তানোরে বদলে গেছে রাস্তা-ঘাট, জনমনে স্বস্তি

news paper

সোহানুল হক পারভেজ, তানোর

প্রকাশিত: ১৪-৪-২০২২ বিকাল ৫:৪৪

97Views

বদলে গেছে রাজশাহীর তানোরে রাস্তা ঘাটের চিত্র। মুল রাস্তাসহ গ্রামীন মেঠোপথ গুলো চকচকে জকঝকে করছে। রাস্তায় আর কোন দুর্ভোগ বলতে কিছুই নেই। বিভিন্ন যানবাহন চলছে ফুরফুরে ইমেজে। ভাড়াও মারছে সবাই জোরতাল ভাবে। জনসাধারণের জীবনমানও বেড়েছে। এতে করে স্বস্তি বিরাজ করছে উপজেলাবাসির মধ্যে। সেই সাথে বদলে গেছে গ্রামীণ মানুষের জীবন যাত্রা। মূল রাস্তা গ্রামীন রাস্তা সব সড়কেই চলছে উন্নয়ন। বিশ্ব অর্থনীতি অবস্থা যখন বিপর্যয় তখন উন্নয়নের মহারথী বইছে তানোর উপজেলায়।
 
জানা গেছে, বিগত এক বছর আগেই রাস্তা নিয়ে ছিল চরম দুর্ভোগ। কোন রাস্তায় স্বস্তিতে চলাচল করা যেত না। যত্রতত্র বিকল হয়ে পড়ে থাকত ছোট বড় যানবাহন। কিন্তু এক বছরের মধ্যে বদলে গেছে সকল রাস্তার চিত্র। তানোর-আমনুরা রাস্তার কথা মনে হলে আতঁকে উঠতেন অটো, চার্জার ভ্যান ও সিএনজি গাড়ির চালকরা। তারা কোন ভাবেই যেতে চায় তো না। চকচকে কার্পেটিং রাস্তা পেয়ে ভুলেই গেছেন তারা দূর্ভোগের সেই চিত্র। কারণ এখন অল্প সময়ের ব্যবধানে দ্বিগুণ ভাড়া মারতে পারছেন।
 
চরম দুর্ভোগ ছিল আরেক মূল রাস্তা তানোর-চৌবাড়িয়া ও তালন্দ থেকে বিল্লি এবং হাতিশাইল মোড় থেকে কামারগাঁ কচুয়া বাজার, আইড়া মোড় থেকে বাধাঁইড় ও নারায়নপুর হয়ে বিল্লি। অপরদিকে, সরনজাই বাজার দিয়ে সরকারপাড়া, শুকদেবপুর হয়ে মোহর দিয়ে দেবিপুর, লালপুর, বিলশহর দিয়ে নারায়ণপুর ছাড়াও ইলামদহী হয়ে দুবইল মোড় দিয়ে প্রকাশ নগর। এছাড়াও রাজশাহী শহরে যোগাযোগের একমাত্র হাড়দহ বিলের রাস্তাও ছিল ঝুকিপূর্ণ। মুলত তো থানা মোড় টু আমনুরা এবং থানা মোড় টু চৌবাড়িয়া ও থানা মোড় টু চান্দুড়িয়া রাস্তা গুলো কেই মুল রাস্তা হিসেবে ধরা হয়।
 
এক বছর আগেই এসব রাস্তা এতই ঝুকিপূর্ণ হয়ে ছিল যা একেক টা মরণ ফাঁদ। রাস্তায় ছিল ভয়াবহ গর্ত। বৃষ্টি হলেই গর্তে পানি জমে সব কিছুই সমান মনে করে চলাচল করতে গিয়ে শতশত গাড়ি বিকল হয়েছে। খানাখন্দ খোয়া পিচ উঠে মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছিল।  বিশেষ করে তানোর টু মুন্ডুমালা রাস্তা তো উপজেলাবাসীর গলার কাটায় রুপ নিয়েছিল। বাইকে আট দশ মিনিটের রাস্তায় সময় লাগত ঘন্টা প্রায়। মুন্ডুমালা থেকে ধামধুম বা উপজেলার শেষ সীমানা মাত্র কয়েক কিলোমিটার রাস্তায় ছিল চরম দুর্ভোগ। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সব কিছুই নতুন হয়ে গেছে। ভুলেই গেছেন দূর্ভোগের কথা।
 
