পারুল বিশ্ববিদ্যালয়ে এভিয়েশন ম্যানেজমেন্টে পড়ার সুযোগ পেলেন মনিষা
প্রকাশিত: ২৫-৬-২০২৫ দুপুর ১২:৩৮
ভারতের গুজরাটে অবস্থিত পারুল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ পেয়ে এভিয়েশন ম্যানেজমেন্টে অনার্সে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার দরিদ্র পরিবারের মেয়ে মনিষা বিশ্বাস। কাঠমিস্ত্রীর কন্যা মনিষার এই অর্জন ইতিমধ্যেই তার পরিবার ও এলাকার গর্বে পরিণত হয়েছে।
মনিষা জানান, তিনি প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত প্রতিটি স্তরেই জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ২০১৯ সালে এসএসসি এবং ২০২৩ সালে এইচএসসি পাশ করেছেন যথাক্রমে হারতা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও শহীদ স্মরণিকা ডিগ্রি কলেজ থেকে।
শুধু একাডেমিক অর্জন নয়, পরিবারের আর্থিক দুরবস্থার মাঝেও তার উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন একটুও কমেনি। বাবা কাঠমিস্ত্রীর আয় দিয়েই চলে পরিবারের পাঁচ সদস্যের ভরণপোষণ। গ্রামের স্কুলে হেঁটে যাওয়া, টিউশনি করে নিজের খরচ চালানো এবং বরিশালে প্যাথলজিতে ডিপ্লোমা অধ্যয়ন চলাকালীন সময়েও একইসঙ্গে এইচএসসি শেষ করা—এসবই মনিষার অধ্যবসায়ের বাস্তব উদাহরণ।
প্যাথলজিতে ইন্টার্নশিপ শেষ করে এক বেসরকারি ল্যাবে চাকরি করলেও সেখানে খুব বেশি আয় না থাকায় ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন তিনি। ঠিক সেই সময় এক বন্ধুর সহযোগিতায় পারুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেন এবং পেয়ে যান কাঙ্ক্ষিত স্কলারশিপ।
মনিষা বলেন, “আমি খুবই আনন্দিত। এতো কষ্ট, সাধনার পর এই স্বপ্ন বাস্তব হতে চলেছে ভাবতেই ভালো লাগছে। পরিবারের পাশাপাশি আমার বন্ধু শুভ্র, শিক্ষক, শুভাকাঙ্ক্ষী—সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। সঠিক গাইডলাইন ও কঠোর পরিশ্রম ছাড়া এই পথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব হতো না।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি একটি প্রতিযোগিতামূলক ও কঠিন অধ্যায়। এর জন্য প্রয়োজন লক্ষ্য স্থির রাখা, অধ্যবসায় এবং ধৈর্য।”
মনিষার এই সাফল্য প্রমাণ করে, সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে শিক্ষায় এগিয়ে যাওয়া সম্ভব—যদি থাকে লক্ষ্য, নিষ্ঠা আর লড়াইয়ের সাহস।