তানোরে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক বোতলে স্বপ্নের বাড়ি বানালেন আলমগীর

news paper

সোহানুল হক পারভেজ, তানোর

প্রকাশিত: ৫-৭-২০২৫ দুপুর ৩:৫২

145Views

রাজশাহীর তানোর উপজেলায় প্রবাসফেরত আলমগীর হোসেন ২৫ হাজার পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করে তৈরি করেছেন এক ব্যতিক্রমী বাড়ি, যা এখন সবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তানোর উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের ভাগনা গ্রামের বাসিন্দা আলমগীরের এই অভিনব নির্মাণশৈলী স্বল্প খরচে স্বপ্নের বাড়ি তৈরির এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।

বাড়িটিতে দুটি বেডরুম, একটি বাথরুম ও একটি টয়লেট রয়েছে। কাঠ, সিমেন্ট, বালি ও রঙিন টিনের ছাউনি দিয়ে নির্মিত এই বাড়িটির ফিনিশিংয়ের কাজ বর্তমানে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আলমগীর হোসেন জানান, "বিদেশে কাজ করার সময় ইউটিউবে প্লাস্টিক বোতল দিয়ে বাড়ি নির্মাণের একটি ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হই। দেশে ফিরে নিজেই পরিকল্পনা করে বাড়িটি নির্মাণ করি।" তিনি ১২ হাজার টাকা খরচ করে দোকান ও এলাকা ঘুরে ২৫ হাজার বোতল সংগ্রহ করেছেন। এই বাড়িটি নির্মাণে প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, যেখানে একই মাপের একটি সাধারণ বাড়ি নির্মাণ করতে ৬-৭ লাখ টাকা খরচ হতো বলে তিনি দাবি করেন।

প্রায় ৬ মাস সময় লেগেছে এই বাড়িটি নির্মাণ করতে। প্রতিটি বোতলের ভেতরে বালি ও মাটি ভরে ইটের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এসব বোতল সিমেন্ট দিয়ে একত্রে গেঁথে তৈরি করা হয়েছে দেয়াল ও পিলার। উপরে টিনের ছাউনি দেওয়া হয়েছে। আলমগীরের দাবি, তার তৈরি এই বাড়িটি ভূমিকম্প প্রতিরোধী ও বুলেটপ্রুফ।

স্থানীয়রা শুরুতে এটিকে পাগলামি মনে করলেও, এখন চোখের সামনে একটি পরিপূর্ণ বাড়ি দেখে তারা বিস্মিত। স্বল্প খরচে এমন ব্যতিক্রমী ও টেকসই নির্মাণ সবার মাঝে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে।

তানোর উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান 'সকালের সময়'কে বলেন, "এ ধরনের নির্মাণে খরচ কিছুটা কম হয়, এটা ঠিক। তবে এটি কতটা টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব তা পরীক্ষা না করে বলা সম্ভব নয়। তবে আলমগীরের কাজ নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী ও উদ্ভাবনী।"

তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত সালমান 'সকালের সময়'কে বলেন, "প্লাস্টিক সাধারণত পরিবেশ দূষণ করে। কিন্তু আলমগীর যেভাবে তা কাজে লাগিয়ে একটি বাড়ি নির্মাণ করেছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ।"

এই প্লাস্টিক বোতলের বাড়িটি শুধু ব্যতিক্রমী নির্মাণশৈলীই নয়, বরং পরিবেশ-সচেতনতা, সাশ্রয়ী গৃহনির্মাণ এবং নতুন ভাবনার প্রতীক হয়ে উঠেছে তানোরবাসীর কাছে।


আরও পড়ুন