এয়ারপোর্ট রেস্তোরাঁ বন্ধ বিমানযাত্রীদের চরম ভোগান্তি

news paper

নারগিস পারভীন

প্রকাশিত: ১৯-৮-২০২৫ রাত ৯:৩৪

122Views

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের "এয়ারপোর্ট রেস্তোরাঁ" বিগত  ১ মাসের বেশি বন্ধ হওয়ায় যেমন চরম ভোগান্তিতে পড়েছে বিমানবন্দরকেন্দ্রিক জনজীবন, তেমন তার সাথে বেহাল অবস্থা হয়েছে পারিপার্শ্বিক পরিবেশের। সরেজমিনে ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বললে তাদের ভোগান্তি আর হতাশার বিষয়ে জানা যায়।  তারা বলেন, এ বিমানবন্দরে ক্ষনিকের জন্য আমরা আপনজনদেরকে কেউ বিদায় জানাতে আসি,আবার কেউ আসি স্বাগত জানাতে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে আমাদের সবার নিত্য নৈর্ব্যক্তিক আচরণগত প্রয়োজনে হাত-মুখ ধোয়া, টয়লেট ব্যবহার করা, হালকা খাবার খাওযার জন্য এখন খুব সমস্যায় পড়তে  হচ্ছে।  যা দেখে মনেই হয় এখানে বলার বা শোনার কেউ নেই, বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রংপুর থেকে আসা এক জনৈক ব্যক্তি।  বিদেশ গামী এক যাত্রী বলেন, দেশ ও  বিদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আমরা  এ এয়ারপোর্টে আসি কিন্তু এখানে এসে হর হামেসায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।  ছোট ছোট ফাস্টফুডের দোকান হয়ে গেছে ভাতের হোটেল, খাবারের মান ভালো নেই, তার সাথে পরিবেশ দেখলে আসলে বোঝার উপায় নেই যে, আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরের পরিবেশ এটা। যদি কেউ উন্নত পরিবেশ ও সেবা পাওয়ার আশায় এখানে আসে তবে চোখে পড়বে বিভিন্ন জায়গায়  ময়লার ভাগাড়। 

কঠোর নজরদারির আড়ালে  কিভাবে গড়ে উঠেছে এ সব অগোছালো নিম্ন মানের ছোট ছোট  ছাপড়া হোটেল আর সিভিল এভিয়েশন অথরিটিই বা কি করছে এমন প্রশ্ন অনেকেরই? নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ফাস্টফুডের দোকানী বলেন, এয়ারপোর্টের স্থাবর সম্পত্তির মালিক বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) কিন্তু এ সম্পত্তিগুলোর কোনো সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নেই বললেই চলে এমন ক্ষোভ অনেকের। আমাদের ফাস্ট ফুডের ব্যবসা খুব মন্দা যাচ্ছে এ রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকার কারণে। 

শোনা যায় এয়ারপোর্ট রেস্তোরাঁ বন্ধের সাথে সাথে যত্রতত্র অবৈধ দোকান বসিয়ে দখলদার ও দোকান মালিকরাসহ একটি  দালাল সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। জানা যায়, আমিন মোহাম্মদ গ্রুপ এ রেস্তোরাঁর পরিচালনা করতো কিন্তু মরা মুরগী কেলেঙ্কারি ঘটনার পর থেকে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করেন মনির নামের একজন ব্যবসায়ী। পরবর্তী সময়ে সেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় এ রেস্তোরাঁ নিয়মনীতি অনুযায়ী উন্মুক্ত ভাবে টেন্ডার হয়। তবে গুঞ্জন ওঠে ব্যবসায়ী মনির নিজের কোম্পানি নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করে জনৈক এক কোম্পানির জন্য টেন্ডারে লড়াই করেছেন এবং তাতে সর্বোচ্চ দর দাতা হিসেবে  পি আর ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি  হোটেল পরিচালনার জন্য এ রেস্তোরাঁটি ইজারা পেয়েছে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি কাছ থেকে। ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না জেনেই ব্যবসায়ী মনির সুকৌশলে হাইকোর্টে একটি রিট মামলা দায়ের করেন। 

বেবিচকের(বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ) সম্পত্তি শাখার মাধ্যমে চুক্তিভিত্তিক নিয়মে নির্দিষ্ট মেয়াদে ভাড়া দেন। এছাড়াও সাধারণত বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে বা আশেপাশে থাকা দোকানগুলোর বেবিচকের সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা শাখার অধিন। দূর দূরান্ত থেকে আগত, বিমানবন্দরকেন্দ্রিক সকল যাত্রী ও তাদের পরিবার পরিজনেরা সাময়িক সেবা গ্রহণ করে থাকে  কিন্তু রেস্তোরাঁটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় আশে পাশের  পরিবেশ যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমন ভোগান্তিও বেড়েছে বলে মনে করেছেন বিমানবন্দরকেন্দ্রিক ব্যক্তিবর্গ।

বেবিচক সূত্রে জানা যায় , হাইকোর্টের রায় বেবিচকের স্বপক্ষে এসেছে এখন শুধু নিয়মানুযায়ী আদেশ জারি হওয়ার পালা।


আরও পড়ুন