উত্তরায় ফুটপাত দখল করে চলছে জমজমাট ব্যবসা, সড়ক যেন বাজারে পরিনত

news paper

এইচ এম মাহমুদ হাসান

প্রকাশিত: ৩-৯-২০২৫ দুপুর ৩:৫৬

278Views

রাজধানীর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) আওতাধীন উত্তরা ১২ নং সেক্টর, প্রিয়াংকা সিটি ও ১৫ নং সেক্টর সংলগ্ন সরকারি বেপজা কোয়ার্টার এলাকার প্রধান সড়ক ও ফুটপাত দখল করে চলছে অবাধ ব্যবসা। মুরগির দোকান, সবজি বিক্রেতা, টং হোটেল ও চায়ের আড্ডাখানার কারণে এলাকাটি পরিণত হয়েছে অবৈধ দোকানপাটের জমজমাট বাজারে। 

এর ফলে ভোগান্তি বাড়ছে এলাকাবাসীর, ব্যাহত হচ্ছে চলাচল এবং নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের সৌন্দর্য।স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, বিশেষ করে মুরগির দোকান থেকে প্রতিদিন ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। চায়ের দোকানকে ঘিরে বাহিরের লোকজন জটলা তৈরি করে আড্ডা দেয়, যা এলাকায় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ তৈরি করছে। ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় পথচারীরা বাধ্য হচ্ছেন মূল সড়কে হাঁটতে, এতে ঝুঁকি বাড়ছে দুর্ঘটনারও।

 উত্তরা ১২ নং সেক্টর ওয়েলফেয়ার সোসাইটির একাধিক দায়িত্বশীল জানান, “আমরা আমাদের সিকিউরিটি গার্ডদের মাধ্যমে বহুবার দোকানদারদের সতর্ক করেছি, সরে যেতে বলেছি, কিন্তু তারা এখান থেকে সরে যায়নি। উল্টো দিন দিন ব্যবসা আরও বেড়েছে। বাসিন্দারা আমাদের কাছে বারবার অভিযোগ জানাচ্ছেন, কিন্তু এখন আমরা কার্যত অসহায় হয়ে পরেছি, কারণ আমাদের তো প্রশাসনিক ক্ষমতা নেই যে আমরা উচ্ছেদ অভিযান চালাবো।

তাই আমরা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ডিএনসিসির মাননীয় প্রশাসক ও ডিএনসিসির অঞ্চল-৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের নিকট আহবান থাকবে, দ্রুত এই মিনি বাজার কে উচ্ছেদ করে ফুটপাত, রাস্তা ও সেক্টরকে সুন্দর পরিচ্ছন্ন একটি পরিবেশ দেওয়ার জন্য।

এলাকার এক বাসিন্দা গণমাধ্যমকে বলেন, “ফুটপাতগুলো দোকানদাররা দখল করে নিয়েছে। মুরগির দোকান, চায়ের আড্ডা আর টং হোটেলের কারণে হাঁটার জায়গা নেই। ফুটপাতের টাইলসগুলো ভেঙে যাচ্ছে, ময়লা-আবর্জনায় ভরে যাচ্ছে আশপাশ। আমরা দ্রুত এই দখলদারিত্বের অবসান চাই। ফুটপাত ও সড়ক দখল মুক্ত না হলে এলাকার শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে যাবে।

ফুটপাত ও সড়ক দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে  ডিএনসিসির অঞ্চল-৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব) আ ন ম বদরুদ্দোজা বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছি। উত্তরা ১২ নং সেক্টর ও বেপজা কোয়ার্টার সংলগ্ন এলাকাগুলো আমাদের নজরে রয়েছে। দ্রুতই সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হবে। রাস্তা ও ফুটপাত জনসাধারণের, সেগুলো দখল করে কোনো ব্যবসা করার সুযোগ নেই।

কবে নাগাদ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে এই প্রশ্নে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, আমরা গত মাসে অনেকগুলো অভিযান পরিচালনা করেছি, ক্রমান্বয়ে করা হচ্ছে এবং এটাও দ্রুতই করা হবে এবং এগুলো থাকার কোনো সুযোগ নেই বলে জানান তিনি। 

বিশ্লেষণে দেখা যায়,রাজধানীর অধিকাংশ এলাকাতেই ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে এমন ব্যবসা চালানো এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। ডিএনসিসি নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান চালালেও দখলদাররা কিছুদিন পর আবার বসে যায়। স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ, কঠোর আইন প্রয়োগ এবং বিকল্প ব্যবসার জায়গা তৈরি। নতুবা জনজীবন যেমন ব্যাহত হবে, তেমনি নগর পরিকল্পনার সৌন্দর্যও ধ্বংস হয়ে যাবে।


আরও পড়ুন