চট্টগ্রামে ৯ বছরে ৪ টি ওয়ার্ড কমিটি নগর যুবলীগের
প্রকাশিত: ২৩-৩-২০২২ দুপুর ১:২৭
৩ মাসের আহবায়ক কমিটি দিয়ে ৯ বছর খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলার পরে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সফলতার খাতায় জমা পড়েছে মাত্র ৪টি ওয়ার্ড কমিটি। ৩০ বছর আগে করা কমিটিও রয়েছে অপরিবর্তিত। এমনকি দীর্ঘ ১ যুগ ধরে আমেরিকায় থেকেও রয়েছেন ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। তবে আশার বাণী হচ্ছে আগামী মে বা জুন মাসে সম্মেলন হতে পারে বলে যুবলীগের কেন্দ্রীয় বিশ্বস্ত সুত্র জানালেও কারা হবেন এই সম্মেলনে কাউন্সিলর এই নিয়ে নেতাদের মাঝে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। যারা দীর্ঘদিন যাবৎ ছাত্রলীগ করে আসছেন দলের দুঃসময়েও মাঠে ময়দানে ছিলেন সরব এমন নেতাদের চোখে ভাসছে না পাওয়ার বেদনা। কাউন্সিলর হতে পারবেন কিনা তা নিয়েও অনেকের মাঝে রয়েছে দুশ্চিন্তার ছাপ।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুবলীগের বিশ্বস্ত একটি সুত্রে জানা গেছে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের কমিটি প্রায় রেডি করা আছে বিতর্ক ঠেকাতেই মুলত সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হবে মাত্র। কাউন্সিলর হিসেবে ভোট দেওয়ার সৌভাগ্য কারো নাও হতে পারে।
জানা যায় ২০১৩ সালের ১৩ জুলাই মহিউদ্দিন বাচ্চুকে আহ্বায়ক ও দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, দিদারুল আলম দিদার, মাহাবুবুল হক সুমনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ১০১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় যুবলীগ। কিন্তু ৯ বছরে মাত্র ৪ টি ওয়ার্ড কমিটি ছাড়া আর তেমন কিছুই করতে পারেনি সেই আহ্বায়ক কমিটি । এর মধ্যে ২০১৭ সালে মো. বশরকে সভাপতি ও রিপনকে সাধারণ সম্পাদক করে ৮ নং শুলকবহর ওয়ার্ড, ২০১৪ সালে ওয়াজেদ খান রাজিবকে সভাপতি ও সায়মন হোসেন ভোরকে সাধারণ সম্পাদক করে ৯ নং উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড, ২০১৩ সালে নজরুল ইসলামকে সভাপতি ও মো. সালাউদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করে ৪০ নং উত্তর পতেঙ্গা এবং মঈনুল ইসলামকে সভাপতি ও জামাল উদ্দিন রাজুকে সাধারণ সম্পাদক করে ৪১ নং দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ড যুবলীগের কমিটি করা হয়েছে। বাকী ৩৭ টি ওয়ার্ডে রয়েছে পুর্বের কমিটি।
নগরীর অন্যান্য ওয়ার্ডে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যথাক্রমে ১ নং দক্ষিণ পাহাড়তলী (২০০২) তৌফিক আহমেদ চৌধুরী ও মো. শফি, ২ নং জালালাবাদ (২০০২) নাছির তালুকদার ও মো. আবু, ৩ নং পাঁচলাইশ (২০০২) মো. নাছির ও আমির হোসেন, ৪ নং চান্দগাঁও (২০০৩) শওকত আলী ও সরোয়ার খান, ৫ নং মোহরা (২০০৩) জসিম উদ্দিন ও হারুন সিকদার, ৬ নং পূর্ব ষোলশহর (২০০৩) মো. ইসহাক ও মো. হাসান, ৭ নং দক্ষিণ ষোলশহর (১৯৯২) দেলোয়ার হোসেন বাবুল ও আজিজুর রহমান, ১০ নং উত্তর কাট্টলী (আনুমানিক ৩০ বছর পূর্বে) মো. জয়নাল ও মো. নবী, ১১ নং দক্ষিণ কাট্টলী (২০০৫) খায়রুল বাশার তসলিম ও তাজুল ইসলাম রুবেল, ১২ নং সরাইপাড়া (১৯৯৮) ইসলাম খান ও মো. আলমগীর, ১৩ নং পাহাড়তলী (২০০২) মো. মুিজব ও মো. কাশেম, ১৪ নং লালখান বাজার (২০০৯) আহবায়ক ইকবাল হোসেন হিরন, যুগ্ন আহবায়ক তৌফিক আজিজ ও সনত বড়ুয়া, ১৫ নং বাগমণিরাম (১৯৯৯/২০০০) সভাপতি কামরুল ইসলাম ভুট্রো ও সাধারণ সম্পাদকের নাম জানা যায়নি, ১৬ নং চকবাজার (১৯৯৪) একরাম হোসেন ও কাজল