বাংলাদেশ কখনই শ্রীলংকা হতে পারে না : জাহিদ ফারুক

news paper

নিজস্ব সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১৪-৫-২০২২ রাত ৮:৩৯

51Views

পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে এসে পৌঁছেছে। অথচ এই বাংলাদেশকে এক সময় বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২০৩০ সালের ভেতরে আমরা উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উপনীত হবে। আর ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধশালী দেশের কাতারে আমরা দাঁড়াব।  যারা বাংলাদেশকে শ্রীলংকার সাথে তুলনা করছে, তারা মনগড়া কথা বলছে। আজ বরিশাল নগরীর বান্দরোডস্থ শিল্পকলা একাডেমির অডিটরিয়ামে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের আয়োজনে অনুষ্ঠিত কমিউনিটি পুলিশিং সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
 
জাহিদ ফারুক বলেন, বাংলাদেশ কখনই ই শ্রীলংকা হতে পারে না। বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কা এক নয়। শ্রীলঙ্কার বর্তমান ফরেন রিজার্ভ হলো দুই বিলিয়ন ডলার আর বাংলাদেশের ৪২ বিলিয়ন ডলার। কোথায় ২ আর কোথায় ৪২। শ্রীলংকা সমুদ্রের তীরের একটি দেশ, তাদের অধিকাংশ আয় পর্যটন থেকে। করোনাকালে সবকিছু মুখথুবড়ে পড়ার পর তার পর্যটনকে আকর্ষণীয় করে তুলতে প্রচুর লোন নিয়ে তা পরিশোধ করতে পারছে না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে শ্রীলংকাকেও লোন দিয়েছি। আমরা  প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এই পর্যায়ে চলে গেছি।
 
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রীলংকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে মাত্র ২ বিলিয়ন ডলার ছিল, যার জন্য তাদের অর্থনীতি মুখথুবড়ে পরেছে। তবে আমাদের বিশ্বাস, তারাও ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু যে নিন্দুকেরা মিথ্যা কথা বলে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে, তারা ভুল ধারণা দিচ্ছে। শ্রীলঙ্কা বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করতে পারে না, আমরাদের গার্মেন্টস, আইটি, মানবসম্পদ থেকে আয় করছি। আর আমাদের দেশে হওয়া মেগা প্রকল্পগুলো প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করবে।
 
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, আঠারো শতাব্দীতে কমিউনিটি পুলিশিং শুরু হয়েছিল ইংল্যান্ডে। পরবর্তীকালে বিভিন্ন দেশও এটা শুরু করেছিল এবং বাংলাদেশে ২০১৭ সাল থেকে কমিউনিটি পুলিশিং ডে উদযাপন হয়ে আসছে। যারা সন্ত্রাস দমনসহ আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত থাকেন তাদের সাথে সাধারণ মানুষের মাঝে একটা বন্ধন সৃষ্টি করেছে কমিউনিটি পুলিশিং। পুলিশের সদস্যদের যে কাজে নিয়োজিত করা হয়েছে, সেই কাজটি সত্যিকারার্থে বাস্তবায়ন করতে হলে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সদস্যদের সহযোগিতা অবশ্যই প্রয়োজন। একটি কমিউনিটির লোকজন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে একত্রিত হয়ে ওই এলাকার সন্ত্রাস দমন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারে। প্রত্যেক কাজের পেছনে একটা দর্শন কাজ করে। এদিক থেকে হিসাব করলে দর্শন ছাড়া কোনো কাজের সফলতা অর্জন করা যায় না। আধুনিক পুলিশি ব্যবস্থার কমিউনিটি পুলিশিংও একটি দর্শন। পুলিশই জনতা জনতাই পুলিশ- এই দর্শনকে সামনে রেখে কমিউনিটি পুলিশ কাজ করে চলেছে। 
 
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের কোন বিভাগ বা জেলায় কমিউনিটি পুলিশিং কতটা ভালো করছে তার কম্পিটিশন থাকা উচিত তাহলে এটার মান আরো উন্নয়ন হবে। কমিউনিটি পুলিশিং এ সদস্যদের এমনভাবে নেয়া উচিত যেখানে কোন রাজনীতি, স্বার্থ কাজ করা উচিত না। যারা পরিষ্কার চিন্তার মানুষ, যাদের এলাকার একটা ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত, এলাকার মানুষ পছন্দ তাদের এখানে আনা উচিত। তাহলে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থায় বরিশালে আমরা যে পর্যায়ে গিয়েছি, তার থেকে আরো ভালো করতে পারবো। এতে পুলিশের কাজের মাত্রাও কমে আসবে। বরিশালে আমরা সন্ত্রাস, মাদক থেকে দূরে থাকতে পারবো। কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমের মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে সমাজের মানুষকে নিরাপত্তা, আইনি সহায়তা ও সেবা দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে বিশেষ অবদান রাখা যাবে বলে আমরা মনে করি।
 
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশকে সমৃদ্ধশালী দেশে নিতে হলে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার যে সপ্ন দেখেছেন, যা বাস্তবায়নে তার কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন। সেই সপ্ন বাস্তবায়নে আপনাদের দায়িত্ব অপরীসিম। আপনাদের এলাকার আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে আরো সুন্দরভাবে কাজ করুন। যাতে করে এলাকাবাসী শান্তিতে বসবাস করে, এলাকার উন্নয়ন হয়। নারীদের ওপর নিপীরণ বন্ধে, শিশুবান্ধব পরিবেশ গড়তে, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গড়তে কমিউনিটি পুলিশিং এর সদস্যদের ভূমিকা রাখতে হবে। আর আপনারা যদি আপনাদের ভূমিকা সঠিকভাবে রাখতে পারেন তাহলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্যবস্তুতে পৌছাতে আমাদের ২০৪১ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না।
 
সভায় সভাপতিত্ব করেন বরিশাল সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ। অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা চিলেন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খা, বিপিএম-বার। প্রধান আলোচক ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক  মানিক।

আরও পড়ুন