ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা মৃত্যুকে ভয় পায় না বলেই আন্দোলন মুছতে পারেনি : এটিএম আজহারুল
প্রকাশিত: ৩-৮-২০২৫ দুপুর ৪:৩০
জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, কোরআন বিরোধী ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সরকারের অধীনেই আমাদের প্রথম সারির নেতাদের বিনা অপরাধে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। মৃত্যুর মুখোমুখি জেনেও নেতৃবৃন্দ দেশেই ছিলেন। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা মৃত্যুকে ভয় পায় না বলেই আন্দোলন মুছতে পারেনি। পূর্বে বিরোধিতা করে অনেকেই ধ্বংস হয়েছে। রক্তের বদলা নিতে আগামী নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে কাজ কওে যেতে হবে। বিজয় ছিনিয়ে নিতে হবে। আগামীতে ইসলামী শক্তি ক্ষমতায় আসবে ইনশাআল্লাহ।
শনিবার (০২ আগষ্ট) বিকেলে পাবনা বনমালী ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে পৌর ও সদর জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শেখের বেটি সব সময় বলত তারা নাকি পালায় না। তিনি আজকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মী এতিমের মত পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বিদেশে বসে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। আমরা কি পালিয়েছি?। নিশ্চয়ই আমরা দেশেই আছি। ফাঁসির মঞ্চে হাসিমুখে গিয়েছি। তবুও বিদেশ পালায়নি।
তিনি ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, শুধু শ্লোগান দিয়ে ইসলাম কায়েম হয় না। সত্যিকার ইসলাম বিজয় করতে হলে রাসুলের আদর্শ অনুযায়ী চলতে হবে। মানুষদের মন জয় করতে হয় আচরণ ও চরিত্র দিয়ে। দল বড় হচ্ছে জনশক্তি বাড়ছে। আমাদের বিনয়ী হতে হবে। যাতে আমাদের চরিত্র দেখে মানুষ দূরে সরে না যায়। জীবন্ত কোরআন হতে হবে। রাজনৈতিক বিপ্লব দীর্ঘস্থায়ী হয় না। চারিত্রিক বিপ্লব দীর্ঘস্থায়ী হয়। আমাদের নেতারা জীবন্ত কোরআন ছিলেন কারণ দুর্নীতি অনিয়ম তাদের গ্রাস করতে পারনি। কারও সীমা অতিক্রম করা যাবে না। জান ও মাল দিয়ে আল্লাহর পথে লড়তে হবে।
পাবনার কৃতি সন্তান মাওলানা আব্দুস সোবহানের স্মৃতি চারণ করে তিনি বলেন, আব্দুস সোবহান আমার থেকে ১৫ বছরের বড়। তিনিই একমাত্র নেতা যিনি তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায়ে শীর্ষ নেতা হয়েছেন। ইউপি সদস্য থেকে ৫ বারের এমপি হয়েছিলেন। তার মধ্যে কোন অহংকার গর্ব ছিল না। তার অসংখ্য বাড়ি-গাড়ি জমি থাকার কথা ছিল। কিন্তু তিনি কিছুই করেননি। পাবনার বুকে অসংখ্য সামাজিক প্রতিষ্ঠান কওে গেছেন। বৃদ্ধ বয়সেও হাসিনা ফ্যাসিষ্ট তাকে ডান্ডাবেরী পড়িয়েছিলেন। আল্লাহ অবশ্যই ওই জালিমের বিচার করবেন।
এর আগে সকালে তিনি ঢাকা থেকে পাবনার সাঁথিয়ার শশুর বাড়িতে এসে শশুরের কবর যিয়ারত করেন। এরপর দুপুরের দিকে জামায়াতের সাবেক আমীর শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর সাঁথিয়ার মনমথপুরের কবর যিয়ারত করেন। বিকেল ৩ টার দিকে আরিফপুর সদর কবরস্থানে সাবেক নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুস সোবহানের করব যিয়ারত করেন। পরিশেষে জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া করে ব্যরিষ্টার নাজিবুর রহমান মোমেন।
পাবনা-৫ আসনের(সদর) সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা মো: ইকবাল হোসাইনের সভাপতিত্বে ও সদর জামায়াতের সেক্রেটারি ইব্রাহিম খলিল আইনুল ও পৌর সহকারী সেক্রেটারি ইকরাম হোসাইনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সাবেক তুখোড় ছাত্রনেতা পাবনা জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল, পাবনা জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা আব্দুর রহিম, সাবেক আমীর শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ব্যারিষ্টার নাজীবুর রহমান মোমেন, রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক নজরুল ইসলাম খান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা জহুরুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুস সুবহানানের ছেলে নেছার আহমেদ নান্নু, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ও পৌর মেয়র পদপ্রার্থী অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল গাফ্ফার খান।
পাবনা শহর শিবিরের সভাপতি গোলাম রহমান, পাবনা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক রেজাউল করিম, পাবনা পৌর জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আব্দুল লতিফ, পাবনা সদর উপজেলা জামায়াতের আমীর আব্দুর রব প্রমুখ।