দেবীগঞ্জে কৃষকলীগের সভাপতি সুকুমারের প্রকাশ্যে প্রতারনার ব্যবসা দেখার কেউ নাই

news paper

সাইদুজ্জামান রেজা, পঞ্চগড়

প্রকাশিত: ২২-৬-২০২৫ দুপুর ২:২৭

245Views

দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৎকালীন রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ও দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম এমুর ছত্রছায়ায় থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া সোনাহার ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি সুকুমার চন্দ্র রায় এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। প্রকাশ্যে চলছে প্রতারনার ব্যবসা। এতে উপজেলার সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন সংগঠনের রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ,সুকুমার নামে এ নেতা দীর্ঘদিন ধরে গণনা ও তান্ত্রিকতার নামে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ হলেও ক্ষমতাশীল সরকারের ছত্রছায়ায় থাকায় ব্যবস্থা নেয়নি কেউ। সুকুমার রায় ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্বাচনের প্রধান অর্থ দাতা। তাই দীর্ঘ ১৭ বছর প্রকাশ্যে প্রতারনার ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।
তার খপ্পরে পড়ে নিজের জমানো টাকা খুইয়েছে হাজার হাজার মানুষ। আর এ টাকা দিয়েই বনে গেছে কোটি টাকার মালিক। গণনা ও তান্ত্রিকতার নামের আড়ালে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন তিনি।অবৈধ আয়ের উৎস হতে সোনাহার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করার পরিকল্পনাও নেন সুকুমার। স্থানীয়রা আরো জানান,গত ১০ বছর আগেও সুকুমারের বাঁশের বেড়া আর টিনের ঘর ছিল।এখন তার ঘরবাড়ি দেখলেই অনুমান করা যায়,প্রতারণার কারবার ভালোই জমে উঠেছে তার।দূরদূরান্ত থেকে নানা সমস্যা ও জটিল অসুখ নিয়ে যারা আসছে, তাদের সমস্যাকে অনেক টাই জিম্মি করে, ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সে কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।

সুকুমার প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার ভাগ্য গণনা এবং সমস্যার সমাধান দিতে বসেন তার বাড়িতে।সে সোনাহার সর্দারপাড়া এলাকার চন্দ্রকান্ত রায় এর ছেলে।তার দর্শন ফি ১১০ টাকা।আর চিকিৎসা ব্যয় হিসেবে রোগের ধরন দেখে পরে রোগী প্রতি ৫ হাজার থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত এছাড়া টাকা নেন দফায় দফায়।

লক্ষীরহাট এলাকার হরেন রায় বলেন,আমার কিছু সমস্যার জন্য সুকুমারের কাছে গেছি।সে তেমন কিছুই জানেন না।সংস্কৃত ভাষার লিখিত চাদর পরে গুটি কয়েক মন্ত্র দিয়ে মানুষের মগজ ধোলাই করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা।

এ বিষয়ে সুকুমার চন্দ্র রায় বলেন,আমার বাড়িতে ভাংচুরের সময়ে পুলিশ আসে দেখে গেছে।আর আমি যেহেতু কোন অপরাধের সাথে জরিত না, সেহেতু পুলিশ কেন আমাকে আটক করবে।গণনা ও তান্ত্রিকতার নামে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করার বিষয়ে তিনি বলেন,আমি মায়ের সেবক।মায়ের নাম করে মানুষের সেবা করি।

মোঃ আশিকুর রহমান টুটুল প্রধান সোনাহার মল্লিকাদহ ইউনিয়নের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সোনাহার ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি প্রকাশ্যে প্রতারনার ব্যবসা কিভাবে করছেন আমার বোধগম্য না, দেবীগঞ্জ ইউএনও ও ওসি মহোদয় আশা করি ব্যবস্থা নিবেন।

এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো.সোয়েল রানা জানান,আমরা জানি আওয়ামীলীগের লোকজন সবাই পলাতক আছে।সুকুমার এজাহার ভুক্ত কোন আসামী না তারপরও বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন তিনি।

দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদুল হাসান জানান,কেউ প্রতারনার ব্যবসা করলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরও পড়ুন