মাদারীপুরে নির্মাণের ১১ দিনেই খালে ধসে পড়ল সড়ক

news paper

আরাফাত হাসান, মাদারীপুর

প্রকাশিত: ১৮-১২-২০২১ বিকাল ৫:৩১

12Views

সড়ক ধসে পড়েছে পার্শ্ববর্তী খালে। এখন হেঁটে চলাই দুষ্কর হয়ে গেছে। গত শুক্রবার দুর্গাবর্দী এলাকায় ২৫০ মিটার পিচ ঢালাই সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২৫ লাখ টাকা। কিন্তু নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার ১১ দিন পরই সড়কের ৩টি স্থান ধসে গেছে। এই ঘটনা মাদারীপুর সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নে।
 
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় ও যথাযথভাবে পাইলিং না করায় সড়কটি ধসে পড়েছে। ঝুঁকির মুখে পড়েছে আশপাশের বেশ কয়েকটি বসতঘর।সদর উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় (এলজিইডি) সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দুধখালী ইউনিয়নে ৫৫ নম্বর দুর্গাবর্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনগণের যাতায়াতের সুবিধার জন্য বনাবিবির সেতু থেকে ওই স্কুল পর্যন্ত ২৫০ মিটার ইট বিছানো সড়কটি ২৫ লাখ টাকা খরচে পাকা সড়ক নির্মাণ করার জন্য দরপত্র আহবান করা হয়। কাজটি পায় মেসার্স সোনালী স্টোর নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সেখান থেকে কাজটি কিনে নেন মো. ফেরদাউস নামে আরেক ঠিকাদার। নভেম্বরের শুরুতে সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু করে গত ২৫ নভেম্বরে কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ হয়। ৫ ও ৬ ডিসেম্বর ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সড়কটির তিনটি স্থানে ধস নামে।
 
গত শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, দুর্গাবর্দী খালের পাশ দিয়ে ৯ ফুটের একটি পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। বনাবিবির সেতুর গোড়া থেকে সড়কের প্রায় ২০ ফুট ধসে গেছে। সড়কের মাঝামাঝি দুটি স্থানেও ১৫ থেকে ২০ ফুট ধরে ধস নেমেছে। এসব স্থানে সড়কের অর্ধেকেরও বেশি ধসে গেছে। ফলে সেখানে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না।দুর্গাবর্দী এলাকার আবুল কালাম বলেন, ‘দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে সড়কে ফাটল দেখা দিয়েছিল। পরে রাতের মধ্যেই তিনটি স্থান ধসে পড়ল। সড়কটির নির্মাণকাজ খুবই খারাপ ছিল। কিন্তু নির্মাণের কয়েক দিনের মধ্যে নতুন সড়কটির এমন দশা হবে, আমরা চিন্তা করতেও পারি নাই।’
 
সড়কটির ঠিক পাশেই দুধখালি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আতিকুর রহমানের বসতঘর। ৯ ফুট এ সড়কের ৭ ফুটই ধসে পড়ায় চিন্তিত তিনি। আতিকুর রহমান বলেন, ‘খালের পাশে টেকসই গাইড ওয়াল নির্মাণ না করে রাস্তা বানালে টিকবে না। এ কথা ঠিকাদারকে আমি বারবার বলেছি। কিন্তু তিনি কোনো কথা শোনেননি। খালের পাশে কিছু বাঁশ পুঁতে বালুর বস্তা ফেলে পিচ ঢালাই দিয়েছেন। এখন তো এক বৃষ্টিতেই রাস্তা খালে চলে গেছে।’
 
এ বিষয়ে ঠিকাদার মো. ফেরদাউস বলেন, সড়কটি নির্মাণে কোনো ত্রুটি ছিল না। এখানে খালের গভীরতা অনেক বেশি। খালের পাশে মাটি না থাকায় রাস্তা খালের ভেতর ভেঙে পড়েছে। এটি নিছক দুর্ঘটনা। এখানে ঠিকাদারের কোনো গাফিলতি নেই।
উপজেলা প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সড়কটি ধসে পড়ার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এখানে কাজের গাফিলতি নেই। খালের পাশে মাটি নেই। তাই ধসে পড়েছে। আসলে সড়কটি কার্পেটিং শেষ হলেও ঠিকাদার আমাদের কাছে কাজটি এখনো বুঝিয়ে দেয়নি। তাই সড়কটির যেখানে যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে ঠিকাদার মেরামত করে দেবেন।’

আরও পড়ুন