ইন্দোনেশিয়ায় এশিয়া-প্যাসিফিক গ্যাদারিংয়ে বাংলাদেশের ৩৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল

news paper

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩-৯-২০২৫ দুপুর ৪:২২

104Views

ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং শহরে অনুষ্ঠিত ১৭তম আইএসজিএফ এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিওন গ্যাদারিংয়ে অংশ নিতে বাংলাদেশের ৩৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল যাত্রা করেছে। আজ পল্টনে আই এস জিএফ সাংবাদিক সম্মেলন স্কাউট অ্যান্ড গাইড ফেলোশিপের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাপরিচালক ব্রি. জে. শামছ খান (অব.)-এর সভাপতিত্বে এবং বিএসজিএফ-এর যুগ্ম-সম্পাদক এম এ ওয়াহেদের সঞ্চালনায় এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সূচনা বক্তব্য দেন বিএসজিএফ-এর সাধারণ সম্পাদক মুকুল আনোয়ার। আরও বক্তব্য রাখেন ইন্দোনেশিয়ান দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারি শহিদ নুর করিম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ইন্দোনেশিয়ান দূতাবাসের স্টাফ মেম্বার সিটি আয়ু প্রেমেশ্বরী, বিএসজিএফ-এর উপদেষ্টা এস কে আকবর রেজা, আন্তর্জাতিক সম্পাদক সৈয়দ জুলফিকার আলী চৌধুরী তোয়াহা, পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক রাসেল রহমান শিমুল, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ওবায়েদুল কাদের প্রমুখ। ব্রি. জে. শামছ খান (অব.) তার বক্তব্যে বলেন, “এবারই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যেকোনো আন্তর্জাতিক কনফারেন্স বা গ্যাদারিং-এ সবচেয়ে বেশি প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছে। বিএসজিএফ দৃঢ়ভাবে আশা করে, এই আন্তর্জাতিক গ্যাদারিং দেশের স্কাউটিং আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করবে এবং বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি করবে। নিঃস্বার্থ মানবসেবার এই মহান সংগঠনের ছায়াতলে অভিজ্ঞ স্কাউট ও স্কাউট-মনোভাবাপন্ন ব্যক্তিদের একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানাই।” ইন্দোনেশিয়ান দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারি শহীদ নুর করিম বলেন, “আসন্ন গ্যাদারিং-এ বিএসজিএফ-এর অংশগ্রহণের প্রস্তুতি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমি বিশ্বাস করি, স্কাউট আন্দোলনের ক্ষেত্রে ১৭তম এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিওনাল গ্যাদারিং-এ বিএসজিএফ একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।” প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব প্রদান করবেন বাংলাদেশ স্কাউট অ্যান্ড গাইড ফেলোশিপের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সামছ খান, বিএসপি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, পিইঞ্জ, পিজিডি (অব.)। তাঁর সঙ্গে অফিসিয়াল ডেলিগেট হিসেবে থাকছেন সহ-সভাপতি নুরুল কাইয়ুম (ফারুক), সাধারণ সম্পাদক মুকুল আনোয়ার এবং যুগ্ম সম্পাদক স্বপ্না বেগম। এছাড়া প্রতিনিধি দলে ২৮ জন অবজারভার থাকছেন। বাংলাদেশ স্কাউট অ্যান্ড গাইড ফেলোশিপ (বিএসজিএফ), ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি সরকারি নিবন্ধিত সংগঠন, যা ইন্টারন্যাশনাল স্কাউট অ্যান্ড গাইড ফেলোশিপ (আইএসজিএফ)-এর স্বীকৃত ও এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিওনের অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিএসজিএফ নিয়মিতভাবে বিশ্ব সম্মেলন ও আঞ্চলিক গ্যাদারিং-এ সাফল্যের সঙ্গে অংশগ্রহণ করে আসছে। ২০১২ সালে বাংলাদেশ ১৩তম এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিওনাল গ্যাদারিং সফলভাবে আয়োজন করেছিল। সেই অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করা, আন্তর্জাতিক পরিসরে অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং ভ্রাতৃত্ব ও সহযোগিতা বৃদ্ধিই এবারের অংশগ্রহণের মূল উদ্দেশ্য। এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিওনাল গ্যাদারিং এই অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট, যা প্রতি তিন বছর অন্তর আয়োজিত হয়। এ বছর এটি আয়োজন করছে হিপ্রাডা– ইন্দোনেশিয়ান স্কাউটস অ্যান্ড গাইডস ফেলোশিপ। হিপ্রাডা ইতিপূর্বে দুটি বিশ্ব সম্মেলন, দুটি আঞ্চলিক সমাবেশ এবং ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন দ্বীপে একাধিক আঞ্চলিক আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। এবারে তারা ১৭তম এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিওন গ্যাদারিং আয়োজন করছে, যেখানে মোট ১১টি জাতীয় স্কাউট ও গাইড ফেলোশিপ (এনএসজিএফ)—বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং শ্রীলঙ্কা অংশগ্রহণ করছে। পাশাপাশি অংশগ্রহণ করছে ৮টি কেন্দ্রীয় শাখা (সিবি) দেশ—কম্বোডিয়া, চীন, হংকং, জাপান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান ও থাইল্যান্ড। বান্দুং শহরকে, যাকে প্যারিস ভ্যান জাভা বলা হয় প্যারিসের সঙ্গে এর ইউরোপীয় পরিবেশগত সাদৃশ্যের কারণে, এবারের সমাবেশের ভেন্যু হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। শহরটি তার সহনশীলতা, বৈচিত্র্য, বহুধর্মীয় সহাবস্থান, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও রন্ধনপ্রণালীর জন্য সুপরিচিত। এবারের প্রতিপাদ্য 'ফ্যাস্টিভাল অফ ডাইভার্সিটি' এই বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তির চেতনাকেই প্রতিফলিত করবে। বাংলাদেশ স্কাউট অ্যান্ড গাইড ফেলোশিপ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, এই আন্তর্জাতিক সমাবেশ দেশের স্কাউটিং আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করবে এবং বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের মর্যাদা আরও উজ্জ্বল করে তুলবে।


আরও পড়ুন