গাজীপুরের কাশিমপুরে সরকারি খাস জমি ভূমিদস্যুদের দখলে
প্রকাশিত: ২১-৭-২০২৫ রাত ৮:৮
গাজীপুরের কাশিমপুরে সরকারি খাস জমি ভূমিদস্যুদের দখলে চলে গেছে, যেখানে সেখানকার দায়িত্বরত কর্মকর্তা নায়েবের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। রাষ্ট্রীয় ১ নং খতিয়ানের এসএ ৮২৫ দাগের ভূমি বিগত আরএস জরিপকালে ৫০০ খতিয়ানের ২৭৭৪ দাগে ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ডভুক্ত হয়। কিন্তু রেকর্ডের সাথে দালিলিক কাগজপত্রের কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। ১ নং খতিয়ানের ভূমির মালিকানার দাবিদার ৫০১২ নং সৃজনশীল দলিলের জালাল উদ্দিনের পিতা ডাক্তার এ কে এম জহিরুল হকের নামে হলেও রেকর্ডে আছে জালাল উদ্দিনের পিতা আজহার আলীর নাম। রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি নিয়ে এত বড় জালিয়াতি দৃশ্যত প্রতিয়মান হলেও অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ভূমি কর্মকর্তা প্রকৃত সত্যকে আড়াল করে বারবার প্রতিবেদন দাখিল করছেন।
আরও জানা যায়, গাজীপুরের কাশিমপুর থানাধীন গোবিন্দবাড়ি মৌজার আরএস ৮২৫ দাগের ৩.৩৯ শতক জমি নিয়ে রীতিমতো তালবাহানা চলছে। গাজীপুর কাশিমপুর থানাধীন পূর্ব এনায়েতপুর গোবিন্দবাড়ি মৌজাস্থ সাবেক ৮২৫ দাগের ৩.৩৯ শতক ভূমি ১ নং খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত হলেও সাবেক আরএস জরিপকালে প্রতারণামূলক লেখনীর মাধ্যমে ৪৮৬/৫০০ খতিয়ানে ২৭৭৪ হালদাগ হয়ে ২.৫৩ শতক জমি আপন ভাইকে পিতা উল্লেখ করে ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড হয়। কাশিমপুর ভূমি অফিসের তথ্য মতে, ২.৫৩ শতক জমি ১ নং খতিয়ানের জমি হিসেবে প্রতীয়মান হলেও কাশিমপুর ভূমি অফিসের বর্তমানে কর্মরত ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) মাত্র ৬ শতক ভূমি ১ নং খতিয়ানের ভূমি হিসেবে চিহ্নিত করেন। বর্তমানে এই ৬ শতক জমির সীমানা নির্ধারণ না করে এর সবটুকু অংশ নিয়ে ভূমিদস্যুরা গোডাউন নির্মাণ করছেন। বিষয়টি ভূমি কর্মকর্তাকে অবগত করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি অজ্ঞাত কারণে কোনো প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না।
গোপন সূত্রে জানা যায়, উল্লেখিত ভূমিতে বসবাসকারী বসতিদেরকে নোটিশ ছাড়া উচ্ছেদের ভয় দেখিয়ে প্রত্যেক বসতির নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছেন। এক্ষেত্রে ২০২৪ সালের ১৪৯ স্মারকের এসিল্যান্ড বরাবর একটি আবেদনপত্র দেখানো হয়েছে। কাশিমপুর ভূমি অফিসের আওতাধীন প্রতিটি মৌজায় ১ নং খতিয়ানের রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে বসবাসকারী মানুষজনের নিকট থেকে মুখ না খোলার শর্তে বিভিন্ন অজুহাতে প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে একটি অসাধু চক্র।
এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে কাশিমপুর ভূমি অফিসের নায়েব মো. আব্দুল লতিফের মুঠোফোনে যোগাযোগ করে সাবেক ৮২৫ নং দাগের ৩.৩৯ একর জমির সাত শতংশের উপর কে বা কারা আবাসন নির্মাণ করছে মর্মে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "সেখানে বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়েছে, কোনো আবাসন নির্মাণ করা হয় নাই।" এছাড়াও উক্ত জমিকে কেন্দ্র করে মামলা করা সহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেন যা একজন ভূমি কর্মকর্তার (নায়েব) নিকট থেকে সাধারণ জনগণ আশা করেন না।
এ ব্যাপারে কাশিমপুর ভূমি কর্মকর্তার (নায়েব) নিকট জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ততা প্রকাশ করে বলেন, "আমি যদি কারও কাছ থেকে টাকা পয়সা নিতাম তাহলে আদালতের রেকর্ড সংশোধনীর মামলা কেন করলাম?" এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে জানা যায় এমন কল্পনাতীত কথা শুধু মনগড়া অসত্য বর্ণনা, যা প্রকৃত সত্যকে আড়াল করার এক অপপ্রয়াস। এমন অসত্য বর্ণনার বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার লক্ষ্যে ভূমি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।