সাতক্ষীরায় কথিত সাংবাদিকের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ সকলে
প্রকাশিত: ৮-৯-২০২৫ রাত ৮:৪৩
সাতক্ষীরায় তথাকথিত সাংবাদিক আলামিন সরদারের চাঁদাবাজিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদরা। তার রোষানল থেকে জেলার কোনো দপ্তর বা পেশাদার সাংবাদিকরাও রেহাই পাচ্ছেন না। অভিযোগ আছে, জেলার শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে হলুদ সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত আলামিন ও তার সিন্ডিকেট জেলার সর্বত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের দাবি অনুযায়ী টাকা না দিলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করে মানসম্মান নষ্ট করা হয়।
আলামিন সরদার তালা উপজেলার কাশিয়াডাঙা গ্রামের তুব্বাত সরদারের ছেলে। জানা গেছে, সে মাত্র পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে এবং বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে জেলও খেটেছে। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আলামিন প্রথমে ওয়েবসাইট থেকে কর্মকর্তাদের নাম ও ফোন নম্বর সংগ্রহ করে। এরপর সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে টাকা দাবি করে। দাবি মতো টাকা না পেলে তার বিরুদ্ধে মনগড়া গল্প লিখে ফেসবুকে পোস্ট করে। তারপর হোয়াটসঅ্যাপে সেই সংবাদ পাঠিয়ে পুনরায় মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করা হয়। মানসম্মান হারানোর ভয়ে অনেকেই কিছু টাকা দিলেও সপ্তাহখানেক পর আবার টাকা চাওয়া শুরু করে।
তালা উপজেলার ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তারা জানান, আলামিন তার পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের নামে টাকা দাবি করেছিল। টাকা না দেওয়ায় তাদের জেলার শীর্ষ ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজ বানিয়ে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে। এরপর সেই সংবাদ ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। তারা এই চাঁদাবাজকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। পাটকেলঘাটার ব্যবসায়ী কেশব সাধু ও আবু সাইদ জানান, আলামিন প্রথমে আর্থিক সমস্যার কথা বলে টাকা চায়। কিছুদিন পর দুর্নীতির সংবাদ আসছে বলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে। তারা এই চাঁদাবাজকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, আলামিন একটি ভুয়া অনলাইন পোর্টাল খুলে নিজেকে সাংবাদিক দাবি করে সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদদের জিম্মি করে নিয়মিত টাকা আদায় করছে। প্রশাসন দ্রুত এই চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের লাগাম টেনে না ধরলে সাংবাদিকতার মতো মহান পেশা হুমকির মুখে পড়বে। সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামিনুল হক জানান, আলামিনের নামে বেশ কয়েকটি মামলা চলমান আছে এবং পর্নোগ্রাফি আইনেও একটি মামলা আছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।