আখাউড়ায় ডিজিএম এর দয়ায় জ্বলে বিদ্যুৎ
প্রকাশিত: ৫-৭-২০২৫ বিকাল ৫:৩৮
আখাউড়া উপজেলা ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ জনবহুল এলাকা।একাত্তরের মহান মুক্তিযোদ্ধের ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত স্থান হিসাবে এর সুখ্যাতি রয়েছে।গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর ও বৃহত্তম রেলওয়ে জংশন থাকায় ট্রানজিট পয়েন্ট হিসাবে আখাউড়া বেশ পরিচিত। দেশের বিভিন্ন জেলার যাত্রী ও ট্যুরিষ্টের উল্লেখযোগ্য যাতায়াত এই জনপদটিকে করেছে আরও সমৃদ্ধ।ফলে রাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে আখাউড়া অতীতের তুলনায় বর্তমানে অনেক গুরুত্ব বহন করে।অসহনীয় লোডশেডিং এই সুখ্যাতি ও অগ্রযাত্রার অন্তরায় বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
চলমান অন্তবর্তিকালীন সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য পল্লীবিদ্যুতের কিছু অসাধু কর্মকতা কৃত্রিম লোডশেডিং দিয়ে বিদ্যুৎ ঘাটতির নাটক করছেন বলে মনে করছেন গ্রাহকরা।লোকমুখে আরও শুনা যায় ৫ই আগষ্টের আগে তৎকালীন সৈরাচার সরকারের আমলেও বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা ছিল নিরবিচ্ছিন।আখাউড়াবাসী জানেন না,বিদ্যুতে প্রায় সয়ংসম্পূর্ন বাংলাদেশে কেন পল্লীবিদ্যুতের কিছু অসাধু কর্মকর্তা আখাউড়ায় মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং দিয়ে জনগনের জীবনকে করছেন দুর্বিষহ।উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়ি ইতিমধ্যেই "আখাউড়া পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি"র আওতাধীন।ফলে বর্তমানে চলমান লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে।প্রতিদিন ঘটাকরে সকাল সাতটা,বেলা বারোটা,বিকাল চারটা, সন্ধ্যা সাতটা ও মাঝরাতে এই লোডশেডিং ভয়াবহতা চরমে পৌঁছেছে।দৈনিক পাঁচ বার প্রায় সাত,আট ঘন্টার লোডশেডিং দেবগ্রাম তথা পৌরসভা ও উপজেলাবাসীর জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে।
পৌরসভার অধিবাসী কামাল দেওয়ান বলেন"আমাদের ইচ্ছায় কারেন্ট পাই না,স্যার যদি ইচ্ছে করেন তখন দেন আবার ওনার ইচ্ছা হলে নিয়ে নেন" জুন জুলাই মাসে অসহনীয় তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে কিন্ডারগার্টেন,প্রাইমারী,হাইস্কুলে মিডটার্ম পরীক্ষা ও এইচএসসি ফাইনাল পরীক্ষা চলমান। লাগাতার এই লোডশেডিং শিশু,ছাত্রছাত্রী,বয়োজ্যেষ্ঠ ও অসুস্থদের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।গ্রাহকরা বলেন এর থেকে পরিত্রাণ পেতে ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ জনগন যার যার অবস্থান থেকে আখাউড়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে মৌখিক অভিযোগ জানালেও কর্তৃপক্ষ তাতে কর্ণপাত করছেন না।দেবগ্রামের ভুক্তভোগী শেখ জাকির হোসেন লিটন লোডশেডিং এর ভোগান্তির বর্ননা ফেইসবুক লাইভের মাধ্যমে কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন,তাতে ও কোনো প্রতিকার না পেয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে দৈনিক সকালের সময় মুঠোফোনে আখাউড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম জহির আব্বাস খাঁন এর নিকট ভয়াবহ লোডশেডিং এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন,প্রতিদিন রক্ষনাবেক্ষন এর জন্য বিদ্যুৎ মাঝেমধ্যে বন্ধ রাখা হয়।দৈনিক পাঁচ বার লোডশেডিং এর কথা তিনি অস্বীকার করেন।আখাউড়ার মোট বিদ্যুতের চাহিদা ও সরবরাহ কত মেগাওয়াট জানতে চাইলে তিনি সদোত্তর দিতে পারেন নি।এ হিসাব ইন্জিনিয়ার জানেন বলে তিনি এড়িয়ে যান।পক্ষান্তরে তিনি উল্টো প্রশ্ন করেন,আপনি জানেন কি গত রমজান মাসেও লোডশেডিং ছিলো।
লোডশেডিং বিস্তারিত জানার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম সাইদুর রহমান এর নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান আমাদের বিদ্যুতের কোন ঘাটতি নেই,আমি মিটিংয়ে আছি পরে বিষয়টি দেখছি। তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও চলমান লোডশেডিং কোন পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি বলে দৈনিক সকালের সময়কে জানান ভুক্তভোগীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি পাঁচটি জোনাল অফিস ও পাঁচটি সাব জোনাল অফিসের মাধ্যমে সেবা দিয়ে থাকে।আখাউড়ার পাশ্ববর্তী অন্যান্য উপজেলায় লোডশেডিং নিয়ে উল্লেখ করার মতো তেমন কোন অভিযোগ নেই বলেও জানান ঐসব এলাকার গ্রাহকরা।
লোডশেডিং এ অতিষ্ঠ অত্র এলাকায় গ্রাহকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।