মাগুরায় গণঅধিকার পরিষদে বড় ধাক্কা: একযোগে ১০০ নেতাকর্মীর পদত্যাগ
প্রকাশিত: ২১-৬-২০২৫ দুপুর ১১:৪৬
গত ২ জুন সোমবার বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ, মাগুরা জেলার আংশিক কমিটি আগামী ১বছরের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছিলো। ৬০ সদস্যের এ কমিটিতে ওবায়দুল্লাহ বিন হাফিজারকে সভাপতি ও মোঃ রাজিব মোল্যাকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে এস এম জুয়েল রানাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মনজুর মোরশেদ মামুন ও সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান এর স্বাক্ষরিত কমিটিতে সাতজনকে সহ-সভাপতি করা হয়। এছাড়া আট জনকে করা হয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
কিন্তু কমিটি ঘোষণার ১ মাস পুর্ণ না হতেই গণঅধিকার পরিষদের জেলা কমিটিতে থাকা এক সাথে ১০০ এর অধিক নেতাকর্মী তাদের স্বইচ্ছাই পদত্যাগ করেছেন।গতকাল শুক্রবার বিকাল ৫:৩০ এ সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের মাগুরা জেলার সহ-সভাপতি মোহাম্মদ রাসেল মজুমদার এই পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
তারা কারণ হিসাবে বলেন,গণঅধিকার পরিষদ এর গঠনতন্ত্রের সাথে সাংর্ঘষিক, সাংগঠনিক পরিপন্থী কর্মকাণ্ড, অগণতান্ত্রিক কার্যক্রম একনায়কতন্ত্র, বৈষম্যভিত্তিক চিন্তাধারা এবং কমিটি বানিজ্যের মত নোংরা রাজনীতির চর্চা সম্প্রতি সময়ে আমাদের নজরে এসেছে। আমরা মাগুরা জেলা গণঅধিকার পরিষদ এর প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে মাগুরাবাসীকে একটি গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন এবং সুস্থ ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রত্যেকেই ব্যক্তিগত অর্থায়নে সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলাম।
একইসাথে আমরা জুলাই অভ্যুত্থানে সাবেক স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে লড়াই করে বিভিন্নভাবে আহত হয়েছি। আমরা তরুণ প্রজন্ম গণতান্ত্রিক ব্যবহার মধ্য দিয়ে অতীতের স্বৈরাচারী আচরণ, একনায়কতন্ত্র এবং প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে জনগণকে একটি সুস্থধারার রাজনীতি চর্চার সুযোগ দিতে সব সময় তরুণদের মধ্যে অনুপ্রেরণা মূলক বার্তা পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে গিয়েছি।কিন্তু সম্প্রতি সময়ে গণঅধিকার পরিষদ যেভাবে পরিচালিত হচ্ছে তা দেশবাসীর কাছে দেওয়া আমাদের পূর্বের অঙ্গিকার এবং কার্যক্রমের সাথে সম্পুর্ণ সাংঘর্ষিক। এমতাবস্থায় কয়েকবার বিষয়গুলো কেন্দ্রীয় সংসদ কে অবগত করার পরেও তেমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের চিত্র দেখা যায়নি।উল্টো স্বৈরাচারী মনোভঙ্গি, একনায়কতন্ত্র, সিন্ডিকেটের মত একপাক্ষিক ক্ষমতা এবং কমিটি বানিজ্যের মত প্রতারণার আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে যা সম্প্রতি মাগুরা জেলার যুব অধিকার পরিষদ এর কমিটি গঠনে পরিষ্কার উঠে এসেছে।
এমতাবস্থায় ন্যায়নীতি এবং বিবেকের জায়গা থেকে জাতির সাথে রাজনীতি নামে ধোঁকাবাজি তামাশা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না।
তারা আরো বলেন, গণঅধিকার পরিষদ এর জন্মলগ্ন ও নিবন্ধন থকে শুরু করে জীবন বাজি রেখে সাবেক ফ্যাসিস্ট আওয়ামিলীগ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করেও আজ আমরা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি যা শুধুমাত্র পরিচ্ছন্ন রাজনীতি, ন্যায়নীতি এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কে বাধাগ্রস্থ করার জন্য। তবুও হাতে হাতে গড়া বহু ত্যাগ ও লড়াই সংগ্রামের সংগঠন থেকে পদত্যাগ করার একটাই বার্তা দেশবাসী ও তরুণ প্রজন্ম কে দিতে চায় সেটি হলো ব্যক্তির চেয়ে দল বড়আর দলের চেয়ে আমাদের দেশ বড়।তাই আমরা তরুণ প্রজন্ম কোনো ব্যক্তি, দল কিংবা আমাদের এতোদিনের সংগ্রামের অবদানকে পিছনে ফেলে আজ দেশের জন্য গণঅধিকার পরিষদ থেকে পদত্যাগ করছি।
বাস্তবতা এটাই গণঅধিকার পরিষদ এর লক্ষ্য উদ্দেশ্যের সাথে কাজের কোন মিল নেই। নব্য এই ফ্যাসিজমের সংগঠনের সাথে নিজেদের কে জড়িয়ে বিবেকের জায়গা থেকে দেশবাসীর সাথে আর প্রতারণা করতে পারি না।
তবে তারা জানিয়েছেন, প্রিয় দেশবাসী, জনগণের অধিকার, পরিচ্ছন্ন রাজনীতি এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সচল রাখতে আমরা জনগণের জন্য রাজনীতির মাঠে থাকবো।তবে এই মুহুর্তে আমরা নতুন কোনো রাজনৈতিক সংগঠন এর সাথে যুক্ত হওয়ার চিন্তাভাবনা করি নাই।
এমন কোন সিদ্ধান্ত আসলে অবশ্যই সকলকে অবগত করা হবে।