মৌলভীবাজারের শেখ জহিরের বিরুদ্ধে ডিআইজি বরাববরে অভিযোগ দায়ের
প্রকাশিত: ২৬-৬-২০২৫ দুপুর ৪:২৩
মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার মরিছা ভাগহুয়া গ্রামের হাজী ছমছু মিয়ার ছেলে শেখ জহির উদ্দিন এক সময় স্থানীয় পতনউষা বাজারে একটি সামান্য ধান বিক্রির দোকান দিয়ে নিজের জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু বিগত সরকারের শাসন আমলে সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রী সাহাব উদ্দিনের ছত্রছায়ায় থেকে তিনি এখন প্রায় শত কোটি টাকার মালিক। তার রয়েছে রয়েছে নামে বেনামে সহায় সম্পত্তি। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কোদালীপুলে শেখ জহিরের রয়েছে সিএনজি শোরুম, দোতলা বাস ভবন এবং শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পরিবারের নামে রেজিস্ট্রিকৃত জমি ও স্থাপনা। মৌলভীবাজার ছাড়াও সিলেট-ঢাকা এমনকি কানাডাতে তার ও তার পরিবারের নামে সম্পদ রয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। জহিরের এমন উত্তানের পিছনে রয়েছে অনেক না জানা কাহিনী। শেখ জহির উদ্দিন নিজের ভাগ্নে সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি শেখ রুমেল আহমদের ছাত্রছায়ায় এমন সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিগত ২০০৮ সালের পর থেকে শেখ জহিরের উত্তান শুরু হয়। বাড়তে থাকে সম্পদের পারিমান। এক সময় যিনি মৌলভীবাজার শহরে থাকতে নিজের বাসা ভাড়া দিতে হিমসিম খেতেন, তিনি এখন বিপুল সম্পদের মালিক। তার ও তার ভাগ্নের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার শহরের নিরীহ মানুষের সম্পত্তি দখল করে আত্মসাৎ করার অভিযোগ বহু বছর ধরেই শোনা যাচ্ছে। কিন্তু দলীয় প্রভাবের কারণে সব-সময় থেকেগেছেন আইনের ধরাছোঁয়ার বাহিরে। জহিরের ভাগ্নে শেখ রুমেল আহমদ চেয়ারম্যান পদে থাকাকালে তার রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে সরকারি বিভিন্ন কাজ ও সুবিধা হাসিল করেছেন জহির। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতন ও হয়রানির ঘটনায় শেখ জহিরের সম্পৃক্ততার অভিযোগ বেশ পুরানো। বিশেষ করে ২০১৮ সালের আগে একটি ঘটনায় বিএনপির সিনিয়র নেতা সৈয়দ মঈনুল হকের স্ট্রোক করে মৃত্যুর জন্য স্থানীয় লোকজন এই জহিরকেই দায়ী করেন। গত বছরের ৫ই আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এখন তিনি বিএনপির ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে থাকা শেখ জহির বর্তমানে রাজনৈতিক অবস্থান বদলে বিএনপি নেতাদের সান্নিধ্যে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়ে বিএনপি নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় নিচ্ছেন। যেন আগের সকল অপরাধ ও বিতর্কিত সম্পত্তির বিষয়ে কেউ প্রশ্ন না তোলে। ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর শেখ রুমেল আহমদ দেশের বাইরে চলে যান, তিনি এখন আত্মগোপনে রয়েছেন। তবে শেখ জহির এখনও সক্রিয় ভাবে ভাগ্নে রুমেলের সকল ব্যবসা পরিচালনা করছেন। পলাতক ভাগ্নের অর্থ, সম্পদ ও বিভিন্ন লেনদেন এখন তিনি দেখভাল করছেন। সম্প্রতি ২৬/৬/২০২৫ ইং তারিখে সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি বরাবরে শেখ জহিরের বিরুদ্ধে এমন একটি অভিযোগ করেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। অভিযোগে তিনি উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো তুলে ধরে প্রশাসনসহ দুদকের হস্থক্ষেপ কামনা করেন।