তানোর পৌর সদরের গুবিরপাড়া গ্রামের চার্জার ভ্যান চালক ওহাব সকালের সময়কে জানান, এসব ছোট মোটা চাকার চার্জার গাড়ির জন্য ভালো রাস্তার দরকার। কারণ এসব গাড়িতে করে নানান জাতীয় ইলেকট্রনিক পণ্য ভাড়া মারা যায়। আগের চেয়ে আয়ও বেড়েছে।
 
জানা গেছে, বিগত ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী বলেছিলেন, রাস্তার দুর্ভোগ আছে এটা আমিও দেখছি। যদি পুনরায় নির্বাচিত হতে পারি তাহলে সকল রাস্তা সংস্কার এবং মুল রাস্তা বাড়ানো ও সরু কালভার্টে গুলো রাস্তার মাপ অনুযায়ী করা হবে। তারই অংশ হিসেবে উপজেলার মুল রাস্তা থেকে গ্রামীন রাস্তা গুলো নতুন ভাবে কার্পেটিং করা হয়েছে। রাস্তার আর দূর্ভোগ নেই বললেই চলে। যে সব রাস্তা মাটির রয়েছে সেগুলোও এইচ বি করন করা হচ্ছে।
 
অটোরিকশা চালক আমীর জানান, রাস্তা ভালো হওয়ার কারণে আয় রোজগার বেড়েছে। আগে যা ভাড়া মারা হত তা গাড়ি মেরামত করতেই চলে যেত। এখন ভাড়াও মেরে যাচ্ছে পরিবারের চাহিদা মেটানো।
 
ঠিকাদার ওয়াসিম সকালের সময়কে জানান, রাস্তার কার্পেটিং কাজ শেষ হয়েছে। আগের মালামাল কিনা ছিল বলে কার্পেটং কাজ করা সম্ভব হয়েছে। যদি এখন কিনা লাগত তাহলে কাজ করা যেত না। এখন রাস্তার সৌন্দর্য্য বিদ্ধিসহ নানান ছোট কাজ চলছে এবং তানোর টু মুন্ডুমালা রাস্তার সরু কালভার্ট গুলোর কাজ করা বাকি আছে। অল্প সময়ের মধ্যেই সব কিছু শেষ হয়ে যাবে। তবে জিনিসপত্র আগে কিনা না থাকলে চরম লোকসানের মধ্যে পড়তে হত।
 
উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান সকালের সময়কে জানান, উপজেলার প্রতিটি রাস্তা ছিল খানাখন্দে ভরা ছিল। এখন প্রতিটি রাস্তার কাজ হয়ে গেছে। মানুষের জীবন মানও বেড়েছে কয়েকগুন। জনসাধারণের মাঝেও স্বস্তি বিরাজ করছে।
 
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না সকালের সময়কে  জানান, সাংসদ ফারুক চৌধুরীর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল রাস্তার ব্যাপারে কোন অভিযোগ থাকবে না। তিনি তা বাস্তবায়ন করেছেন। শুধু রাস্তা নয়, উপজেলার মধ্যে কাশেম বাজারে সাংসদের নিজস্ব জায়গার উপর নির্মিত হচ্ছে বিশাল আকারের কারিগরি কলেজ। অনেক স্কুল কলেজ মাদ্রাসায় নির্মিত হয়েছে চারতলা একাডেমিক ভবন। উপজেলায় তারই একান্ত প্রচেষ্টায় একটি কলেজ ও একটি স্কুল সরকারি হয়েছে।
 
এছাড়াও সবচেয়ে বড় ব্যাপার সাংসদের নির্দেশে প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্মাণ করা হয়েছে শহীদ মিনার। যা স্বাধীনতার পরবর্তী কেউ করতে পারেননি। রাস্তা গুলোতে কোন দূর্ভোগ নেই। নতুন ভাবে রাস্তা হওয়ার কারনে সাধারণ মানুষের চলাচলে জীবনমান বেড়েছে কয়েকগুন। বর্তমানেও বিভিন্ন উন্নয়ন চলমান রয়েছে।

আরও পড়ুন