ইরান থেকে ফুটসাল কোচ এনেছে বাফুফে

news paper

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৮-৭-২০২৫ দুপুর ২:১৫

84Views

হামজা চৌধুরি-সামিত সোম আসার পর বাংলাদেশের ফুটবলে নব উন্মাদনা শুরু হয়েছে। এই উন্মাদনায় বাফুফে স্ট্যান্ডার্ড ফুটবলের পাশাপাশি ফুটসালেও এগিয়ে যেতে চায়। সেই লক্ষ্যে এশিয়ার ১৩ বারের চ্যাম্পিয়ন ইরান থেকে কোচ এনেছে বাফুফে। 

গতকাল বিকেলে বাফুফে ভবনে ইরানী কোচ সাঈদ খোদারাহমিকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ফেডারেশন সভাপতি তাবিথ আউয়াল। স্বল্প আয়তন ও সময়ের ফুটসাল খেলা এখন বিশ্বের অনেক দেশেই জনপ্রিয়। ইরানে ফুটসালের জনপ্রিয়তা বোঝাতে কোচ সাঈদ বলেন, 'আমার শহরেই এক হাজার ফুটসাল স্টেডিয়াম। ইরানে প্রিমিয়ার লিগ থেকে শুরু করে অনূর্ধ্ব-১২ পর্যন্ত ফুটসাল প্রতিযোগিতা হয়।'

বাংলাদেশে এখনো ফুটসালের কোনো কাঠামোই নেই। তাই আজ বাংলাদেশের ফুটসালের নতুন এই যাত্রাকে 'জন্ম' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এই কোচ, 'বাংলাদেশ ফুটসালে শিশু। ইরান সেই হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়। আমার চেষ্টা থাকবে বাংলাদেশের ফুটসালে উন্নতি করা।

ফুটসাল নিয়ে বিস্তর জানাশোনা সাঈদের। এক যুগের বেশি সময় তিনি এএফসি’র ফুটসাল ইন্সট্রাকটর। মিয়ানমার জাতীয় নারী ও পুরুষ ফুটসাল দলের কোচ ছিলেন পাঁচ বছর। বাংলাদেশের আঙ্গিকে বেশ হাইপ্রোফাইল কোচই তিনি।

বাংলাদেশের দায়িত্ব নেয়ার কারণ সম্পর্কে বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি। এজন্যই মূলত এসেছি। মিয়ানমারে যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম একই অবস্থায় ছিল। পাঁচ বছর পর তাদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। আমি চাই বাংলাদেশের মানুষও এক দিন সাঈদকে মনে রাখবে। ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে ইতিহাস-বাস্তবতার উদাহরণের মাধ্যমে বেশ বড় ব্যাখ্যাই দিয়েছেন। একটু লম্বা হওয়ায় বাফুফে সভাপতির কাছ থেকে দুই মিনিট সময় চেয়ে নিয়েছিলেন। সেটা অতিবাহিত হওয়ায় খানিকটা মজা করে বলেন, 'শিক্ষক (কোচদের ইন্সট্রাকটর) তো একটু বেশি কথা বলার অভ্যাস।'

বাফুফের ফুটসাল কমিটির চেয়ারম্যান ইমরানুর রহমান সাঈদকে বেছে নেয়ার কারণ সম্পর্কে বলেন, 'মিয়ানমারের র‌্যাংকিং ছিল ১০৩। সেখানে তার কোচিংয়ে ৮০ তে এসেছিল। ফুটসালে ২৩ র‌্যাংকিং অনেক। ফুটসালে ১৩৯ পর্যন্ত র‌্যাংকিং রয়েছে। আমরা আশা করছি দ্রুতই র‌্যাংকিং সিস্টেমে প্রবেশ করতে পারব।

ফিফা-এএফসি গাইডলাইনে বাফুফে ফুটসাল কমিটি রাখলেও সেভাবে কার্যক্রম দৃশ্যমান হয়নি। ২০০৮ সালে একটি ঘরোয়া লিগ ছাড়া কিছু করেনি। বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল কোচ নিয়োগের মাধ্যমে ফুটসালকে এগিয়ে নেয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করলেন, আমরা সামনে ফুটসাল লিগ আয়োজন করব। পুরুষদের পাশাপাশি নারী ফুটসাল দল ও লিগও হবে। বিশ্ব যেভাবে চলছে আমাদেরও সেভাবে চলতে হবে।স্ট্যান্ডার্ড ফুটবলেই বাফুফের ভেন্যু সংকট। সেখানে ফুটসালে তো নিজস্ব কিছুই নেই। হ্যান্ডবল ও মিরপুরের ইনডোর স্টেডিয়ামই বাফুফের ভরসা। অবকাঠামো নিয়ে বাফুফে সভাপতি বলেন, 'আমরা নিজেরা এবং সরকার উভয় এক সঙ্গে কাজ করে এই বিষয়টি এগিয়ে নেব।'

বাংলাদেশ পুরুষ ফুটবল দল কখনো এএফসি আসরে খেলেনি। সেপ্টেম্বরে মালয়েশিয়ায় এশিয়ান কাপ ফুটসাল বাছাইয়ে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ। এই টুর্নামেন্ট সামনে রেখেই মূলত তিন মাসের জন্য ইরানী কোচ এনেছে বাফুফে। বাফুফের ফুটসাল কমিটির চেয়ারম্যান ইমরানুর রহমান এই টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি ও প্রত্যাশা নিয়ে বলেন, 'বাস্তবিক অর্থে আমরা ডেথ গ্রুপে পড়েছি। ইরান অত্যন্ত শক্তিশালী এরপরও আমরা চেষ্টা করব। ব্যক্তিগতভাবে আমি অবশ্যই চাই গ্রুপের অন্য দু’টি ম্যাচ জিততে। আমাদের কোচ এসেছে তিনি ৫৩ জন খেলোয়াড়দের দুই ভাগে দেখবেন। কোচিং স্টাফ ও অন্য চাহিদার বিষয়গুলো তিনি জানালে আমরা সেগুলো পূরণের চেষ্টা করব।'

সেপ্টেম্বরে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের চূড়ান্ত স্কোয়াড হবে ১৪ জনের। দুই জন গোলরক্ষক ও ১২ জন আউট ফিল্ড ফুটবলার। এর আগে আগস্টের ১৯ তারিখের মধ্যে বাফুফেকে ২৪ জন ফুটবলারকে এএফসিতে নিবন্ধন করতে হবে। সেই ২৪ জন নির্ধারণ হবে আরেক দফা ট্রায়ালের মাধ্যমে।


আরও পড়ুন