২২ সকাল ৯:২৩

78Views

চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দফায় দফায় বাড়ছে ডলারের দাম। আমদানি ও স্থানীয় পণ্যের ওপরেও পড়ছে এর প্রভাব। ইতোমধ্যে গ্যাসের দামও এক দফা বেড়েছে। ফলে দেশে এখন মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

দুই বছর পর আগামী ৩০ জুন সরাসরি নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন গভর্নর ফজলে কবির। গভর্নর হিসেবে ফজলে কবিরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৩ জুলাই। ফলে এটি বর্তমান গভর্নরের শেষ মুদ্রানীতি ঘোষণা। আগামী ৪ জুলাই নতুন গভর্নর যোগ কথা থাকলেও দাপ্তরিক প্রয়োজনে তিনি ১২ জুলাই যোগ দেবেন। মাঝের এই সময়টুকু গভর্নরের রুটিন কাজগুলো করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতি প্রণয়নে জড়িত কর্মকর্তারা জানান, নতুন মুদ্রানীতিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি। নতুন অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতিকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশের ঘরে বেঁধে রাখার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। চলতি বছরের মে মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি গিয়ে ঠেকেছে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশে। যা গত ৮ বছরের মধ্যে রেকর্ড। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী গত ৮ বছরের মধ্যে দেশে এটাই সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির রেকর্ড।

আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের ঘাটতি পূরণে ব্যাংক ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করছে সরকার। এই অংক চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৯ হাজার ৮৮২ কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা আছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৪ জুন পর্যন্ত ব্যাংক থেকে সরকার নিট ৪১ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে। গত মে পর্যন্ত যা ছিল ৩২ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা। এর মানে শেষ সময়ে এসে ঋণ দ্রুত হারে বাড়ছে।

চলতি জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। গত এপ্রিল পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ১২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সরকারি-বেসরকারি মিলে জুন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ১৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ, এপ্রিল পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ১৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে থাকে। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। প্রতি ছয় মাসের আগাম মুদ্রানীতি ঘোষণা করলেও গত দুই অর্থবছর তা এক বছরের জন্য করা হয়। করোনার কারণে গত দুই বছর শুধু ওয়েবসাইটে মুদ্রানীতি প্রকাশ করা হয়েছে।


আরও পড়ুন