তানোরে খাল খননের নামে সাগর চুরি
প্রকাশিত: ১৬-৬-২০২৫ দুপুর ২:৯
তানোরে খাল (খাড়ি) সংস্কারে পুকুর নয়, যেন সাগর চুরি করা হচ্ছে। এমন আশঙ্কায় স্থানীয়দের মাঝে চরমক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। অবিলম্বে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির বিনোদপুর বাজার ব্রিজ থেকে পশ্চিমে ৮০০ মিটার আর পূর্বে তালন্দ ইউপির লালপুর খাল পর্যন্ত ৮০০ মিটার মোট ১৬শ মিটার ওই খাল সংস্কারের কাজ হাতিয়ে নেয় এসকেএস নামক এক ফাউন্ডেশন সংস্থা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পিকেএসএফ পল্লি কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন মাধ্যমে অর্থ ছাড়ে মূলত খরা মোকাবেলায় প্রজেক্টটি তৈরি করা হয়। এতে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরে মার্চ মাসের প্রথমে টেন্ডার আহ্বান করে সংস্থাটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিধিমতে সংস্কার কাজ উদ্বোধন করেন ইউএনও লিয়াকত সানমান। সিডিউল অনুযায়ী এ খাল সংস্কার কাজের গড় প্রস্থ ২৬ ফিট, গভীরতা ১১ ফিট ও দৈর্ঘ্য ১৬০০ মিটার নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু উদ্বোধনের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দেখভাল উদাসীনতায় ভেকু মেশিন দিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে খাড়িটি সিডিউলের অর্ধেক পরিমাণ সংস্কার কাজ করছে সংস্থাটি। এতে করে সরকারের খালটি উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে। এলাকাবাসীর ভাষ্য অনুযায়ী, খালটির খনন কাজ হচ্ছে না যথাযথভাবে। কেবলমাত্র নিয়মরক্ষার খাতিরে অল্প পরিসরে খালের দু’ধার চেছে সমান করা হচ্ছে।স্থানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, ওই খালটির পূর্বের গভীরতা ছিল অন্তত ৭/৮ ফিট। কিন্তু বর্তমানে পূর্বের ন্যায়ে লোক দেখানোর জন্য খালের তলা ও দু’ধার সামান্য চেছে কাজ করা হচ্ছে। এভাবে খাল সংস্কার করা হলে এক সময় এটি যেন একটি ড্রেনে পরিণত হবে। যার ফলে ওই খালে পানি প্রবাহে গতিরোধ হবে এমনটি বলছেন এলাকার সচেতন মহল। এসকেএস ফাউন্ডেশনের রাজশাহীর তানোরের প্রজেক্ট কো-অডিনেটর আরাফাত ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। পরে ওই ফাউন্ডেশনের কমিউনিটি মোবিলাইজেশন অফিসার অনুপ কুমার মণ্ডলের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বিনোদপুর খাড়ি সংস্কার কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন ফিনিসিং কাজ চলছে, অফিসে আসেন কথা হবে বলে তিনি। এ ব্যাপারে ইউএনও লিয়াকত সালমান বলেন, ওই খাল সংস্কার কাজ উদ্বোধনের পর আমার আর খোঁজ নেওয়া হয়নি। যদি খাল খনন সংস্কারে অনিয়ম হয়ে থাকে আগামী দু’য়েক দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।