সিএনজি চালকদের কাছে জিম্মি ঈদের যাত্রীরা, নাগরপুর প্রশাসনের নিরবতা
প্রকাশিত: ৫-৬-২০২৫ রাত ১১:২৬
পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ গ্রামে ফিরছেন। টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার অন্তত ১২টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষও ঈদের ছুটিতে বাড়িমুখো। তবে এই আনন্দঘন সময়ে নাগরপুরের বটতলা এলাকায় যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকদের লাগামহীন ভাড়া বৃদ্ধিতে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের।
৫ জুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে বটতলা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রী পরিবহনে দ্বিগুণ পর্যন্ত ভাড়া আদায় করছেন চালকরা। যাত্রীরা বলছেন, তারা কার্যত ‘জিম্মি’ অবস্থায় রয়েছেন।
বিভিন্ন রুটে ভাড়ার তালিকা (স্বাভাবিক বনাম ঈদকালীন):
বটতলা - ভাদ্রা: ৩০ টাকা → ৪০-৫০ টাকা
বটতলা - তেবাড়িয়া: ৩০ টাকা → ৪০ টাকা
বটতলা - গয়হাটা: ১০ টাকা → ২০ টাকা
বটতলা - খোরশেদ মার্কেট: ২০ টাকা → ৩০ টাকা
বটতলা - সহবতপুর: ২০ টাকা → ৩০ টাকা
বটতলা - টাঙ্গাইল শহর: ৭০ টাকা → ১৫০ টাকা
বটতলা - চৌহালী: ৪০ টাকা → ৬০ টাকা
এই অতিরিক্ত ভাড়ার ফলে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন নারী, শিশু এবং বয়স্ক যাত্রীরা। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া গুনছেন, কেউ আবার বিকল্প উপায়ে বাড়ি ফিরছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, যাত্রীদের দুর্ভোগের সময় বটতলায় নেই কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি। পুরো ঈদ মৌসুমে পুলিশের টহল কিংবা ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি চোখে পড়েনি।
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জানান, তিনি ছুটিতে আছেন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বিষয়টি জানাচ্ছেন। তবে ইউএনও-কে একাধিকবার ফোন করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এদিকে নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এবং বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আগামীকাল ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সেনাবাহিনীর স্থানীয় ক্যাম্পে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, রাতের বেলায় বাহিনী পাঠানো সম্ভব নয়, তবে সকালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাগরপুরের সাধারণ মানুষ অভিযোগ করছেন, দেশের বিভিন্ন উপজেলায় ঈদ উপলক্ষে প্রশাসনের তৎপরতা থাকলেও নাগরপুরে সেভাবে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না।
স্থানীয় এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “চালকরা যা খুশি তাই নিচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে বলে ‘না গেলে নেমে যান।’ এটা কেমন অবস্থা!”
স্থানীয় জনসাধারণ দ্রুত সিএনজি ভাড়ার নির্ধারিত তালিকা প্রকাশ, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত টহল নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।