প্রিয় বড়ুয়া, ১৭ নং পশ্চিম বাকলিয়া (২০০২) তারেক সুলতান ও মো. নাজিম উদ্দিন, ১৮ নং পূর্ব বাকলিয়া (১৯৯৪) মো. হারুন (ভারপ্রাপ্ত) ও শওকত হোসেন, ১৯ নং দক্ষিণ বাকলিয়া (২০১১) মো. আলম ও নুরুল আলম মিয়া, ২০ নং দেওয়ান বাজার (২০০৪) অমল সেন ও এডভোকেট এমএএম রিমু চৌধুরী, ২১ নং জামালখান (২০০২) আহবায়ক মো. আইয়ুব, যুগ্ন আহবায়ক হুমায়ুন কবির মাসুদ,আশেক রসুল জাহিদ ও আজিম উদ্দিন, ২২ নং এনায়েত বাজার (২০০৪) রঞ্জিত ঘোষ ও আব্দুল আউয়াল, ২৩ নং উত্তর পাঠানটুলী (২০০২) মো. হাসান ও শেখ জাহেদ, ২৪ নং উত্তর আগ্রবাদ (১৯৯৬) আব্দুর রাজ্জাক ও মো. শামসুর রহমান, ২৫ নং রামপুর (২০০৩) দিলদার খান দিলু ও সাইফুর রহমান পলাশ, ২৬ নং উত্তর হালিশহর (২০০৩) রেজাউল করিম কায়সার ও খন্দকার আসাদ, ২৭ নং দক্ষিণ আগ্রাবাদ (২০০৪) মাহবুল আলম ও রওশন উদ্দিন, ২৮ নং পাঠানটুলী (২০১২) মো. মান্নান ও এম এ রহিম, ২৯ নং পশ্চিম মাদারবাড়ী (২০০৪) আবসার উদ্দিন ও শাহিন সরকার, ৩০ নং পূর্ব মাদারবাড়ী (২০০৪) মো. ইসমাইল ও মো. সানাউল্লাহ, ৩১ নং আলকরন (২০০২) তারেক ইমতিয়াজ ইমতু ও মৃদুল রায় বাচ্চু, ৩২ নং আন্দরকিল্লা (২০০২) আজম খান ও মো. মিলন, ৩৩ নং ফিরিঙ্গী বাজার (২০০২) আক্তার উদ্দিন ও হাফেজ উদ্দিন আনসারী, ৩৪ নং পাথরঘাটা (২০০৩) এসএম সদরুল হুদা ও বিশ্বজিৎ চৌধুরী, ৩৫নং বক্সির হাট (আনুমানিক দেড় যুগ আগে) মান্না বিশ্বাস ও মো. আতিক, ৩৬ নং গোসাইলডাঙ্গা (২০০৩) মো. জাকির মিয়া ও টিসু মল্লিক, ৩৭ নং উত্তর মধ্যম হালিশহর (২০০৩) আমেরিকা প্রবাসী মো. করিম ও হাবিব শরীফ, ৩৮ নং দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর (২০০২) আব্দুল আজিম ও মো. আক্তার হোসেন, ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর (২০০৩) জিয়াউল হক সুমন ও মো. সেলিমের নাম রয়েছে।
এব্যপারে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক দিদারুল আলম দিদার বলেন রমজানের ঈদের পর অর্থাৎ মে- জুন মাসের দিকে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। আমরা কাউন্সিলরদের তালিকা প্রস্তুত করে রাখব বাকিটা কেন্দ্রীয় নেতারাই করবেন। কারা হবেন কাউন্সিলর এমন প্রশ্নে তিনি বলেন প্রত্যেক ওয়ার্ড থেকে ১৫ জন করে কাউন্সিলর করা হবে যারা দেশে নাই বা রাজনীতিতে সক্রিয় নয় বা অন্য যে কোন সমস্য থাকলে কেন্দ্রের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ৯ বছরে মাত্র ৪ টি ওয়ার্ড কমিটি করার সফলতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন চট্টগ্রামের রাজনীতিতে একাধিক গ্রুপিং রয়েছে যেকোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অনেক কিছু ভাবতে হয় তাছাড়া ২ বছরতো করোনার কারনেই কেটে গেল তখনতো আর সম্মেলন করার পরিস্থিতি ছিলনা তাই বেশি দুর আগানো সম্ভব হয়নি।
তবে সামনের কমিটিতে কোন দায়িত্ব দেওয়া হলে নগর যুবলীগকে আরো চাঙ্গা করে তোলার জন্য যা করার দরকার তাই করব।
এব্যপারে জানতে যুবলীগের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শেখ নাঈম ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগকে একাধিকবার কল ও বার্তা দিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
এব্যপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য প্রনব দাশ বলেন আমরা চাইলেও আসলে অনেক কিছুই করতে পারিনা। আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির ইচ্ছা-অনিচ্ছা এবং মুরুব্বী সংগঠন নগর আওয়ামী লীগের সদিচ্ছা ছাড়া কিছুই করা সম্ভব নয়। তারা চাইলে একমাসের মধ্যেই নগরীর সকল কমিটি করা সম্ভব হতো।