মিয়ানমারের জলসীমায় ঢুকে পড়া ১২২ জেলেকে আটক করেছে কোস্টগার্ড

news paper

টেকনাফ কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৩১-৮-২০২৫ দুপুর ২:১০

44Views

কক্সবাজারের টেকনাফে ১৯টি ট্রলারসহ ১২২ জন জেলেকে মিয়ানমারের জলসীমা থেকে ফেরত আনার পর আটক করেছে কোস্টগার্ড। এরমধ্যে ট্রলারগুলোর মাঝি ও মাল্লা হিসেবে থাকা ৯৩ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার এবং এপিবিএন পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে পাঠানো হচ্ছে। বাকি ২৯ জন বাংলাদেশি জেলে এবং ১৯টি ট্রলার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় এই তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূর।

তিনি বলেন, শনিবার সকালে জেলেদের পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার এবং রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এপিবিএন পুলিশের সিদ্ধান্ত অনুসারে রোহিঙ্গা নাগরিকদের আশ্রয়শিবিরে পাঠানো হচ্ছে। ওসি আরও বলেন, বাকি ২৯ জন বাংলাদেশি জেলে এবং ১৯টি ট্রলার কোস্টগার্ডের সিদ্ধান্ত অনুসারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিব হাসান চৌধুরীর উপস্থিতিতে সামাজিক বিচারের মাধ্যমে ট্রলার মালিক সমিতির নেতা ও মালিকদের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে জলসীমানা অতিক্রম না করার অঙ্গীকার দেওয়ায় ট্রলার ও জেলেদের সতর্ক করে স্ব-স্ব পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।

কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের গণমাধ্যম কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক জানান, গত শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া থেকে শাহপরীর দ্বীপ মোহনা পর্যন্ত নাফ নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিয়ানমার জলসীমায় ঢোকা ১৯ ট্রলারসহ ১২২ জেলেকে ফেরত এনেছিল কোস্টগার্ড সদস্যরা। তিনি আরও বলেন, রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের কারণে সীমান্তের বড় অংশ এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। এর ফলে শূন্যরেখা অতিক্রম করে মিয়ানমারে ঢুকলেই জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ অবস্থায় জেলেদের ফেরত আনতে গিয়ে কোস্টগার্ডসহ সীমান্তে নিয়োজিত বাহিনীকে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। এতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, মাদক ও অস্ত্র পাচার রোধেও চ্যালেঞ্জ বাড়ছে। ফেরত আনা জেলেরা এখন শাহপরীর দ্বীপ কোস্টগার্ড স্টেশনে হেফাজতে থাকলেও তাদেরকে টেকনাফ থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

ট্রলার মালিকদের দাবি, সাগরে মাছ ধরতে গেলে নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্ট দিয়েই যেতে হয়। না হলে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ হয়ে যাবে। ট্রলার মালিকদের তথ্য অনুযায়ী, ৫ থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত ২৩ দিনে আরাকান আর্মি ১০টি ট্রলারসহ ৬৩ জন জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে গোষ্ঠীটি ২৬৭ জন বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। তাঁদের মধ্যে ১৮৯ জনকে এবং ২৭টি নৌযান ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে।


আরও পড়ুন