ছাত্রদলের উগ্র ও সন্ত্রাসী স্লোগানের প্রতিবাদে সাভারে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ
প্রকাশিত: ৫-৯-২০২৫ বিকাল ৫:৫৭
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় স্পোর্টস বিষয়ক সম্পাদক হারুন অর রশিদ রাফি বলেছেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদের স্লোগান যারা দিবে তাদেরকে বারবার ভারতে যেতে হবে, এই বাংলাদেশ তাদেরকে কখনোই গ্রহণ করবে না। আমরা দেখেছি ৮০ ও ৯০ এর দশকে এবং ২০০০ সালের দিকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, ছাত্রদল ও বাম সংগঠনগুলো মিলে ঘনঘন স্লোগান দিত ``একটা দুইটা শিবির ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর'' যদিও আমরা তাদের জবাই করাকে ভয় করি না, আর আমাদের জন্ম হয়েছে, মৃত্যুকে বরণ করার জন্য। আমাদেরকে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, আমাদেরকে জবাই করার ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমরা ছাত্র সমাজের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় জীবন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি। ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমাদের অসংখ্য ভাইয়েরা নিজেদের হাত দিয়েছে, পা দিয়েছে, চোখ দিয়েছে, জীবন দিয়েছে ছাত্র সমাজের ন্যায্য অধিকার আদায় করার জন্য। আগামীতেও আমরা আমাদের জীবন বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত। তাই বর্তমানে যারা একই কাজ করছো, তোমরা আর আমাদেরকে ভয় দেখাইও না। আমরা বীরের জাতি, আমাদেরকে জবাই করার ভয় দেখিয়ে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে রাজপথ থেকে সরিয়ে দেওয়া যাবে না।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে সাভার মডেল মসজিদের সামনে শিবিরের ঢাকা জেলা উত্তর শাখার আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে ছাত্রদলের নেতাদের ‘উগ্র স্লোগানের’ প্রতিবাদে সকাল সাড়ে নয়টায় সাভার নিউমার্কেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক পদক্ষিণ করে সাভার মডেল মসজিদের সামনে সমবেত হন নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা ছাত্রদলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
হারুন অর রশিদ রাফি অভিযোগ করেন, এই ছাত্রদলের বর্তমানে কোন কল্যাণমুখী এজেন্ডা নাই, তাদের একটাই এজেন্ডা ছাত্রশিবিরের উপর দায় চাপানো এবং মিথ্যাচার করা।
ছাত্রদল নেতৃবৃন্দকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ছাত্র সমাজ এখন আর অন্ধ নয়। এটা ১৯৯০ সাল না আপনারা যেভাবে ফ্লেমিং করবেন সেই ভাবেই আপনাদেরকে ছাত্র সমাজ তুলে ধরবে। এখন সোশ্যাল মিডিয়া এবং শক্তিশালী মিডিয়ার যুগ। সকল জায়গায় সকলের হাতে হাতে মিডিয়া রয়েছে কথা সাবধানে বলবেন। কোন কিছু আপনারা দখল করতে পারবেন না, কোন কিছু আপনারা মাটি চাপা দিতে পারবেন না। আপনারা নিজেরা অপকর্ম করে সেই দায় শিবিরের উপর চাপানো এটা কখনোই ছাত্র সমাজ মেনে নিবে না। আমরা দেখেছি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদেরকে ছাত্রদলের নেতা যৌনকর্মী বলেছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং আগামীতে এসব কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসতে আহ্বান জানাই, এ থেকে সরে না আসলে আগামীতে ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে জবাব নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
ছাত্রশিবির ঢাকা জেলা উত্তরের সভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, আগে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ গুম, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও টেন্ডার বাজি করতো। এখন ছাত্রদল এবং এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা করছে। শিবিরের নেতাকর্মীদের জবাই করার হুমকি দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। বিগত দিনে এ স্লোগান দিতো ছাত্রলীগ, এখন ছাত্রদল দিচ্ছে।
এ ধরনের হত্যার ঘটনা ঘটলে তাদেরই দায়িত্ব নিতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন গুলোকে নিয়ে তারা নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। সম্প্রতি তাদের কমিটিগুলোতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ৭০ জন নেতাকর্মীকে জায়গা করে দিয়েছে। ডাকসু নির্বাচনে তাদের প্যানেলে প্রায় ১৬ জন ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। এতে প্রতিীয়মান হয় যে ছাত্রদল আবারও সেই পুরনো কায়দায় ফ্যাসিস্টদের সাথে নিয়ে দেশকে আরো একটি স্বৈরতন্ত্রের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এবং জুলাই যোদ্ধারা বেঁচে থাকতে এই ষড়যন্ত্র আমরা কোন ভাবেই বাস্তবায়ন হতে দিব না। আমরা বলেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের সূচনা হবে।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আগামীতে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখলে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন। বিগত দিনে ছাত্রলীগ শিক্ষাকে কলুষিত করেছে। আর এখন ছাত্রদল শিক্ষার্থীবান্ধব রাজনীতি না করে ছাত্রলীগের রাজনীতির পুরোনো ধারা ফিরিয়ে আনতে চায়।
তিনি বলেন, ছাত্রদল দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। তারা ছাত্র সংসদ নির্বাচন ভন্ডুল করতে চায়। এমনটি করলে ছাত্রলীগের মতো পরিণতি হবে।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা জেলা উত্তরের উদ্যোগে ছাত্রদলের উগ্র ও সন্ত্রাসী স্লোগান এবং ছাত্রসংসদ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে সঞ্চালনা করেন ছাত্রশিবির ঢাকা জেলা উত্তর শাখার সেক্রেটারি আলমগীর হোসেন রাকিব। এতে বিভিন্ন ইউনিটের প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়।