সাতক্ষীরায় এমপি পুত্র রুমনের বিরুদ্ধে মাদক, প্রতারণা ও জমি জবরদখলের গুরুতর অভিযোগ
প্রকাশিত: ১৮-৬-২০২৫ দুপুর ৪:০
সাতক্ষীরায় ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী সাবেক নারী সংসদ সদস্যের পুত্র সাফায়েত সারোয়ার রুমনের বিরুদ্ধে উঠেছে চাঞ্চল্যকর মাদকাসক্তি, প্রতারণা, জমি জবরদখল এবং অস্ত্রসহ আটকের অভিযোগ। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, মায়ের রাজনৈতিক প্রভাব ও ক্ষমতার জোরে দীর্ঘদিন ধরেই তিনি এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
রুমন সাতক্ষীরা শহরের রাজ্জাক পার্ক সংলগ্ন এলাকায় বিলাসবহুল বাড়িতে বসবাস করেন। তার বাবা মৃত রুহুল আমিন, এবং বড় ভাই আমেরিকায় প্রবাসী। রুমনের মা রিফাত আমিন ২০১৮ সালে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং বর্তমানে তিনি সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মায়ের ক্ষমতার প্রভাবে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন রুমন। মাদকাসক্ত হয়ে পড়ার পরপরই তিনি গড়ে তোলেন একাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী। অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার বাসায় মাদকসেবন ও নারী দিয়ে ব্ল্যাকমেইলের জাল বিস্তার করেন। বিলাসবহুল গাড়িতে বহিরাগতদের আনাগোনা ছিল নিয়মিত। একইসঙ্গে তিনি ভয়ভীতি ও মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে নিজের মা’কে সম্পত্তি লিখে দিতে বাধ্য করেন।
একপর্যায়ে রিফাত আমিন বাধ্য হয়ে রুমনের নামে জমি রেজিস্ট্রি করে দেন এবং নিরাপত্তার স্বার্থে আমেরিকায় থাকা বড় ছেলের কাছে চলে যান। মায়ের বিদেশে থাকার সুযোগে রুমন সম্পত্তি বিক্রির উদ্যোগ নেন। ঢাকার ‘প্রসাদ নির্মাণ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানির কাছে প্রায় ৫ কোটি টাকায় তিনি সাতক্ষীরার কাটিয়া মৌজার ২৬.৪০ শতক জমি বিক্রি করেন। তবে টাকা নেওয়ার পরও জমির দখল বুঝিয়ে না দিয়ে তা গায়ের জোরে দখল করে রাখেন রুমন।
জমির দলিল অনুযায়ী, জমিটি সাতক্ষীরা সদর কাটিয়া মৌজার ২৩৭৭ হোল্ডিংয়ে, খতিয়ান নং BRS-২৩১১ এবং দাগ নং BRS-৪৮৪৮ অনুযায়ী ২৬.৪০ শতক জমি।
জমি বিক্রির পর গ্রাহকের দখল না দিয়ে রুমন শুরু করেন নানা তালবাহানা। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেকে অপরাধ জগতের একজন প্রভাবশালী 'বাদশাহ' হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান।
সম্প্রতি একটি সেনা অভিযানে তার বাড়ি থেকে বিদেশি অস্ত্র ও ৩০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। অভিযান শেষে সেনাবাহিনীর হাতে আটক হন তিনি। ফলে পুনরায় আলোচনায় আসেন এই এমপি পুত্র, যাকে স্থানীয়রা ‘অপরাধ জগতের গডফাদার’ হিসেবেও আখ্যা দিচ্ছেন।
স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, রুমনের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে এলাকাবাসীকে তার সন্ত্রাস ও প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।