আলোচনায় অছাত্র, বিবাহিত ও চাকরিজীবীরা
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘিরে বিতর্ক
প্রকাশিত: ১৮-৬-২০২৫ রাত ১০:৩৭
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের প্রস্তুতি ঘিরে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা ও বিতর্ক। বিগত চার বছর ধরে স্থগিত থাকা আহ্বায়ক কমিটির স্থলে এবার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের তোড়জোড় চলছে। তবে আলোচনায় উঠে এসেছে অছাত্র, বিবাহিত এবং চাকরিজীবীদের নাম—যা নিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৬ জুন ইমরান হোসেন প্রধানকে আহ্বায়ক ও আল আমিনকে সদস্য সচিব করে গঠিত ২৭ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ ছিল মাত্র তিন মাস। কিন্তু প্রায় চার বছর পেরিয়ে গেলেও কমিটি পুনর্গঠনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বরং ওই কমিটির অধিকাংশ সদস্যই বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নন; অনেকে বিবাহিত, কেউবা চাকরিতে নিয়োজিত।
সভাপতি পদপ্রত্যাশীদের তালিকায় আলোচিত কয়েকজন
আলোচনায় শীর্ষে রয়েছেন বর্তমান যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ মহিউদ্দিন। তিনি ২০১৩-১৪ সেশনের চারুকলার শিক্ষার্থী এবং ২০১৭-১৮ সেশনে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। বর্তমানে বিবাহিত ও এক পুত্র সন্তানের জনক মহিউদ্দিন—যার বিবাহের প্রমাণ ও সন্তানের টিকা কার্ডও কমিটি টিম লিডারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। তিনি ফুলবাড়িয়ার করিম সরকার ও ডা. লিটন অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
সভাপতি পদে আরও আলোচনায় রয়েছেন ইমরান হোসেন ফরাজী, যিনি ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী এবং পারিবারিকভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির ও ডা. লিটনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ইমরান 'ক্লিন ইমেজ'-এর কারণে তৃণমূলের কাছে জনপ্রিয়।
এছাড়া, আলোচনায় রয়েছেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিমেল আহমেদের অনুসারী মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব। হাবিবের বিরুদ্ধে রয়েছে ছাত্রলীগ পুনর্বাসন ও রাজনৈতিক পরিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ডে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির এবং জয়নাল আবেদীনের অনুসারী বলে পরিচিত।
২০১৫-১৬ সেশনের আরেক নেতা মারুফ হাসান সরকার (মামুন) পরিচিত ক্লিন ইমেজধারী হিসেবে। তবে তার বিরুদ্ধেও রয়েছে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ। তিনি সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ হোসাইনের অনুসারী।
২০১৯-২০ সেশনের তোফায়েল ইসলাম আলোচনায় থাকলেও, তার বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের পূর্বে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ রয়েছে। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর অনুসারী।
এছাড়া একই সেশনের মোঃ শাকিল আহমেদ কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ওমর সানী এবং সাইফ মাহমুদ জুয়েলের অনুসারী। তবে তার বিরুদ্ধে রয়েছে শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ।
তৃণমূলের অসন্তোষ ও প্রশ্নবিদ্ধ গ্রহণযোগ্যতা
তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ছাত্র রাজনীতির আদর্শ ও নিয়ম উপেক্ষা করে অছাত্র ও অযোগ্যদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হলে তা সাংগঠনিক দুর্বলতা তৈরি করবে এবং দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।
নেতাকর্মীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয়, নিয়মিত ক্লাস করা প্রকৃত ছাত্রদের দিয়েই যেন নতুন নেতৃত্ব গঠন করা হয়। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ছাত্রদল যেন স্বচ্ছ যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে সময়োপযোগী ও ত্যাগী নেতৃত্বকে মূল্যায়ন করে—এই আহ্বান জানান তারা।