ভুরুঙ্গামারীতে ভিজিএফ এর চাল বিতরণে অনিয়ম ও তালিকায় সরকারী-বেসরকারী চাকুরিজীবীদের নাম
প্রকাশিত: ১৬-৬-২০২৫ দুপুর ১:২০
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে ভিজিএফ এর চাল বিতরণে অনিয়ম পাওয়া গেছে। উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নে ঈদুল আযহা উপলক্ষে হতদরিদ্র পরিবারের জন্য বরাদ্দ দেয়া ভিজিএফ এর চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তালিকায় হতদরিদ্রদের নামের পরিবর্তে অন্তভূৃক্ত করা হয়েছে সরকারী-বেসরকারী শিক্ষাকসহ প্রায় দুই হাজার ব্যক্তির নাম। অভিযোগ রয়েছে এসব নামের বিপরীতে বরাদ্দ দেয়া ১০কেজি চালের স্লিপ চেয়ারম্যান -মেম্বারা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল।তবে চাল বিতরণে সময় সচেতন জনতা বাধা দেয়ায়, এ-সব বেনামী স্লিপের চাল উত্তোলন করতে পারেনি চাল ব্যবসায়ীরা।
ঈদুল আযহা আগের দিন(০৬)জুন বিতরণ শেষে গুদামে থেকে যায় প্রায় সাড়ে ১৮মেট্রিক টন চাল।ভিজিএফ এর তালিকায় অনিয়ম রয়েছে বলে এ-সব চাল বিতরণ করা হয়নি। ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নে ঈদুল আযহা উপলক্ষে পাঁচ হাজার ৭৪৫জন, হতদরিদ্র পরিবারের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়, ৫৭ দশমিক ৪৫ মেট্রিক টন চাল।জন প্রতি হতদরিদ্র পরিবারের মানুষ পাবেন,১০কেজি চাল।এ-সব হতদরিদ্র মানুষের তালিকা তৈরি করে চেয়ারম্যান- মেম্বারা।পরে উপজেলা কমিটি যাচাই বাছাই করে তালিকা অনুমোদন দেন। তবে ৮ নং বলদিয়া ইউনিয়নের হতদরিদ্র পরিবারের মানুষের নাম বাদ দিয়ে প্রায় দুই হাজার সচ্ছল ও চাকুরিজীবীদের নাম অন্তভক্ত করা হয়।তালিকায় দেখা যায়, ২৫৭ নম্বরে রয়েছে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক আশরাফুজামান, ২৫৮ নম্বরে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক,আরমান আলীর নাম। ১১৩৮ নম্বরে তালিকায় রয়েছে শ্রী স্বপন কুমার সরকার, তিনি বলদিয়া আদশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষাক।২৯২১,নম্বরে রয়েছে রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী,২৯৩৯,নম্বরে রয়েছে লুৎফর রহমান, তিনি সেচ্ছাসেবক দলের নেতা।২৯৪৯, নম্বরে রয়েছে আইনুল হক নামে একজন সচ্ছল ব্যক্তি।এভাবে সচ্ছল পরিবারের মানুষের নাম তালিকায় অন্তভক্ত করা হয়েছে। শিক্ষাক, আশরাফু জামান,জানান, কিভাবে ভিজিএফ এর তালিকায় আমার নাম অন্তভক্ত করা হয়েছে সেটা তিনি জানেন না।সহকারী শিক্ষাক,আরমান আলী বলেন ভিজিএফ এর চাল পাওয়ার মতো লোক আমি না।কিভাবে য়ে তালিকায় আমার নাম আসলো আমি তা বলতে পারি না।ভিজিএফ এর তালিকায় তার নাম থাকায় তিনি সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন। অথচ তিনি কখনই ভিজিএফ এর চাল উত্তোলন করেননি।লুৎফর রহমান জানান, আমার নাম তালিকায় দেখে আমি হতভম্ব হয়েছি।কারা তালিকায় আমার নাম দিয়েছে তা আমি জানি না।এসব নাম দিয়ে চাল বিক্রি করে দেয় চেয়ারম্যান মেম্বারা।তিনি তদন্ত করে এ সব চেয়ারম্যান মেম্বারদের বিচার দাবী করেন। গত (০৬) জুন ঈদুল আযহা আগের দিন হাজারো হতদরিদ্র পরিবারের মানুষ চাল নিতে এসে সারাদিন ধরে বসে থেকে চাল না পেয়ে সন্ধায় খালি হাতে বাড়িতে ফিরেন। এদের মধ্যে অনেকে ঈদুল ফিতরে চাল পেলেও এবার তারা চাল পাননি।এদের মধ্যে অনেকে অভিযোগ করেন তাদের,স্লিপ চেয়ারম্যান মেম্বারা বিক্রি করে দিয়েছে।বলদিয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক জানান,গত ঈদুল ফিতরের তালিকা দিয়ে চাল বিতরণ করা হয়েছিল,সেই তালিকা দিয়ে এবারো ও চাল বিতরণ করা হয়েছে। তালিকায় ভুল করে কিছু স্বচ্ছল ব্যক্তির নাম অন্তভক্ত করা হয়েছে। চাল বিতরণের দায়িত্বে থাকা ট্যাগ অফিসার রবিউল ইসলাম বলেন, চাল বিতরণের শেষ দিনে (১৮৪০)জন তালিকা ভুক্ত ব্যক্তি চাল নিতে আসেন নাই। এই সব ব্যক্তির বিপরীতে প্রায় সাড়ে ১৮ মেট্রিক টন চাল গুদামে সীল গালা করে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার নিবাহী অফিসার জনাব,গোলাম ফেরদৌস, বলেন তালিকা ত্রুটিপূণ হাওয়ায় চাল বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে নতুন তালিকা তৈরি করে চাল বিতরণ করা হবে।