গুরুদাসপুরে আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে ৪৫ লাখ টাকা প্রতারনার অভিযোগ
প্রকাশিত: ২৩-৬-২০২৫ দুপুর ৩:৪৭
আওয়ামী লীগের দাপট দেখিয়ে খ্রীষ্টান এক নারীর সাথে ৪৫ লাখ টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সক্রীয়কর্মী আজিম হোসেনের বিরুদ্ধে। এঘটনায় ভুক্তভোগি ওই নারী টাকা উদ্ধারে গুরুদাসপুর থানা ও সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগি নারীর নাম বিমলা কস্তা (৪৫)। তিনি গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের মহারাজপুর গ্রামের খোরশেদ আলমের স্ত্রী। প্রতারক আজিম হোসেন একই গ্রামের সোলায়মান আলীর ছেলে। এই ব্যক্তি আওয়ামী লীগের নাটোর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর ঘনিষ্ট। রবিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন বিমলা কস্তা।
বিমলা কস্তা তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, বছর দুয়েক আগে মহারাজপুর মৌজার ৩২৬, ২৭১/১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত ৮৪৫ ও ৮৪৪ নম্বর দাগে মোট চার বিঘা জমি বিক্রির জন্য অভিযুক্ত আজিম হোসেনের সাথে ৫৮ লাখ টাকায় মৌখিক চুক্তি করেন। সেসময় ১ বিঘা জমি বাবদ ১৩লাখ টাকা পান বিমলা কস্তা। বিমলা কস্তা কাগজপত্রাদি না বোঝায় কৌশলে ৪ বিঘা জমিই রেজিষ্ট্রি করে নেন আজিম হোসেন। বাকি ৪৫ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য একাধিকবার সময় নিয়েও তা পরিশোধ করেননি।
বিমলা কস্তা বলেন, জমিটি তিনি ৩০ বছর আগে স্থানীয় মমতাজ খাঁর কাছ থেকে কিনে ছিলেন। কিন্তু তার পিতার বাড়ি ঢাকায় হওয়ায় গ্রামের বাড়ি ছেড়ে তারা ঢাকায় পাড়ি জমান। বছর দুয়েক আগে স্বামী অসুস্থ হওয়ায় জমিটি বিক্রির প্রয়োজন পড়ে। ৫৮ লাখ টাকায় জমিটি কেনার জন্য আওয়ামী লীগের দাপট দেখিয়ে আজিম হোসেন প্রস্তাব দেন। অভাবে পড়ে তিনিও রাজি হন।
তিনি আরো বলেন, গ্রামের অন্তত ১০জন স্বাক্ষীর সামনে তাকে ১৩ লাখ টাকা দেন আজিম। এই টাকায় প্রথমে একবিঘা জমি রেজিষ্ট্রি করার কথা থাকলেও কৌশলে আজিম নিজের নামে ৪ বিঘা জমিই লিখে নেন। বিষয়টি জানাজানি হলে, আজিম বাকি ৪৫ লাখ টাকা দিতে বার বার সময় নেন। একপর্যায়ে টাকা চাইলে আওয়ামী লীগের দাপট দেখিয়ে হত্যার হুমকিও দেন। এজন্য তিনি সেনা ক্যাম্প এবং থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত আওয়ামী লীগকর্মী আজিম হোসেন ভুক্তভোগি বিমলা কস্তার সাথে ৪৫ লাখ টাকা প্রতরণার বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং বলেন তিনি বিমলা কস্তাকে সমপুর্ণ টাকা দিয়েই জমি রেজিষ্ট্রি করে নিয়েছেন।
গুরুদাসপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হান্নান বলেন, ভুক্তভোগি বিমলা কস্তার অভিযোগটি তিনি পেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি তদন্ত শুরু করেছেন। ভুক্তভোগিকে ন্যায় বিচার পাওয়াতে তিনি শতভাগ আইনি সহায়তা দিবেন।
গুরুদাসপুর সহাকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় বিমলা কস্তার কাছ থেকে কেনা জমিটি আজিম হোসেনের নামে নামজারি করা হয়নি। প্রতারণার শিকার নারীকে পাওনা টাকা বুঝিয়ে দিতে প্রতারক আজিম হোসেনকে অনুরোধ করা হয়েছে।