কারা পাচ্ছেন যুবলীগের পদ-পদবী
প্রকাশিত: ২৫-৫-২০২২ দুপুর ২:৬
চট্টগ্রামে যুবলীগের সন্মেলনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ চলছে। নগরীর বিভিন্ন সড়কের দুপাশ ছেয়ে গেছে ছবি সম্বলিত বিভিন্ন ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন ও তোরণে। বিশেষ করে ইঞ্জিনিয়ার ইনিস্টিটিউট এর আশপাশে ব্যানার, ফেস্টুনের ছড়াছড়ি। দলের হাই কামান্ডের নজরে আসতে চলছে ব্যাপক প্রচার- প্রচারণাও। যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করে সম্মেলনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়ার পর এই উৎসব বিরাজ করছে। তবে এবারের কমিটিতে ত্যাগী তৃণমূলের কর্মীরা স্থান পাচ্ছে কিনা তা নিয়েও অনেকে শঙ্কায় রয়েছেন। কারা পাচ্ছেন পদ পদবী তা নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই। আগামী ২৮ মে শনিবার দক্ষিণ জেলা, ২৯ মে রোববার উত্তর জেলা ও ৩০ মে সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সম্মেলনের দিন ধার্য করেছে কেন্দ্রীয় যুবলীগ। প্রায় নয় বছর পর দলের হাইকমান্ডের এমন খবরে যুবলীগ কর্মীদের মাঝে আনন্দের সীমা নেই। অপরদিকে কমিটি থেকে বাদ পড়ার চিন্তার ছাপ শিক্ষা সনদ নেই এমন ত্যাগীদের মাঝে।
সন্মেলনের খবরে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থীরা এখন আর কেউই বসে নেই। এই দুই পদের ত্রিমুখী নেতৃত্ব প্রত্যাশীরা এখন কেন্দ্রীয় যুবলীগ চেয়ারম্যান এবং সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি নিজস্ব গ্রুপের মধ্যে মন্ত্রী-এমপি এবং নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের কাছে জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকে।
নগর যুবলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে দলীয় নানা কর্মসূচির পাশাপাশি সামাজিক কাজে সক্রিয় রয়েছেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য ও নগর ছাত্রলীগের স্টিয়ারিং কমিটির সাবেক সদস্য দেবাশীষ পাল দেবু, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম.আর. আজিম, ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, চট্টগ্রাম আইন কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস ও সাবেক ছাত্রলীহ নেতা সুমন দেবনাথ, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য সুরঞ্জিত বড়ুয়া লাভু, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এস.এম আলম, নুরুল আনোয়ার, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসের সাজসজ্জা উপকমিটির সদস্য ফসিউল আলম রিয়াদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক হাবিবুর রহমান তারেক, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত, মো. ইলিয়াছ কুতুবী, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজম রনি, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক গোলাম ছামদানী জনি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি সুজন, কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুমন চৌধুরী, সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভি.পি রাজীব হাসান রাজন, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু মোহাম্মদ মহিউদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন।
কেন্দ্রীয় যুবলীগ সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নগর যুবলীগ সভাপতি পদের জন্য ৩৫ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী ৭২ জনের আবেদন জমা পড়েছে। তবে বর্তমানে নগর যুবলীগ আহ্ববায়ক কমিটির ৫জন এবং যুগ্ম আহ্বায়রকদের মধ্যে দিদারুল আলম দিদার ও মাহবুবুল হক সুমন ছাড়া অন্য তিনজন আর যুবলীগ করতে আগ্রহী নন বিধায় তারা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হওয়ার জন্য জীবনবৃত্তান্ত পাঠাননি। উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি পদে ৯ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১২ জন জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। দক্ষিণ জেলার সভাপতি পদে ১৩ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৩৯ জন জীবনবৃত্তান্ত জমা দেন।
নগর যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, নগরে ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডের মধ্যে কমিটি আছে উত্তর পতেঙ্গা, পতেঙ্গা, শুলকবহর ও পাঠানটুলি ওয়ার্ডে। সাংগঠনিক ১৬ থানায় কোনো কমিটি হয়নি। সংগঠনের নীতিনির্ধারক চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা কমিটির বিষয়ে তৎপর না হওয়ার কারণে দীর্ঘ সময় ধরে পুরোনো আহ্বায়ক কমিটি দিয়েই যুবলীগের কার্যক্রম চলছিল। আহ্বায়ক কমিটি ছাড়াও সাবেক কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা পদ-পদবী ছাড়াই নগর যুবলীগের ব্যানারে কেন্দ্রঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। আবার জীবনবৃত্তান্তে শিক্ষা সনদের দিক দিয়ে টেনশনে রয়েছেন অনেকে।
সম্মেলন প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেন, সাংগঠনিক প্রস্তুতি আমাদের আছে। পদ পদবীর ক্ষেত্রে শিক্ষা সনদের মূল্যায়ন হতে পারে। সদস্যদের ক্ষেত্রে তেমন নাও হতে পারে।
চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের কমিটির বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মঈনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, সারাদেশে যুবলীগকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে আমাদের চেয়ারম্যান মহোদয়। যুবলীগকে একটি মানবিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের দিয়ে প্রতিটি কমিটি সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসবে বলে তিনি জানান।
চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বে থাকা যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ নাঈম বলেন, দলের জন্য ত্যাগী ও পরিশ্রমীদের শুধুমাত্র মূল্যায়ন করা হবে। কোনো ভাইয়ের দাপটে বা চোরা পথে কেউ কোন পদে আসতে পারবে না, দলীয় পদ ব্যবহার করে নিজেদের আখের গোছানোরাতো নয়ই।