পটুয়াখালী থেকে খালেদা জিয়াকে উপহার দিতে ৩৫ মণের ‘কালো মানিক’ ঢাকায় রওনা
প্রকাশিত: ৫-৬-২০২৫ বিকাল ৫:৩২
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর ঝাটিবুনিয়া গ্রামের কৃষক সোহাগ মৃধা ছয় বছর ধরে পরম মমতায় নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করেছেন একটি ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়কে। ভালোবেসে যার নাম দিয়েছেন ‘কালো মানিক’।
আজ বৃহস্পতিবার (৫ মে) সকাল ১০টায় ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উপহার দিতে প্রায় ৩৫ মণ ওজনের এই ষাঁড়টি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন সোহাগ।
উৎসবমুখর পরিবেশে ঢাকঢোল পিটিয়ে ‘কালো মানিক’-কে রঙিন কাগজে সাজিয়ে, ফুলের মালা পরিয়ে একটি ভাড়া করা ট্রাকে তোলা হয়। আরও দুটি ট্রাকে ছিল বাদক দল এবং সোহাগের সঙ্গে থাকা ২৫–৩০ জন যুবক ও তাঁর ছোট ছেলে জিসান।
সোহাগ মৃধা উত্তর ঝাটিবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় বিএনপির একজন কর্মী। তিনি জানান, ২০১৮ সালের শেষের দিকে চৈতা বাজার থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকায় একটি গাভি কেনেন। সপ্তাহ না যেতেই গাভিটি একটি বাছুরের জন্ম দেয়, যা-ই আজকের ‘কালো মানিক’। পরে গাভিটি বিক্রি করে দেন, কিন্তু বাছুরটিকে ছয় বছর ধরে পরিবারের সবাই মিলে ভালোবাসা আর যত্নে বড় করে তোলেন।
এই ষাঁড়টির দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ ফুট, উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি এবং ওজন আনুমানিক ১ হাজার ৪০০ কেজি।
সোহাগ বলেন, “আমার বাবা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আমিও বিএনপিকে ভালোবাসি। ভাইরাল হওয়ার জন্য নয়, আবেগ থেকেই আমার প্রিয় নেত্রীকে প্রিয় ‘কালো মানিক’ উপহার দিতে চাই। এতে কোনো লাভ-লোকসানের প্রশ্ন নেই। আল্লাহ কবুল করলে ও নেত্রী যদি গরুটি গ্রহণ করেন, তবে আমার বহু দিনের স্বপ্ন পূরণ হবে।”
আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “সোহাগ একজন একনিষ্ঠ দলীয় কর্মী। তাঁর মা, স্ত্রী ও দুটি শিশুসন্তান আছে। পরিবারের সবাই মিলে ষাঁড়টি লালন-পালন করেছেন।”
সোহাগের মা হাজেরা বেগম ও স্ত্রী সুলতানা আক্তার পলি জানান, তাঁদের পরিবারের মতোই ষাঁড়টি বেড়ে উঠেছে। পলি বলেন, “কালো মানিক আর আমার ছোট ছেলে সমবয়সী। একই ভালোবাসায় মানুষ করেছি। এখন ওর বাবার ইচ্ছা, প্রিয় নেত্রীকে এটি উপহার দেওয়া। এতে আমরা গর্বিত।”
২০১৮ সালের শেষ দিকে মাত্র ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকায় একটি গাভি কিনে যাত্রা শুরু করেন সোহাগ। সেই গাভির জন্ম দেওয়া বাছুরই আজ ‘কালো মানিক’। ছয় বছরের ভালোবাসা ও যত্নে বড় হওয়া এই ষাঁড় এখন রওনা হয়েছে ঢাকার পথে।
সবার এখন একটাই প্রত্যাশা—দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কি আদৌ গ্রহণ করবেন এই বিরল উপহার?