যশোর-৪ আসনে জোট ও বিরোধী প্রার্থীদের সরব প্রচারণা
প্রকাশিত: ১-১১-২০২৫ দুপুর ৪:১৪
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে যশোর-৪ আসনে (অভয়নগর ও বাঘারপাড়া উপজেলা, সদরের বসুন্দিয়া ইউনিয়ন) রাজনৈতিক অঙ্গনে নির্বাচনী উত্তাপ বাড়ছে। এখনও প্রায় চার মাস বাকি থাকলেও মাঠে নেমেছেন প্রধান রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এ আসনে ইতোমধ্যেই জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। জামায়াতের প্রার্থী যশোর জেলা আমীর গোলাম রসুল, আর ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী এ্যাডভোকেট মাওলানা বায়েজিদ হোসাইন। উভয়েই দলীয়ভাবে গণসংযোগে সক্রিয় রয়েছেন। ধানের শীষ প্রত্যাশী তিনজন অন্যদিকে বিএনপি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা না করলেও ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশী তিনজন নেতা মাঠে রয়েছেন।
১.প্রকৌশলী টিএস আইয়ুব — কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ২০০৮ ও ২০১৮ সালে তিনি এ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ অক্টোবর তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের “সবুজ সংকেত” পাওয়ার দাবি করে প্রচারণা জোরদার করেছেন।
২.মতিয়ার রহমান ফারাজি — অভয়নগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি। তিনি দলের জন্মলগ্ন থেকে সক্রিয় এবং স্থানীয়ভাবে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। সম্প্রতি দুই হাজার মোটরসাইকেলের শোভাযাত্রা করে গণসমাবেশে অংশ নিয়ে আলোচনায় এসেছেন।
৩.নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ — সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল থেকে বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হন। বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। কেন্দ্রীয় আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকার কারণে তিনি শীর্ষ নেতৃত্বের আস্থাভাজন।
দলীয় কোন্দলে জটিলতা বিএনপির অভ্যন্তরে মনোনয়ন নিয়ে তীব্র বিভক্তি দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতারা তিন মনোনয়ন প্রত্যাশীকে একসাথে কাজের নির্দেশ দিলেও মাঠে চলছে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ও পারস্পরিক অভিযোগ।
গত ২৭ অক্টোবর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাঘারপাড়া ও অভয়নগরের সকল বিএনপির প্রার্থীদেরকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয়েছিল বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী গোলাম রসুল, যশোর জেলা জামায়াতের আমীর, দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনের দায়িত্বে আছেন এবং নিয়মিত গণসংযোগ চালাচ্ছেন। স্থানীয়ভাবে জামায়াতের প্রভাব আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।
এ্যাড. মাওলানা বায়েজিদ হোসাইন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ইসলামী আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা। তিনি দলীয়ভাবে এলাকাভিত্তিক যোগাযোগ বাড়িয়ে চলেছেন।
এদিকে সাবেক এমপি এম এম আমীন উদ্দীনের ছেলে আশিকুর রহমান মিঠু কয়েকটি বিলবোর্ড টানিয়ে আলোচনায় এসেছেন। ২০০১ সালে তার বাবা বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ যশোর-৪ আসনটি জোটের অংশ হিসেবে দাবি করেছেন।
এছাড়া অভয়নগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী গোলাম হায়দার ডাবলু, সাবেক মেয়র আব্দুল হাই মনা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের সিদ্দিকী, মসিয়ুর রহমান ও মশিয়ার রহমান মশিও সুযোগ পেলে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন।
পূর্ববর্তী নির্বাচনে" যশোর-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা ১২টি নির্বাচনের মধ্যে আটবার জয়ী হয়েছেন। ১৯৭৩ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রয়াত শাহ হাদিউজ্জামান, রণজিত রায় ও সাম্প্রতিক নির্বাচনে এনামুল হক বাবুল বিজয়ী হন। বিএনপি ১৯৭৯ সালে এবং জাতীয় পার্টি ১৯৮৮ ও ২০০১ সালে জয় পায়।

